করিমগঞ্জ (অসম), ২২ আগস্ট (হি.স.) : অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের আন্দোলনে সরগরম হয়ে উঠেছে করিমগঞ্জ জেলা সদর। ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য আজ সোমবার সকালে তাঁরা শহরের নেতাজি মূর্তির পাদদেশ থেকে একটি বিশাল প্রতিবাদী মিছিল বের করেন।
বিভিন্ন দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শতাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো পরিক্রমা করে, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত অস্থায়ী ধরনা শেডে গিয়ে জড়ো হন। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরনা কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন দাবি সংবলিত একটি স্মারকপত্র জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন কর্মী-সহায়িকারা।
এদিকে তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থও ধরনা কর্মসূচিতে শামিল হয়ে সরকারের কাছে তাঁদের দাবি পূরণের পক্ষে সওয়াল করেন। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের জন্য সার্ভিস রুল তৈরি করে তাঁদের চাকরি নিয়মিতকরণের জন্যও সরকারের কাছে দাবি জানান বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ।
ধরনা চলাকালীন সংবাদ মাধ্যমের সামনে তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে কর্মী-সহায়িকারা বলেন, বিভাগীয় কাজের বাইরে গিয়ে তাঁদেরকে স্বাস্থ্য বিভাগ, বিএলও, ভ্যাকসিনেশন, এনআরসি সহ আরও বিভিন্ন অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। কিন্তু তাঁদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন করছে না সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মহিলা সশক্তিকরণের ওপর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। অথচ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কাজ করেও তাঁদেরকে আধপেটা হয়ে থাকতে হচ্ছে। তাঁরা যে পরিশ্রম করেন, সে তুলনায় তাঁদেরকে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয় না। রাজ্য সরকার তাঁদেরকে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরও সমতুল্য বলে মনে করে না বলেও গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন তাঁরা।
প্রতি পদে পদে তাঁদের সঙ্গে সরকার প্রতারণা ও বঞ্চনা করে আসছে। কর্মীদের মাসোহারা ন্যূনতম ২০ হাজার এবং সহায়িকাদের ১০ হাজার টাকা করার জন্য দীর্ঘদিন থেকে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। কিন্তু সরকার তাঁদেরকে উপযুক্ত সম্মান দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন কর্মী-সহায়িকরা। তাই ন্যায্য অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকারা।
আজকের আন্দোলনে নেতৃত্বে ছিলেন অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেলপারস মহিলা অর্গানাইজেশনের করিমগঞ্জ জেলা কমিটির সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম, সম্পাদিকা বাবলী বসু সাহা, লাভলী চক্রবর্তী, মিত্রা মালাকার, তপতী চৌধুরী, রুমা চক্রবর্তী, উমা দাস, সীমা চন্দ, মৌসুমী চৌধুরী, ববি নাথ, সোমা বিশ্বাস, মৌসুমী দাস প্রমুখ।

