নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ মার্চ৷৷ রাজ্যের চিকিৎসকগণ যে যে জায়গায় কর্তব্যরত রয়েছেন সেখানকার পরিকাঠামোর মধ্যে থেকেই তাদের পারদর্শিতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ তবেই রোগী সহ আম জনতার মনে আরও বিশ্বাস তৈরি হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কার্ল ল্যাণ্ডস্টেইনার অডিটোরিয়ামে অল ত্রিপুরা গর্ভমেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের ৩৭তম বার্ষিক রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করে একথা বলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্য হেলথ প্যারামিটারে দেশে পিছিয়ে নেই৷ করোনাকালে দেশের ৫টি রাজ্যের মধ্যে ভাল অবস্থায় ছিল আমাদের রাজ্য৷ এরাজ্যের চিকিৎসক সহ সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রচেষ্টাতেই এটা সম্ভব হয়েছে৷
অল ত্রিপুরা গর্ভমেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার এক নতুন দিশা নিয়ে কাজ করছে৷ রাজ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের বাজেট বরাদ্দ যা ছিল তা থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ স্বাস্থ্য পরিষেবায় সরকার সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে৷ এখন প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকেও বহু রোগী চিকিৎসার জন্য ত্রিপুরায় আসেন৷ এখন পর্যন্ত রাজ্যে ৮৮ শতাংশ কোভিড টিকাকরণ হয়েছে৷ এক্ষেত্রেও ত্রিপুরা দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে ভাল অবস্থায় রয়েছে৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকার আগরতলা পুর নিগম এলাকার সব ওয়ার্ডে একটি করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে৷ সমস্ত হেলথ সেন্টারকে হেলথ এণ্ড ওয়েলনেস সেন্টারে পরিণত করা হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১ লক্ষ ৪৪৪ টাকা৷ এখন হয়েছে ১ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা৷ প্রাথমিক ক্ষেত্রে আগে উন্নয়নের হার ছিল ৬.৪ শতাংশ৷ এখন ৩৭.৭৭ শতাংশ৷ আগে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ১,২০০ কোটি টাকা ব্যয় হত৷ এখন ব্যয় হয় ১২,০০০ কোটি টাকা৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাবমে মৈত্রী সেতু চালু হয়েছে৷ এর সুুফল পাবে ত্রিপুরা৷ আগামীদিনে ত্রিপুরা অন্যতম বাণিজ্যিক রাজ্য হয়ে উঠবে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশা ভারতবর্ষের নতুন ইঞ্জিন হবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল৷
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির ভাষণে বিধায়ক ডা. দিলীপ কুমার দাস বলেন, করোনার আবহ কমে গেছে কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি৷ তাই আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে৷ তাছাড়া বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব জীতেন্দ্র কুমার সিনহা, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিষ দেববর্মা ও অল ত্রিপুরা গর্ভমেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. রঞ্জিত কুমার দাস৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন অল ত্রিপুরা গর্ভমেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. রাজেশ চৌধুরী৷ সম্মেলনে পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা. রাধা দেববর্মা, মেডিক্যাল এডুকেশনের অধিকর্তা ডা. চিন্ময় বিশ্বাস, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. অসীম দে ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসকগণ ও ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন৷
সম্মেলনে ৮ জেলার কোভিড-১৯ যোদ্ধা চিকিৎসকদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়৷ এছাড়াও করোনাকালে কাজ করেছেন ইন্টার্ণ ছাত্রছাত্রী, প্রথম, দ্বিতীয়, ত’তীয় বর্ষের পিজি ছাত্রছাত্রী ও পিজিটি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ সংবর্ধনা স্বরূপ মারক তাদের হাতে তুলে দেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব ’স্বাস্থ্য সংবাদ’ নামক একটি স্বরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট অর্গানাইজিং সেক্রেটারী ডা. নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য৷