গুয়াহাটি, ১৬ এপ্রিল (হি.স.) : গত ২৪ ঘণ্টায় অসমের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘটিত কালবৈশাখির তাণ্ডবে চার মহিলা সহ সাত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে উজান থেকে নিম্ন অসমে। এর মধ্যে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বরপেটা জেলা, মরিগাঁও, নগাঁও, ধিং, তামুলপুর, টিংখাং ডিগবয়, ওদালগুড়ি, দরং, শোণিতপুর, বিশ্বনাথ ইত্যাদি অঞ্চলে।
গতকাল শুক্রবার রাতে ডিব্রুগড় জেলার অন্তর্গত টিংখাঙের নাহরপাড়া বড়বিল গ্রামের বছর ৩২-এর রূপেশ কোচ নামের এক ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি তাঁর স্কুটি চড়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। সে সময় রাস্তায় তাঁর ওপর একটি গাছ ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন রূপেশ। এছাড়া টিংখাঙের খেরনি গ্রামে ঝড়ের সময় একটি বাঁশঝাড়ের চাপায় চার মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে অভিশপ্ত বাঁশঝাড়ের নীচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁশঝাড়টি উপড়ে পড়ে তাঁদের চেপে ধরে। ফলে নিয়তি তাঁদের প্রাণ কেড়ে নেয়।
অন্যদিকে তামুলপুরেও প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়, সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের দরুন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তামুলপুরের পানবাড়ি অঞ্চলের আমবাড়ি গ্রামে মৃত্যু হয়েছে অনে মোশাহারি সহ দুজনের। তাঁদের বসতঘরের ওপর একটি সুপারি গাছ ভেঙে পড়়ে। সুপারি গাছের চাপায় ঘরের ছাদ ভেঙ পড়ে তাঁদের ওপর। এদিকে উজান অসমের তিনসুকিয়া জেলার ডিগবয়ে তুফানের কবলে পড়ে তিক্ষেশ্বর সনোয়াল নামের একজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিলে সেখানে মৃত্যুবরণ করেন তিক্ষেশ্বর।
এভাবে বরপেটা জেলা, মরিগাঁও, নগাঁও, ধিং, তামুলপুর, টিংখাং ডিগবয়, ওদালগুড়ি, দরং, শোণিতপুর, বিশ্বনাথ ইত্যাদি অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে বহু গৃহস্থের বসতঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে। বরপেটা জেলার ভেল্লা বাজারের দোকানপাট, ভেল্লা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিম্ন বিদ্যালয়, বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে বহু বাড়ি, ভেল্লা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লেবরেটরির টিনের ছাদ বহু দূরে গিয়ে পড়েছে৷ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লেবরেটরির টিনের ছাদ উড়ে যাওয়ায় প্ৰায় দশ থেকে বারো লক্ষ টাকার বিজ্ঞান সংক্ৰান্ত সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে৷
রহার খলিহামারি প্ৰাথমিক বিদ্যালয়ের ওপরও একটি বিশাল গাছ উপড়ে পড়ে বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ওই সব জেলার বিভিন্ন এলাকায় পূর্ত সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে যাতায়াত ব্যবস্থার বিঘ্ন ঘটেছে।
এভাবে বহু এলাকায় উড়িয়ে নিয়ে গেছে বিদ্যালয়, গাছ পড়ে ভূপতিত হয়ে গেছে বিদ্যুৎ পরিবাহী খুঁটি, মানুষের বাড়িঘরের ওপর গাছ এবং গাছের ডাল ভেঙে পড়ার পাশাপাশি বহু ঘরের টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে মাঠে-ময়দানে ফেলেছে। গৃহস্থদের ঘরের আসবাবপত্র ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। বিস্তর ক্ষতি হয়েছে বহু স্কুল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও। ঝড়ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।