নয়াদিল্লি, ৭ নভেম্বর (হি.স.) : ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে দলকে মজবুত করে তোলার ডাক দিলেন বিজেপি-র জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। রবিবার কর্মসমিতির বৈঠকে তিনি বলেন, “বাংলায় বিজেপি নতুন অধ্যায় রচনা করবে। বুথ স্তরে কর্মীদের মনের কথা শুনতে হবে।”
কর্মসমিতির বৈঠকে এ দিন পশ্চিমবঙ্গে হিংসার অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। নাড্ডাবাবু বলেন, “বাংলায় ভোটের পর ৫৩ জন কর্মী খুন হয়েছেন। লক্ষাধিক কর্মী ঘরছাড়া। তা সত্ত্বেও বাংলার মানুষ বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রাপ্ত ভোট ৩৮ শতাংশ হয়েছে, ৭৭টি আসন পেয়েছে বিজেপি।”
এই মর্মে দলের নেতাদের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন নাড্ডা। ২৫ ডিসেম্বরের আগে বুথ স্তরে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে। নাড্ডা বলেন, প্রত্যেক বুথে মন কি বাত শুনতে হবে। প্রত্যেক ভোটে বিজেপির ভোট বেড়েছে। এমনকী জম্মু ও কাশ্মীরেও বিজেপি ভাল ফল করছে বলে দাবি তাঁর।
জে পি নাড্ডা বলেন, “আমাদের ৫৩ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। মানুষ এখনও সেখানে ভয়ে অন্য কোথাও গিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন ।” সম্প্রতি বাংলায় শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল বেছে বেছে দলের লোকেদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। আজ সেই ইস্যুতেও পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। এই ধরনের ঘটনার নিন্দা করেছেন তিনি। একইসঙ্গে বাংলার দলীয় নেতা ও কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তাঁর বার্তা, “বাংলা ও রাজ্যের মানুষের উনয়নের জন্য আমরা আরও লড়াই করব।”
উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের চারটি আসনেই কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তিনটি কেন্দ্রে একেবারে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একের পর এক নেতা, যাঁরা ভোটের আগে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁরা আবার দলত্যাগী হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির নিচুতলার দলীয় কর্মীদের মনোবল আরও শক্ত করতে এবং নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে নাড্ডার এই ‘ভোকাল টনিক’ অনেকটাই কাজে দেবে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ইতিমধ্যেই প্রায় চারটি চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। পরে সেই চার্জশিটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫টি। বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। আরও ৩ টি এফআইআর রুজু করেছে সিবিআই। মামলার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।
রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ আগস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যেই হিংসা মামলার তদন্তে হাইকোর্টে মুখবন্ধ খামে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।