জলপাইগুড়ি, ৩ অক্টোবর (হি.স.): অসুর বংশের নতুন প্রজন্মের বাস জলপাইগুড়ি জেলার কেরন চা-বাগান অঞ্চলে। মহিষাসুরের বংশধর তাঁরা। সকলে যখন দেবী দুর্গার আরাধনা ব্যস্ত, তখন অসুরের বংশধর কীভাবে বংশপিতার নিধনকারীকে পুজো করেন?
দীর্ঘদিন দুর্গাপুজো থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতেন তাঁরা। কিন্তু সেই দিনকাল আর নেই। নেই সেই মনোমালিন্যতা। পুরনো রীতি ভুলে দুর্গাপুজোর আনন্দে সামিল হন নতুন প্রজন্মের অসুর সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা। রীতিমতো উৎসবের মেজাজে তাঁরা দুর্গাপুজোর কটাদিন অতিবাহিত করেন।
জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা ব্লকের ভুটান সীমান্ত লাগোয়া কেরন চা-বাগানে একটি অংশে অসুর সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক দশক থেকে এই চা-বাগান এলাকায় রয়েছেন তাঁরা। সর্বসাকুল্যে প্রায় ৫৫ টি অসুর সম্প্রদায়ের পরিবার রয়েছেন এই গ্রামে। চা-বাগান এলাকায় দুর্গাপুজার আয়োজন করা হলেও পুজোর অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে অংশগ্রহণ করতো না তাঁদের পরিবারের লোকজন। গোটা গ্রাম যখন পুজোর আনন্দে মেতে ওঠে, তখন নিজেদের গৃহবন্দি করে রাখতেন তাঁরা।
দিন বদলেছে। সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই অন্যরকম। এই প্রজন্মের অসুর সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা দুর্গাপুজোয় অংশ নেয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা এখন ধর্ম পরিবর্তন করে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছেন। কাজেই ধর্ম থেকে শুরু করে পেশা এবং নিজদের দৈনন্দিন জীবন যাপন সবেতেই এসেছে পরিবর্তন। তবে কয়েক বছর আগেও বাড়ির কচিকাঁচাদের রীতিমতো সাবধান করে দেওয়া হত যাতে তারা যাতে পুজোতে কোনওভাবেই অংশ না নেয়। তবে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে পুজো মণ্ডপে যেতে সেই ভাবে আর বাধা দেওয়া হয় না।