নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ৭ নভেম্বর৷৷ অবশেষে ১৩ দিনের মাথায় মিলেছে নিখোঁজ যুবক নোটন দাসের হদিস৷ তবে জীবিত নয়, উদ্ধার হয়েছে পচাগলা দেহ৷ শনিবার সন্ধ্যা রাতে কলমচৌড়া থানাধীন বন দপ্তরে গভীর জঙ্গল থেকে নোটনের পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷ গত ২৫ অক্টোবর রাতে বিশালগড় থানাধীন দুর্গানগরের যুবক নোটন দাস বক্সনগরে যান৷
পেশায় ফার্নিচার কারিগর নোটন কাজ সেরে বাড়িতে ফিরার পর মোবাইলে ফোন করে বক্সনগরে যাওয়ার কথা বলে মোবাইলের অপরপ্রান্তের কেউ৷ রাত প্রায় আটটায় নিজের মোটর সাইকেল নিয়ে বক্সনগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় সে৷ কিন্তু রাতে বাড়ি ফিরার কথা থাকলেও ফিরেনি৷ পরদিন শুরু হয় খোঁজাখুঁজি৷ বিশালগড় থানায় মিসিং ডায়েরি করে নিখোঁজ যুবকের পরিবার৷ ২৭ অক্টোবর বক্সনগর বনদপ্তরের জঙ্গলে উদ্ধার হয় নোটনের রক্তমাখা বাইক৷ বিশালগড় এবং কলমচৌড়া থানার পুলিশ নড়েচড়ে বসে৷ শুরু হয় তদন্ত৷ প্রথম থেকেই সন্দেহের তালিকায় ছিল নোটনের স্ত্রী৷ শনিবার নিখোঁজ নোটনের স্ত্রী সোনালী দাসকে বিশালগড় মহিলা থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ৷
সোনালীর মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত নম্বরের সূত্র ধরে নিকটাত্মীয় অভিজিৎ দাসকে ট্র্যাক করে পুলিশ৷ বক্সনগর বাগবের গ্রামে অভিজিৎ এর বাড়ি৷ নোটনের স্ত্রী সোনালী অভিজিৎ এর বোনের ননদ৷ শনিবার পুলিশ অভিজিৎ দাসকে কলমচৌড়া থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে৷ টানা জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে অভিজিৎ৷ নোটনকে খুন করে মাটি চাপা দেওয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে সে৷ খুন করে দেহ মাটিচাপা দিয়েছে সে৷ সন্ধ্যা রাতে বিশালগড় থানার ওসি দেবাশীষ সাহা এবং কলমচৌড়া থানার ওসি বিষ্ণুপদ দাস বিশাল পুলিশ টিএসআর বাহিনী নিয়ে ধৃত অভিজিৎকে সঙ্গে নিয়ে বক্সনগরের বনদপ্তরের গভীর জঙ্গল থেকে মাটি খুঁড়ে নোটনের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে৷ মৃতদেহ বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ময়নাতদন্তের পর রবিবার মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে৷
ধৃত অভিজিৎ একাই খুন কান্ড সংগঠিত করেছে বললেও পুলিশের অনুমান ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে৷ একা কারোরই পক্ষে খুন করে দেহ মাটিচাপা দেয়া সম্ভব নয়৷ ওসি দেবাশীষ সাহা জানান তদন্ত জারি রয়েছে৷ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে৷ নোটনের স্ত্রী সোনালীকে গ্রেফতার করেছে বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ৷ অভিজিৎ দাস এবং সোনালী দাসকে রবিবার আদালতে সোপর্দ করা করা হয়৷আদালত তাদের দু’জনকে জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেয় এবং আদালাত আগামী ৯ নভেম্বর সিডি দেওয়ার নির্দেশ দেন৷

