BJP government : নির্বাচনের আগে হিমন্তবিশ্ব প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিগুলি পালন করছে বিজেপি সরকার, রামকৃষ্ণনগরে বলেন মন্ত্রী পীযূষকরিমগঞ্জের সিংলা নদীর বাঁধ–সড়ক নির্মাণে ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা

রামকৃষ্ণনগর (অসম), ১০ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : বিজেপি সরকার‌ই কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে জানে। নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা রাজ্যবাসীকে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন তিনি। নদীবাঁধ সমস্যা, রাস্তাঘাটের সমস্যা, মাইক্রো ফিনান্সের ঋণ-মকুব, অন্নদাতা কৃষকদের সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মার নেতৃত্বে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করে চলছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো রাতাবাড়ি বিধানসভা এলাকায় এসে দলীয় এক সংবর্ধনা সভায় প্রদত্ত বক্তব্যে কথাগুলো বলেন রাজ্যের জলসম্পদ, তথ্য ও জনসংযোগ এবং সংসদীয় পরিক্রমা মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা।


সিংলা নদীর বাঁধ সমস্যা সমাধানের জন্য জলসম্পদ বিভাগ থেকে ১৮ কোটি টাকা মঞ্জুর হ‌ওয়ার কথাও আজ ঘোষণা করেছেন মন্ত্রী পীযূষ। মন্ত্রী হাজরিকা আর‌ও বলেন, আধুনিক অসম গড়ার লক্ষ্যে রাজ্যবাসী বিজেপিকে ভোটে জয়ী করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা রাজ্যবাসীকে প্রদত্ত সকল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও আজকের সংবর্ধনা সভায় দাবি করেছেন বক্তা। বিজেপি সরকারের আমলে বরাক উপত্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে বলেও দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করে তিনি।


আজ থেকে ছয় বছর আগে বরাক উপত্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা কোন পর্যায়ে ছিল, তা কাউকে বলে বোঝাতে হবে না। করিমগঞ্জ থেকে রামকৃষ্ণনগর আসতে হলে প্রায় একদিন সময় লেগে যেত। রাজ্যের পূর্ববর্তী অ-বিজেপি সরকারের আমলে বরাক উপত্যকা দুর্নীতির আঁতুর ঘরে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে রাজ্যে সর্বানন্দ সনোয়ালের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হ‌ওয়ার পর যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের চিত্রটাই সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। বিজেপি সরকারের দ্বিতীয় কার্যকালেও মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে সমগ্র রাজ্যে সার্বিক উন্নয়নে এক নবদিগন্তের সূচনা হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আগামী দিনে সমগ্র দেশের মধ্যে অসম উন্নয়নের দিক দিয়ে প্রথম স্থান দখল করবে বলেও এদিনের সংবর্ধনা সভায় দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা। প্রথমবারের মতো রামকৃষ্ণনগরের মাটিতে পা রেখে সংবর্ধনার জোয়ারে ভেসেছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা।


এদিন মন্ত্রী নিভিয়ায় ফানাইরবন্দ থেকে দুল্লভপুর পর্যন্ত সিংলা নদীর বন্যা প্রতিরোধে এবং জনসাধারণের যাতায়াতে পাঁচ কোটি ৮৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়সাপেক্ষে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ কাম সড়ক নির্মাণের তথ্য-ফলক উন্মোচন করেন। সেইসঙ্গে তিন কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অলিভিয়া গ্রামে অন্য আরেকটি প্রস্তাবিত নদীবাঁধের ফলকও উন্মোচন করেন তিনি।


পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার সকালে রামকৃষ্ণনগর পৌঁছেন মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা। রাতাবাড়ির বিধায়ক বিজয় মালাকার ভারতীয় জনতা যুবমোর্চা ও রামকৃষ্ণনগর মণ্ডলের সদস্যদের নিয়ে বেলতলা পেট্রলপাম্প থেকে এক বিশাল বাইক মিছিলের মাধ্যমে রামকৃষ্ণনগর উন্নয়ন খণ্ডের কনফারেন্স হল-এ নিয়ে আসেন। এখানে বিধায়ক বিজয় মালাকার সহ রামকৃষ্ণনগর ও দুল্লভছড়া মণ্ডলের দুই সভাপতি, যুবমোর্চা, মহিলা মোর্চা, এসসি মোর্চা, ওবিসি মোর্চার পদাধিকারীগণ ফুলের মালা, উত্তরীয় ও পাগড়ি পরিয়ে মন্ত্রী পীযূষ হাজারিকাকে উষ্ণ সংবর্ধনা জানান। লক্ষ্মীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাইকেও রামকৃষ্ণনগর মণ্ডলের পক্ষ থেকে পাগড়ি পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর পর এক সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয় এখানে।


প্রথমে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেন রামকৃষ্ণনগর ও দুল্লভছড়া মণ্ডলের দুই সভাপতি যথাক্রমে বিকাশরঞ্জন সিংহ ও জিতেন্দ্রলাল রায়। বিধায়ক বিজয় মালাকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে সমগ্র রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। ব্যতিক্রম নয় বরাক উপত্যকাও। রাজ্যের প্রতিটি অঞ্চলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বরাক উপত্যকার তিন জেলায়ও সম-উন্নয়ন হচ্ছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও রামকৃষ্ণনগরের উন্নয়নের জন্য এত টাকা কোনওদিন আসেনি। এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকার জন্য।


বিধায়ক বিজয় মালাকার আর‌ও বলেন, আগামী মাসে সমগ্র রাজ্যের সঙ্গে রামকৃষ্ণনগরেও পুরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। টাউন কমিটি থেকে উন্নীত হয়ে প্রথমবারের মতো পুরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে রামকৃষ্ণনগরে। পুরসভা নির্বাচনে দশটি ওয়ার্ডেই বিজেপির জয়জয়কার হবে। বিরোধী দল কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব‌ই খোঁজে পাওয়া যাবে না। রামকৃষ্ণনগরের সচেতন নাগরিকগণ দশটি ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করবেন বলে দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি বিধায়ক বিজয় মালাকারের। আর এটাই হবে রামকৃষ্ণনগরবাসীর পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রদত্ত উপহার।


এদিনের সংবর্ধনা সভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেছেন জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণনগর মণ্ডল যুবমোর্চার সভাপতি সৌরভ দাস, জেলা এসসি মোর্চার সভাপতি দিব্যেন্দুনাথ দাস, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী প্রতিমা নাথ, সাধারণ সম্পাদিকা দীপালি চৌধুরী, জেলা যুবমোর্চার সম্পাদক প্রীতম পাল, ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি গোপীমোহন নাথ, সাধারণ সম্পাদক প্রণব মুখার্জি সহ দলীয় বিভিন্ন স্তরের কার্যকর্তা ও সমর্থকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *