Abhishek Banerjee:পুলিশ চাইলে গুলি চালাতে পারত, না করে সংযম দেখিয়েছে“, দাবি অভিষেকের

লকাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে মঙ্গল ও বুধ— উপর্যুপরি দু’দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি-র নবান্ন অভিযান নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন। এর পর আরও কড়া মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য সভায় বলেছেন, পুলিশ চাইলে গুলি চালাতে পারত। কিন্তু তা না করে, সংযম দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ দিন একই কথা বলেন অভিষেকও। তিনি বলেন, “পুলিশের কাছে সহজ উপায় ছিল। গুলি চালালে, ১০টা লোক মরলেই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যেত। ২১ জুলাই, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, সিপিএম-এর আমলে তেমনই হয়েছে।

বিজেপির নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত কলকাতা পুলিশের এসিপিকে বুধবার দেখতে গেলেন অভিষেক। এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বড়বাজারে বিজেপি-র নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত হন তিনি। বুধবার তাঁকে দেখতেই হাসপাতালে গেলেন অভিষেক এবং সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করলেন।

বেরিয়ে এসে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মেজাজে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “পুলিশের কাছে সহজ উপায় ছিল। পুলিশ তো কাল পারত, গুলি চালাতে। এটাই পরিবর্তন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ ধৈর্য, সংবেদনশীলতা, সংযমের পরিচয় দিয়েছে।” অভিষেক বলেন, “দেবজিৎ বাবুকে বললাম, আমি আপনাকে স্যালুট জানাই, আপনি কিছু করেননি। আপনার জায়গায় যদি আমি থাকতাম, আমার সামনে যদি পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বলত, আমি মাথার উপরে শুট করতাম।”

অভিষেক বলেন, যাঁরা প্রশ্ন তোলেন বাংলায় কী পরিবর্তন হয়েছে, এটাই সেই পরিবর্তন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আমলে যে পুলিশ রয়েছে রাজ্যে, তারা সংবেদনশীল, সংযত এবং ধৈর্যশীল। অথচ নিরস্ত্র অবস্থায়, একা পেয়ে সেই পুলিশের অফিসারকেই মারধর করা হল। হেলমেট ছিল বলে বেঁচে গিয়েছেন। উনি নিজেও সে কথা বললেন।”

এ দিন এসএসকেএম থেকে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, “নবান্ন ঘেরাও এবং অভিযানের নাম করে যে হিংস্রতা, বর্বরতা, গুন্ডামি এবং রাহাজানির নিদর্শন বাংলার বুকে তৈরি করল একটি রাজনৈতিক দল, তাকে ২০১৯ সালের ১৪ মে বিদ্যাসগরের মূর্তি ভাঙারই পুনরাবৃত্তি বলা যেতে পারে। আন্দোলনের নামে গুন্ডামি, ভণ্ডামি, দাদাগিরি এবং গায়ের জোরে দুর্বৃত্তদের, দুষ্কর্মকারীদের কাজে লাগিয়ে পুলিশকে মারধর করা হয়েছে। পুলিশের গাড়িতে ধরানো হয়েছে আগুন।

অভিষেকের অভিযোগ, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে নির্মমভাবে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। এমনকি লোহার রড দিয়ে মারা হয়েছে। আজ ওঁকে দেখতে এসেছিলাম। বাঁ হাতে সিরিয়াস ফ্র্যাকচার। হাত ভেঙে গিয়েছে। সারা গায়ে আঘাতের চিহ্ন। পিঠ দেখা যাচ্ছে না।”

মঙ্গলবার হাওড়া-কলকাতা জুড়ে ধুন্ধুমারের নেপথ্যে পুলিশি বাধাকে ঢাল করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতাদের। পুলিশ বাধা দেয়, হয়রান হতে বলেই তাদের বিরুদ্ধে দলের কর্মী-সমর্থকরা রেগে যান বলে যুক্তি দেন অনেকেই। এ দিন অভিষেক বলেন, “বিজেপি নেতারা বলছেন যে, তৃণমূল, তৃণমূল সরকারের পুলিশ তাঁদের আসতে দেয়নি, বাধা দিয়েছে। বাধাপ্রাপ্ত হলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ল কারা? রড দিয়ে পুলিশকে মারল কে? পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরাল কারা? নিদারুণ একটা উদাহরণ হয়ে রইল যে, ক্ষমতায় এলে বাংলায় কী করত বিজেপি। বাংলাকে জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ, দুষ্কর্মকারীদের মুক্তাঞ্চল এবং স্বর্গরাজ্যে পরিণত করত ওরা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *