ভাতা বৃদ্ধি এবং হোস্টেল ফি মুকুবের দাবিতে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিত্সকরা

আগরতলা, ১৩ জুন (হি. স.) : সম্মানিক ভাতা বৃদ্ধি এবং হোস্টেল ফি মুকুবের দাবিতে সোমবার ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। আজ সকাল থেকেই তাঁরা কর্মবিরতীতে নেমেছেন। ফলে, হাসপাতালে চিকিত্সা পরিষেবায় মারাত্মকভাবে ব্যাঘাত ঘটেছে।

ইন্টার্ন চিকিত্সকদের পক্ষ থেকে ডা: সাইফুল ইসলাম বলেন, অন্তিমবার ২০১৭ সালে সান্মানিক ভাতা বাড়ানো হয়েছিল। এরপর থেকে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি হলেও আমাদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে ভাবেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁর কথায়, ২০১৭ সালে ভাতা বেড়ে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছিল। কিন্ত, তখন হোস্টেল ফি ওই ভাতার টাকা থেকে কেটে রাখা হবে এমনটা স্থির ছিল না। কিন্ত, প্রত্যেক মাসে আমাদের ভাতা থেকে ২০০০ টাকা হোস্টেল ফি বাবদ কেটে রাখা হচ্ছে। ফলে, তাঁদের ঝুলিতে পড়ছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা।

এদিন তিনি আর জানান, হাসপাতালে দিনরাত খাটনির সাথে তাঁদের মধুপুর সহ গ্রামীণ এলাকায় চিকিত্সা পরিষেবার জন্য যেতে হচ্ছে। অথচ, যাতায়াত খরচ বাবদ তাঁদের কিছুই জুটছে না। ফলে, নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে গ্রামীণ এলাকায় চিকিত্সা পরিষেবা দিচ্ছেন তাঁরা। তাই, আজ তাঁরা উপায় না পেয়ে কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন, বলেন তিনি।

তাঁর অভিযোগ, ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার ভাতা বৃদ্ধির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু ভাড়ারে টান রয়েছে অজুহাত দেখিয়ে টালবাহানা করে চলেছে।

তাঁর বক্তব্য, আগরতলা সরকারী মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নদের ২১ হাজার ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সেই তুলনায় ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নদের সাথে চরম বঞ্চনা করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, ইন্টার্ন ছাড়া হাসপাতালে পরিষেবা চালু রাখা অসম্ভব। অথচ, আমাদের সাথেই দ্বিচারিতা করা হচ্ছে, অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, কর্মবিরতি শুরু হওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে আলোচনার জন্য এসেছিলেন। দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্ত, লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে না, সাফ জানিয়ে দিয়েছি। জরুরী ভিত্তিতে বৈঠক ডেকে এ-বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সামগ্রিক বিষয় বর্ণনা করে মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা, বলেন তিনি। তাঁর দাবি, ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে ১০০ জন ইন্টার্ন চিকিত্সক ভাতা বৃদ্ধি এবং হোস্টেল ফি মুকুব না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।ইতিপূর্বেও, ভাতা বৃদ্ধির দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিত্সকরা। তখন তাঁদের বুঝিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্ত, এখন তাঁদের অনড় অবস্থানে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নাজেহাল করে ছাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *