অলৌকিকতার অপেক্ষা! অগ্ণিদগ্দ ঝুমার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে ত্রিপুরা সরকার, জানালেন মন্ত্রী রতনলাল

আগরতলা, ২৫ ফেব্রুয়ারি (হি.স.)৷৷ অলৌকিকতার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন সমগ্র ত্রিপুরাবাসী৷ সরস্বতী পূজায় বিলোনিয়া বিদ্যাপীঠের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ঝুমা দে অগ্ণিদগ্দ হয়ে বর্তমানে কলকাতায় চিকিৎসাধীন৷ তাঁর বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছাশক্তি মৃত্যুকে পরাজিত করবে বলেই আশাবাদী রাজ্যবাসী৷ আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ জানিয়েছেন, ঝুমার শরীরের ৮৭ শতাংশ পুড়ে গেছে৷


চিকিৎসকদের বক্তব্য অনুসারে সারা বিশ্বে এক শতাংশেরও কম এমন রোগী বেঁচে যান৷ তবে মৃত্যুর সাথে তাঁর লড়াই দেখে মনে হচ্ছে অলৌকিক ঘটনা ঘটে যেতেও পারে, আশা প্রকাশ করে বলেন তিনি৷ তিনি জানান, ঝুমার চিকিৎসার জন্য ত্রিপুরা সরকারের তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য দেওয়া হলেও তাতে যথেষ্ট হবে না৷ তাই সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর কাছে মানবিক আবেদন করা হয়েছে৷ মানুষ সাধ্যমতো আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন৷


আজ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরস্বতী পূজায় অগ্ণিদগ্দ ঝুমা দে-কে প্রথমে বিলোনিয়া হাসপাতাল এবং সেখান থেকে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়েছিল৷ কিন্তু ঝুমার অবস্থা দেখে চিকিৎসকরা তার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন৷ তাই, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছিল৷ মন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তার চিকিৎসায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি৷ এছাড়া, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা মিলে আরও ১ লক্ষ টাকা, উচ্চ বুনিয়াদী শিক্ষা দফতর থেকে ২০ হাজার টাকা এবং স্টেট ইলনেস ফান্ড থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা সরাসরি হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে৷


তিনি জানান, ঝুমাকে নিয়ে তার মা এবং এক আত্মীয় কলকাতায় যান৷ কিন্তু কলকাতায় গিয়ে কারোর সাথে যোগাযোগ না করে তাঁরা সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে চলে যান৷ সেখানে তাঁদের চিকিৎসা সম্ভব নয় জানানোর পর তাঁরা ডিশান হাসপাতালে যান৷ ওই হাসপাতালে ঝুমাকে ভরতি করা হলেও পরের দিন তারা বিমানে আগরতলায় চলে আসেন এবং সোজা বিলোনিয়া চলে যান৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, বিষয়টি গোচরে আসার পর সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি, চিকিৎসার খরচ শুনে তাঁরা ঘাবড়ে গিয়ে কলকাতা থেকে ফিরে এসেছিলেন৷
তিনি বলেন, এর পরই কলকাতায় সমস্ত জায়গায় চিকিৎসা সম্পর্কিত বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি এবং ডিশান-এ চিকিৎসা সম্ভব আশ্বস্ত হওয়ার পর তাঁদের পুনরায় কলকাতায় পাঠিয়েছি৷

সাথে একজন শিক্ষক সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ও সহায়তার জন্য রয়েছেন৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, সাধারণত নাবালিকা অগ্ণিদগ্দ রোগীকে ওই হাসপাতাল ভরতি করে না৷ কিন্তু রাজ্য সরকার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ায় তারা ঝুমাকে ভরতি করে তার চিকিৎসা শুরু করেছে৷ তিনি জানান, এমন রোগীর চিকিৎসায় ১৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১.৫ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচের সম্ভাবনা রয়েছে৷ তাই সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর কাছে ঝুমার চিকিৎসা বাবদ আর্থিক সহায়তার জন্য মানবিক আবেদন করা হয়েছে৷


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মৃত্যুর সাথে লড়াই করে চলেছে ঝুমা৷ তাই, অলৌকিক ঘটনা ঘটে যেতেও পারে বলে আশাবাদী তিনি৷ তাঁর কথায়, ঝুমার চিকিৎসায় সমস্ত খরচ ত্রিপুরা সরকারই বহন করবে৷