ত্রিপুরা উপনির্বাচন : আগরতলায় দুইটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় উত্তেজনা

আগরতলা, ২৩ জুন (হি. স.) : ত্রিপুরায় উপনির্বাচনে আপাত দৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ হলেও ৬-আগরতলা এবং ৮-টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দল অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এক ব্যক্তি ভোট দিতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের হামলায় নদীতে পরে যান। তাঁকে খুঁজতে এনসিআরঅফ নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে। দুষ্কৃতী হামলায় এক পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে জি বি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।

আজ সকাল থেকেই বিরোধীরা ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে শাসক দল সমর্থিত দুষ্কৃতিকারীরা হামলা, হুজ্জুতী এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিন ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে সস্ত্রীক ভোট দিতে যাওয়ার সময় পুলিশকর্মী সমীর সাহা চুরিকাহত হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, দুষ্কৃতিকারীরা তাঁকে ভোট দিতে বাধা দেন। বাধা প্রতিরোধ করে ভোট দিতে যাওয়ার সময় তিনি ছুরিকাহত হন। তাঁর পেটে প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে জি বি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর পেটে সেলাই করতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি জি বি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

তাঁর অভিযোগ, বিজেপি সমর্থিত দুষ্কৃতিকারীরা তাঁকে বাধা দিয়েছেন এবং প্রাণে মারার চেষ্টা করেছেন। তাঁর স্ত্রী বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা প্রথমে তাঁদের পথ আটকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। আমরা তাতে রাজি না হওয়ায় এক দুষ্কৃতী ছুরি মেরে আমার স্বামীর পেটে আঘাত করেছে। তাঁর প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে। ওই ঘটনায় উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে এধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। তবে, বিক্ষিপ্ত একটি ঘটনা দিয়ে সারা ত্রিপুরায় নির্বাচনের পরিস্থিতি বিচার করা উচিত হবে না। ভোট সর্বত্র শান্তিপূর্ণ চলছে।

এদিকে, ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের ৫৫ নম্বর বুথের ভোটার নানু চৌধুরী ভোট দিতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতী হামলার শিকার হন। দুষ্কৃতীরা তাঁকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এনডিআরএফ একটি বিশেষ টিম তাঁকে খুঁজতে নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে।

তেমনি, ৮-টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রে নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতনে ভোট দিতে যাওয়ার সময় বাধাপ্রাপ্ত হন বাবা ও ছেলে। তাঁরা দুষ্কৃতী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, মাস্টার পাড়া দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতিকারীরা বাধা দেন। তাঁদের বাধা এড়িয়ে আসতে গিয়েই মার খেতে হয়েছে। বৃদ্ধ বাবা মুখে আঘাত লেগেছে এবং ছেলের জামা ছিড়ে ফেলেছেন দুষ্কৃতিকারীরা এমনই অভিযোগ উঠেছে।এদিকে, ৮-টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রে তুলসীবতী স্কুলে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে এসে গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনৈক ভোটারের। সেন্ট্রাল রোড এলাকার বাসিন্দা সুখেন্দু সাহা বলেন, বৃদ্ধা মা ও স্ত্রীকে নিয়ে ভোট দিতে এসেছিলাম। বেরিয়ে দেখি গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গা। পুলিশের সামনে ওই ঘটনা কিভাবে ঘটেছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। তেমনি, বাণী বিদ্যাপীঠ স্কুলে ভোট দিতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের হামলায় রিক্সা থেকে পড়ে যান দুই প্রবীণ ভোটার। বৃদ্ধা মা-কে নিয়ে ষাটোর্ধ ছেলে রিক্সা দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। তবুও, তাঁরা থামেননি দেখে দুষ্কৃতিকারীরা রিক্সায় ধাক্কা দেন। তাতে তাঁরা দুজনেই রিক্সা থেকে পড়ে যান। অবশ্য, কেউই আঘাত পাননি বলে জানিয়েছেন ওই প্রবীণ ভোটার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *