Rafael Deal : রাফাল-কাণ্ডে দুর্নীতির খোঁজ পেতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত ফ্রান্সের

প্যারিস, ৩ জুলাই (হি. স.) : রাফাল দুর্নীতি মামলায় নতুন মাত্রা। রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তি ঘিরে নতুন করে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্ত করবে ফ্রান্স। এই উদ্দেশ্যে এক বিচারককে নিযুক্ত করা হয়েছে। ফ্রান্সের আর্থিক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগ (পিএনএফ) শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে।

এর আগে চলতি বছর এপ্রিলে রাফাল চুক্তিতে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হয় মিডিয়াপার্টেরই একাধিক রিপোর্টে। রাফাল নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের বিরুদ্ধে চুক্তির মধ্যস্থতাকারীকে ১০ লক্ষ ইউরো (প্রায় ৯ কোটি টাকা) ‘উপহার’ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল। এ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্রও পেশ করে তারা। দুর্নীতি বিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে এরপর পিএনএফ-এর কাছে রাফাল চুক্তি নিয়ে তদন্তের দাবি জানায়। তারই ভিত্তিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফরাসী সরকার।


প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে রাফাল চুক্তি নিয়ে তদন্তের দাবি খারিজ করেছিল পিএনএফ। সে সময় ‘তথ্যপ্রমাণের অভাব’ অজুহাত দেখিয়ে দাবি খারিজ করা হয়েছিল। এ বার ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ নরেন্দ্র মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মোদী জমানায় ২০১৬-তে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছিল ভারত। সে সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফ্রাঁসোয়া ওঁলা। একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি, এর কিছুদিন পরেই ফরাসী দুর্নীতি দমন সংস্থার তদন্তে মধ্যস্থতাকারীকে দেওয়া ‘উপহার’ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ মিলেছিল। তদন্তকারীদের সে সময় দাসো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, উপহার হিসেবে রাফাল যুদ্ধবিমানের ৫০টি রেপ্লিকা (ছোট প্রতিরূপ) তৈরির জন্য ৫ লক্ষ ইউরো খরচ হয়েছে। প্রতি রেপ্লিকার জন্য ২০ হাজার ইউরো। কিন্তু রেপ্লিকা তৈরি ও বিতরণের কোনও প্রমাণ দিতে পারেন যুদ্ধবিমান নির্মাতা সংস্থাটি। বরং তদন্তে জানা যায়, প্রায় ১০ লক্ষ ইউরো হিসেব বহির্ভুত খরচ হয়েছে চুক্তিপর্বে।


ঘটনাচক্রে গত সেপ্টেম্বরে রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিএজি-ও। সংসদে পেশ করা সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন এবং এমবিডিএ-র আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-কে সাহায্য করার কথা। কিন্তু তারা সেটা করছে না। অথচ ২০১৬-র রাফাল কেনার চুক্তিতে বলা ছিল, দাসো চুক্তি-মূল্যের ৫০ শতাংশ প্রকল্প বা কাজের বরাত ভারতের কোনও সংস্থাকে দেবে এবং প্রযুক্তিগত সাহায্য করবে।