আগরতলা, ১৮ মে (হি. স.) : সাম্প্রতিক অতিবর্ষণের ফলে ত্রিপুরার সাথে রেলপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও রাজ্যবাসীকে অযথা আতঙ্কিত না হতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্ত, অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জনগণের পকেট কাটতে শুরু করেছেন। যান চালকরাও অযথা আতঙ্কিত হয়ে পেট্রোল পাম্পের বাইরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে জ্বালানী সংগ্রহ করছে। শীঘ্রই বাজারগুলিতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
আজ বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব এল এইচ ডার্লং, খাদ্য দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী এবং খাদ্য দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব তথা অধিকর্তা তপন কুমার দাস জানিয়েছেন, রাজ্যের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান লাইফলাইন তথা জাতীয় সড়কের কয়েকটি স্থানে ভূমি ধূসের ঘটনা ঘটলেও ইতিমধ্যে তা সারিয়ে পণ্যবাহী যান সহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে এবং এই পথে যানবাহন চলাচল আজ থেকে শুরু হয়েছে। যদি পুনরায় ভারি বর্ষণ না হয় তাহলে দুই এক দিনের মধ্যেই রাজ্যের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ সম্পূর্ন স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আগরতলা-কলকাতা, আগরতলা-দিল্লি, আগরতলা-গৌহাটি রুটে অতিরিক্ত বিমান চালানোর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের কাছে অনুরোধ জানানো হবে। এবিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রীর কাছে চিঠি দেবেন। দপ্তরের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে, দাবি আধিকারিকদের।
খাদ্য দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজ্যের বাজারগুলিতে বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত স্বাভাবিক রয়েছে। এবিষয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য রাজ্যবাসীকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বাজারে নিয়মিত নজরদারি রাখা হচ্ছে। এক্ষুনি সঙ্কট দেখা দেবার কোন কারণ নেই। পেট্রো পন্য এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইন্ডিয়ান ওয়েল, এফসিআই কর্তৃপক্ষ এবং আসাম সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। রাজ্যে বর্তমানে গনবন্টন ব্যবস্থায় ৪২ দিনের চাল, ৩৮ দিনের গম, ২৮ দিনের চিনি, ৪১ দিনের মশুর ডাল, ৩৩ দিনের লবন এবং ১০ দিনের কেরোসিন তেল মজুত রয়েছে।খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস জানিয়েছেন রাজ্যে সড়ক পথে পেট্রো পন্য আসা অব্যাহত রয়েছে। এই মুহুর্তে ৫০টি পেট্রোল এবং ডিজেলবাহী ট্যাঙ্কার রাজ্যের পথে আসা যাওয়া করছে। তিনি জানান, রাজ্যে বর্তমানে পেট্রোল ও ডিজেলের দৈনিক চাহিদা হল যথাক্রমে ২২০ কিলোলিটার এবং ৩৫০ কিলোলিটার। রাজ্যের বিভিন্ন এজেন্সি এবং আই ও সি এল -এর ধর্মনগর ডিপো মিলিয়ে আজ সকালে রাজ্যে ১৬৩৮ কিলোলিটার পেট্রোল এবং ২১৮৪ কিলোলিটার ডিজেল মজুত ছিল। আই ও সি এল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তাদের মৈনারবান্দ ডিপো থেকে ২০০ কিলোলিটার পেট্রোল ও প্রয়োজনীয় ডিজেল সাপ্লাই করা হচ্ছে। পাশাপাশি গৌহাটি থেকেও রাজ্যে পেট্রোল আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।