আগরতলা, ২৭ এপ্রিল : জল জীবন মিশনে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তিক এলাকার ঘরে ঘরে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে হবে। আজ ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের খুমুলুঙস্থিত প্রশাসনিক কার্যালয়ের ২নং কনফারেন্স হলে রাজ্যের এডিসি এলাকায় জল জীবন মিশনের অগ্রগতি নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, জল মানুষের জীবন সুরক্ষিত রাখে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে থাকে। তাই দেশের প্রতিটি ঘরে পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই জল জীবন মিশনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। আমাদের রাজ্যের সরকারও এই ভাবনায় কাজ করছে। তাই রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার জনজাতির প্রতিটি মানুষ যেন এই জল জীবন মিশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না থাকেন। তিনি বৈঠকে উপস্থিত পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের প্রতিনিধিদের এবিষয়ে বিশেষ নজর রাখার অনুরোধ জানান। যেসব দুর্গম প্রত্যন্ত এডিসি এলাকায় পানীয়জল উত্তোলনের সুবিধা নেই সে সব অঞ্চলে পাইপলাইনে অন্যস্থান থেকে জল সরবরাহ করতেও তিনি প্রতিনিধিদের পরামর্শ দেন। এছাড়া ট্যাংকারে করেও জল সরবরাহ করতে বলেন। এই শুখা মরশুমে মানুষ যেন জলের কষ্টে না ভোগেন সেদিকে তিনি সকলকে কঠোরভাবে নজর রাখতে বলেন। ২০২২-এ পানীয় জলের উৎস আরও ব্যাপকভাবে খনন এবং বিগত দিনের অম্পূর্ণ জলের উৎস খননের কাজগুলি দ্রুত শেষ করতেও তিনি নির্দেশ দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টিটিএএডিসি’র উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মণ। তিনি বৈঠকে বক্তব্যে জনজাতি এলাকায় জলজীবন মিশনের প্রয়োগ আরও বেশী করে করতে এবং সেই সাথে সরবরাহকৃত জলের গুণমান বজায় রাখার দিকেও নজর দিতে দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। এছাড়া জল সংরক্ষণ ও জলাধার খননের উপরও গুরুত্বারোপ করে বৈঠকে তিনি বক্তব্য রাখেন। বৈঠকে টিটিএএডিসি’র মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া বলেন, জলজীবন মিশন একটি সুন্দর প্রকল্প। এ প্রকল্পে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, বেশী করে মিনি ডিপ টিউবওয়েল খনন করতে হবে। যেসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরাবরাহ নেই সেসব অঞ্চলে সোলার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের প্রধান সচিব কিরণ গিত্যে পর্যালোচনা বৈঠকে জানান, সারা রাজ্যের ৮টি জেলার এডিসি এলাকায় বর্তমানে ৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৩১৬টি পরিবারে জল জীবন মিশনে জল সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তর ত্রিপুরাতে ৪৭,৮২২টি, পশ্চিম ত্রিপুরায় ৩২,৯৪৭টি, ঊনকোটি জেলায় ৪৭,৬১৩টি, গোমতী জেলায় ৩৬,৭৫৩টি, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৬৫,৬৩২টি, খোয়াই জেলায় ৪৫,২৫৮টি, ধলাই জেলায় ৫৪,৮৪৮টি এবং সিপাহীজলা জেলায় ৫১,৭৪৩টি পরিবার রয়েছে। এছাড়া রাজ্যের এডিসি এলাকাগুলিতে পানীয়জল সরবরাহের বিভিন্ন স্কিমের মধ্যে ১১২৬টি গভীর নলকূপ, ২,৩৫৯টি স্মলবোর, ২৩টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ৩৮৭টি আয়রন রিমুভ্যাল প্ল্যান্ট এবং ২৮টি ইনোভেটিভ স্কিম চালু আছে বলেও বৈঠকে প্রধান সচিব জানান। বৈঠকে জল জীবন মিশন কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন টিটিএএডিসি’র উপ মুখ্যকার্যনির্বাহী সদস্য অনিমেষ দেববর্মা। এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টিটিএএডিসি’র নির্বাচিত সদস্য কমল কলই ও সদস্য ভবরঞ্জন রিয়াং, রাজ্যের ৮টি জেলার এডিসি’র জোন্যাল কার্যালয়ের চেয়ারম্যানগণ ও পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের জেলা কার্যালয়গুলির কার্যনির্বাহী আধিকারিকগণ। তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ জেলার এডিসি এলাকায় পানীয়জল সরবরাহের কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে পর্যালোচনা করেন।
2022-04-27