আগরতলা, ২৭ ডিসেম্বর (হি. স.) : অবশেষে প্রকাশ্যে এসেছে মিতালী। পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরাতেও বামেদের সাথে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। ত্রিপুরায় অরাজক পরিস্থিতি কায়েম হয়েছে অভিযোগ এনে শান্তিপ্রিয় গণতান্ত্রিক নাগরিকদের এগিয়ে আসার জন্য বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের যৌথ মঞ্চ আবেদন জানিয়েছে।
আজ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, সিপিআই রাজ্য সম্পাদক যুধিষ্ঠির দাস, আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক দীপক দেব, ফরোয়ার্ড ব্লকের চেয়ারম্যান পরেশ সরকার, সিপিআই(এমএল) রাজ্য সম্পাদক পার্থ কর্মকার এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা যৌথভাবে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের ওই বিবৃতিকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
এদিন বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠনের পর থেকে ত্রিপুরার বুকে এক অভাবনীয় অস্বাভাবিক অরাজক পরিস্থিতি চলছে। গণতন্ত্র অপহরণ করা হয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতা আক্রান্ত হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের স্বাতন্ত্র স্বাধীন সত্তা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিরোধী দল সমূহের কন্ঠরোধ করে তাদের স্বাধীন কর্মধারা স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কার্যত একদলীয় স্বৈরশাসন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে যৌথ মঞ্চ দাবি করেছে, নাগরিকদের স্বাধীন ভাবে ভোট দেবার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। প্রশাসন এবং বিশেষভাবে পুলিশের একাংশের সচেতন নিষ্ক্রীয়তা শাসক দলকে তাদের সংবিধান বিরোধী অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমকে সহায়তা করছে।
মঞ্চের অভিযোগ, শাসক দলের প্রশ্রয়পুষ্ট দুর্বৃত্তদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্টসুলভ কায়দায় চালানো হচ্ছে খুন, সন্ত্রাস, লুঠতরাজ, বলপূর্বক অর্থ আদায় এবং মানুষের খেয়ে-পরে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার উৎসগুলোকেই ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। মঞ্চের দাবি, নানা স্থানে মানুষকে জন্মস্থান তথা পৈত্রিক ভিটেমাটি গ্রাম ও রাজ্যছাড়া করে দেওয়া হচ্ছে। মা-বোনদের বিরুদ্ধে অপরাধ বীভৎস চেহারা নিয়েছে।
মঞ্চের বক্তব্য, শাসক দলের অনুরাগী ও মদতপুষ্ট বলে পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের কেশাগ্র স্পর্শ করছে না। উলটো আক্রান্তদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার পাহাড় তৈরি করে চলেছে। আইনের স্থান দখল করেছে জঙ্গলের শাসন। প্রকৃতঅর্থে ত্রিপুরায় দেশের সংবিধান আজ অচল।
মঞ্চের দৃঢ় বিশ্বাস, এই পরিস্থিতিকে ত্রিপুরার শান্তিপ্রিয় গণতান্ত্রিক মানুষ মেনে নিতে পারেন না। তাই, এই অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করার বিরুদ্ধে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের ঊর্দ্ধে উঠে সকল মানুষকে স্বঃতস্ফূর্ত ও ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হতে এবং এর অবসানে এগিয়ে আসতে যৌথ মঞ্চ আন্তরিকভাবে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে।
এদিন বাম-কংগ্রেসের যৌথ মঞ্চ সাধারণ প্রশাসন ও বিশেষভাবে পুলিশ-প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে কঠোরভাবে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করুন। সাথে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের মুখে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে, সুস্থ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নির্বাচকদের স্বাধীনভাবে নিজের ভোটদানের অধিকার নিশ্চিত করতে এখুনি ফলপ্রসু কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।