কলকাতা, ৩ অক্টোবর (হি.স.): কলকাতার রুবি পার্কে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার পুজোয় মহাত্মা গান্ধীকে অসুর সাজানো হয়েছিল। অসুরের চোখে বাপুজির গোল চশমাটিও ছিল। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। এর পর বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া হওয়ায় রবিবার রাত থেকেই কয়েক দফায় বদলের পর অসুরের মুখটি অসুরের মতই করে দেওয়া হয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শান্তন চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “গান্ধীজীকে অসুর সাজিয়ে কলকাতায় পুজো হচ্ছে। এর আগে অনুপ্রেরণার মুখের আদলে অনেক দুর্গা মূর্তি হয়েছে। সেই মুখের আদলে গড়া প্রতিমার নিচে এই অসুর থাকলে অন্তত ইতিহাসের মান্যতা থাকতো।
নাথুরামের দুর্গার হাতেই তবে হত্যা হত মহাত্মার।”
পাপিয়া ব্যানার্জী লিখেছেন, “আইনের মানুষ জন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কেনো? ধিক্কার ছাড়া কোনো ভাষা নেই।” সৌমেন্দ্র পাঁজা লিখেছেন, “লজ্জার শেষ নেই।যেখানে সারা দুনিয়ায় মহাত্মার চরিত্রপূজা হচ্ছে, আর তাঁর নিজের দেশেই চলছে চরম অপমান।আজকাল হত্যাকারী পাচ্ছে সম্মান।”
অনিমেষ বৈশ্য লিখেছেন, “কাল রাতের দিকে নাকি জনমতের চাপে পড়ে অসুরের মুখের কিছু অদলবদল করেছে উদ্যোক্তারা। সংগঠনটি ঘোষিত ভাবেই গান্ধীবিরোধী। মণ্ডপে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী নেতার সঙ্গে গান্ধী-হত্যাকারী নাথুরাম গডসের ছবিও আছে। এ বছর সপ্তমীতে গান্ধীর জন্মদিন পড়ায় উদ্যোক্তাদের এই সিদ্ধান্ত। উদ্যোক্তাদের কথা শুনে মনে হল, তারা গান্ধীকে অসুর সাজিয়ে বেশ তৃপ্ত। এরা যদি আগামী বছর রবীন্দ্রনাথকে অসুর সাজায় আমি একটুও অবাক হব না। এটাই বোধহয় সভ্যতার সঙ্কট। বাংলার বুকে কী যে শুরু হয়েছে!”
প্রতিক্রিয়ায় বাপি মণ্ডল লিখেছেন, “অসুর মানেই কি খারাপ? অমৃত বণ্টনের গন্ডগোলে দেবতারা অসুরদের সঙ্গে চিটিং করেছিলেন। ওই গন্ডগোলে দোষ তো দেবতাদেরই বেশি ছিল। আমাদের দেশে নেতাদের কুশপুতুল দাহ করা আইনসিদ্ধ। সেখানে একজন নেতাকে অসুর সাজানো হয়েছে। অসুর তো খুব খারাপ ছিলেন না। গান্ধী আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক নন। জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতায় রবি ঠাকুর গান্ধীর চেয়ে আলোকবর্ষ এগিয়ে। তাই, রবি ঠাকুরকে নিয়ে তেমন কিছু হবে না বলেই আমার বিশ্বাস।”