তীর্থমুখে পবিত্র স্নান সারলেন মুখ্যমন্ত্রী, করলেন রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনা

আগরতলা, ১৪ জানুয়ারি (হি. স.) : মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে তীর্থমুখে পবিত্র স্নান করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। গতকাল রাতে তিনি পবিত্র স্নান সেরে ত্রিপুরাবাসীর মঙ্গল কামনা করেছেন। এদিকে, তীর্থমুখ মেলার উদ্বোধন করেন জনজাতি কল্যান মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া।


তীর্থমুখ মেলা রাজ্যের জাতি জনজাতি সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন। এই মেলা জাতি ও জনজাতিদের সংস্কৃতিকে সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করছে। রাজ আমল থেকেই এখানে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পূজা, পিতৃ তর্পণ করে আসছেন জাতি জনজাতি অংশের মানুষেরা। গতকাল তীর্থমুখ পৌষ সংক্রান্তি মেলার উদ্বোধন করে এই কথা বলেন মৎস্য ও জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া। উল্লেখ্য, গতকাল সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তীর্থমুখে পবিত্র গোমতী নদীতে স্নান করেন এবং রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনা করেন।

পবিত্র স্নান সেরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের মতো এই বছরেও আমি পূন্যভূমি তীর্থমুখে এসেছি এবং রাজ্যের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেছি। আমরা তীর্থস্থানে যাবো কিন্তু কোভিড সংক্রান্ত, সরকার প্রদত্ত সকল নীতি-নির্দেশিকা পালন করবো এই আবেদন রাখছি। তীর্থমুখ পুন্য স্নানে অংশ নিয়ে শুভেচ্ছা স্বরূপ ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী হস্ত কারুকার্যের নৈপুণ্যে প্রস্তুত অপরূপ সুন্দর একটি উপহার ও রাজ্যের ইতিহাস বিজড়িত পুস্তিকা গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের হৃদ্যতার প্রতি মুখ্যমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

অনুষ্ঠানে জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার জাতি জনজাতি সহ সকল ধর্মের সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বদ্ধ পরিকর। তিনি সকলকে কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার কোভিড মোকাবিলায় সর্বতোভাবে প্রস্তুত। অযথা ভয় না পাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী তীৰ্থমুখ মেলা উপলক্ষে সকলকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, তীর্থমুখ এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির ভাষণে লোকসভার সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা বলেন, এই মেলা ঐতিহ্যবাহী মেলা। রাজ আমল থেকে শুরু হয়েছে এই মেলা। রাইমা-সরমা কাহিনী এই মেলার সঙ্গে যুক্ত। পর্যটন ক্ষেত্রকে ভালো ভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাস্তাঘাট সহ টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেই এই জায়গার চিত্রটা পাল্টে যাবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

সাথে তিনি যোগ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য নারকেলকুঞ্জে হেলিপ্যাড স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকদের রাত্রিবাসের জন্য লগহাট স্থাপন করার কাজ চলছে। তিনি বলেন, সংস্কৃতি ছাড়া কোনো সভ্যতা টিকে থাকতে পারে না। তাই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনীত আগরওয়াল। তিনি রাজ্য সরকারের গৃহিত উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাগুলি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন করবুক ব্লক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান অসীম কুমার ত্রিপুরা। তিনি মেলাকে সুন্দর ও সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য মেলায় আগত পুর্ণার্থী, সকল দপ্তর সহ মেলার সঙ্গে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য ভূমিকা নন্দ রিয়াং, গোমতী জেলাশাসক ও সমাহর্তা রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, সমাজসেবী অতীন্দ্র রিয়াং প্রমুখ। এই মেলা উপলক্ষে কোভিড বিধিনিষেধ মেনে আয়োজিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মেলায় বিভিন্ন দপ্তর থেকে খোলা হয় উন্নয়নমূলক প্রদর্শনী স্টল।