নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জুন৷৷ করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে৷ তাই রাজ্য সরকার করোনা কারফিউর মেয়াদ বাড়িয়েছিল৷ সেই মোতাবেক আগরতলা পুর নিগম সহ পুর পরিষদগুলির পাশাপাশি নগর পঞ্চায়েতে কারফিউ ১৮ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছিল৷ তারপও কয়েকটি এলাকায় নতুন করে কারফিউর ঘোষণা দিয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে ধর্মনগর নগর পঞ্চায়েত এলাকা, সোনামুড়া মহকুমা, বিশালগড় মহকুমা, জম্পুইজলা মহকুমা এলাকা৷
উদয়পুর সংযোজন ঃ গতকাল রাত গোমতী জেলার জেলাশাসক অফিস থেকে এক সার্কুলার জারি করা হয়৷ এই সার্কুলারে বলা হয়েছে, গোমতি জেলার কিছু কিছু জায়গায় দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত থাকবে ডে কারফিউ, আর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরের দিন ভোর ৫ টা পর্যন্ত বলবত থাকবে করোণা নাইট কারফিউ৷ তারমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, উদয়পুর লেইক সিটি শপিং কমপ্লেক্স, চকবাজার সহ রাধাকিশোর পুর থানা কর্নার, সেন্ট্রাল রোড, নিউটাউন রোড এবং নেহেরু সুপার মার্কেট এলাকার সব দোকানপাট দুপুর দুইটা পর্যন্ত খোলা থাকবে৷ এছাড়া জামজুড়ি বাজার, কাকড়াবন বাজার, তুলামুড়া বাজার, গকুলপুর বাজার, খিলপাড়া বাজার, মাতারবাড়ি বাজার ও মাতাবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণ এবং ড্রপ গেইট (কুঞ্জবন) বাজারের জন্যও একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷ এই এ এলাকার তত্ত্বাবধানে থাকবে উদয়পুর মহকুমা প্রশাসন৷ তাছাড়া নতুন বাজার বাজার, অমরপুর দৈনিক বাজার, অমরপুর মোটর স্ট্যান্ড, তৈদু এবং অম্পি বাজারেও লাগু থাকবে করোনা ডে এবং নাইট কারফিউ এবং তার তত্ত্বাবধানে থাকবে অমরপুর মহকুমা প্রশাসন৷ করবুক বাজার,চেলাগাং বাজার,শিলাছড়ি বাজার, যতনবারি বাজার,বৈরাগিদুকান বাজার,জলায়া বাজার, পতিছড়ি বাজার,আইলমারা বাজারেও আগামী ১৮ ই জুন পর্যন্ত ডে এবং নাইট কারফিউ লাগু থাকবে এবং তার তত্ত্বাবধানে থাকবে করবুক মহকুমা প্রশাসন৷
খোয়াই সংযোজন ঃ সরকারীভাবে ১১জুন থেকে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা ব্যতীত করোনা কার্ফু তুলে নেওয়া হয়েছিল৷ একইভাবে খোয়াই জেলাতেও স্বাভাবিক হয়ে উঠে জনজীবন৷ ১১জুন অবাধে চলাফেরা শুরু করেছিল জনগণ৷ যথারীতি নিয়ম-নির্দেশিকা মেনে খোয়াইতেও দোকানপাট খোলা ছিল সকাল থেকে রাত অবধি৷ প্রশাসনিকভাবেও কোনো বাধাদান করা হয়নি৷ কিন্তু আজ ১২ জুন দিনভর স্বাভাবিক নিয়মে চলছিল বাজার হাট৷ ক্রেতা-বিক্রেতারা নিজস্ব ছন্দে বাজার হাটে শামিল হন৷ ছোট ছোট ব্যবসায়ীরাও পসরা সাজিয়ে বসে৷ ক্রেতাদের ভীড় বাড়তে থাকে৷ দিনভর খোয়াই জেলা প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ জারি করা হয়নি৷ কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই বাদ সাধে প্রশাসন৷ বাজার হাট যখন চরমে, ঠিক তখনই পুলিশ প্রশাসন সুভাষপার্ক বাজারে অনেকটা বলপূর্বক দোকানীদের তাড়িয়ে দিতে থাকেন বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ৷ অথচ খোয়াই জেলা প্রশাসন থেকে কেন আগাম কোন প্রচার বা মাইক যোগে এই বিধিনিষেধ এর কথা জনগণকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ জনগণের৷ এই অনভিপ্রেত ঘটনার জেরে দূর দূরান্ত থেকে আসা দোকানীরা বা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতারা সুভাষপার্ক বাজারে এসে সমস্যায় পড়ে যান বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা৷ অপরদিকে জনগণের একটাই অভিযোগ, কেন স্থানীয় প্রশাসন আগাম বার্তা দেয়নি৷ শুধুমাত্র প্রশাসনিকস্তরে নোটিফিকেশন জারি করে কেন এভাবে জনগণকে বেকায়দায় ফেলা হয়েছে? প্রশ্ণ জনগণের৷ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগাম বার্তা না দেওয়ায় বড়সর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন ছোট বড়ো সমস্ত অংশের ব্যবসায়ীরা৷
তেলিয়ামুড়া সংযোজন ঃ ত্রিপুরা রাজ্য সরকার কর্তৃক রাজ্যের কয়েকটি পুর পরিষদ, নগর পঞ্চায়েত এলাকা এবং আগরতলা মিউনিসিপাল কর্পপোরেশ বাদে অন্যান্য সমস্ত এলাকা গুলোতে করোনা কার্ফিউ তুলে দেওয়ার এক নির্দেশ জারি হয় গত ১০ ই জুন৷ পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা শাসকদের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয় পরিস্থিতির নিরিখে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য৷
এই নির্দেশ কে মান্যনা দিয়ে তেলিয়ামুড়া মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের পক্ষে এলাকার বিধায়িকা কল্যাণী রায়ের পৌরহিত্যে মহকুমা প্রশাসন,আরক্ষা প্রশাসন, ব্যবসায়ী এবং সাংবাদিকদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ শনিবার বেলা ১ টায় তেলিয়ামুড়া মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় উক্ত বৈঠক৷
তেলিয়ামুড়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় করোনা পোজেটিভের সংখ্যাকে মাথায় রেখে সভায় উপস্থিত সকলের মতামতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন বাজার ও অন্যান্য এলাকায় দোকান পাঠ যেন সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়৷ সন্ধ্যা ৬ টা থেকে সকাল ৫ টা পর্যন্ত কেবল জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দোকান পাট ই খোলা থাকবে৷ এই মর্মে খোয়াই জেলার জেলা শাসকের নিকট এক অনুমতি পত্র প্রেরন করা হয়৷ জেলা শাসকের নির্দেশ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় উক্ত সভায়৷
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিধায়িকা কল্যানী রায় জানান,তেলিয়ামুড়া করুনার গ্রাফ কিভাবে দিন দিন ঊর্ধমুখী হচ্ছে৷ সমস্ত কিছু দিক বিবেচনা করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী,হকারদের কথা চিন্তা করে পাশাপাশি জনগণকে করুণা মুক্ত রাখা বা করুণা সংক্রমণ যাতে না বাড়তে পারে সমস্ত বিষয় গুলির উপর পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় সন্ধ্যা ছয়(৬)টা থেকে ভোর পাঁচ (৫)টা পর্যন্ত করোনা কারফিউ বা বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় যাতে করে মানুষজন যাতে সংক্রমিত না হয় সেই উদ্দেশ্য কে পাথেয় করে সমস্ত ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে তেলিয়ামুড়া ব্লক এবং তেলিয়ামুড়া পৌর এলাকা জুড়ে৷ সেই করুণা কারফিউর আওতার বাইরে থাকবে ঔষধের দোকান৷

