আগরতলা, ১৭ ডিসেম্বর (হি. স.) : প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় চিন্তা ভাবনা ও উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাগুলির সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশ আজ উন্নতির শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে। ত্রিপুরাও প্রধানমন্ত্রীর প্রদর্শিত পথে বিকাশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনের ১ নং প্রেক্ষাগৃহে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর আয়োজিত পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান ফর মাল্টিমডেল কানেক্টিভিটি নিয়ে উত্তর পূর্ব আঞ্চলিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পূর্বে বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে একবার রাস্তা নির্মাণের পর বিভিন্ন দপ্তর রাস্তা খনন করে মাটির নীচে গ্যাস বা বিভিন্ন লাইন বসাতো। এরফলে রাস্তাটি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অর্থের অপচয় হতো। পিএম গতিশক্তি এই ধরনের সমস্যাকে দূরীভূত করে সমস্ত দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে উপযুক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
তাঁর কথায়, সময়ে সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সাড়া জাগানো অভিনব কিছু কর্মসূচি দেশবাসীর মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি সারা দেশে নেওয়া হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পিএম গতিশক্তির উপর এই আঞ্চলিক সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে যা আগামী দিনে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে গতি যোগাবে। পাশাপাশি তিনি পিএম গতিশক্তির অগ্রগতি পর্যালোচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টির উপরও বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন।
তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সার্বিক উন্নয়নে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি কার্যকর করেছে। এরফলে এ অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। ত্রিপুরায়ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় ত্রিপুরায় ৬টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে এবং নতুন আরও ৭টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকা মঞ্জুরি পাওয়া গেছে। ইন্টারনেটের দিক থেকে ত্রিপুরা ভালো অবস্থানে রয়েছে।তিনি বলেন, ত্রিপুরায় রেল যোগাযোগের উন্নয়নের ফলে বর্তমানে আগরতলা থেকে প্রায় ১২টি এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করছে। পাশাপাশি আগরতলা রেল স্টেশনটিকে আধুনিকীকরণের মধ্য দিয়ে দেশের অন্যতম আধুনিক রেল স্টেশন রূপে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আগরতলার মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দর উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম সেরা বিমানবন্দর বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, পিএম গতিশক্তি কর্মসূচি রূপায়ণে ত্রিপুরা ফাস্ট মুভার রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সমস্ত ক্ষেত্রের উন্নয়নে বর্তমান রাজ্য সরকার নিরন্তর কাজ করে চলেছে। এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত এবং এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার ক্ষেত্রে সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়। অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন ভারত সরকারের ডোনার মন্ত্রকের সচিব লোকরঞ্জন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা৷
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডোনার মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব সৌরভ এন্ডলে, ভারত সরকারের এমএসএমই মন্ত্রকের অধীনস্ত ডিপার্টমেন্ট ফর প্রোমোশন অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইন্টারনাল ট্রেডের যুগ্ম সচিব রাজেন্দ্র রাত, ত্রিপুরা সরকারের পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় প্রমুখ। এই আঞ্চলিক সম্মেলনে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক, ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স, ইন্ডিয়ান আর্মির আধিকারিকগণ, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সিইও সহ পিএসইউ-এর প্রতিনিধিগণ অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে পিএম গতিশক্তির বিষয়সমূহ নিয়ে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিশদভাবে উপস্থাপনা করেন উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা।