নয়াদিল্লি, ২০ অক্টোবর (হি.স.) : এখন মনে করলে হবে না যে, করোনা চলে গিয়েছে বা করোনায় কোনও ক্ষতি করবে না | মনে রাখতে হবে, লকডাউন চলে গেলেও ভাইরাস যায়নি। আমাদের উচিত হবে না, পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে দেওয়া। দেশজুড়ে উৎসবের মরশুমে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে দেশবাসীকে সতর্ক করে একথাই বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।
দেশজুড়ে উৎসবের মরশুমে ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে নবরাত্রি। তিথি মেনে এখনও দুর্গাপুজোর শুরু না হলেও প্রথমা-দ্বিতীয়া থেকেই মণ্ডপে-মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছিল। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরও অনেক জায়গায় ভিড় চোখ পড়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যা সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । এদিন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে দেশবাসীকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে করোনা টেস্টিং বৃদ্ধি বড় শক্তি। করোনার কোনও ভয় নেই, এমন ভাবলে চলবে না । এমন কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যাতে বেপরোয়াভাব স্পষ্ট । মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোলে, পরিবারকেই বিপদে ফেলবেন।আমেরিকার মত দেশে করোনার সংখ্যা ফের বাড়ছে। ‘এই পরিস্থিতি এখন গাফিলতির জায়গা নেই। আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিনের জন্য কাজ করছেন । ভ্যাকসিন এলেই, দ্রুত সম্ভব বণ্টনের জন্য প্রস্তুতি চলছে । প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে টিকা পৌঁছনোর জন্য চেষ্টা চলছে ।ওষুধ না আসা পর্যন্ত কোনওরকম ঢিলেমি দেওয়া যাবে না । উৎসব করুন, কিন্তু নিজেদের সুরক্ষার কথা আগে ভাববেন ।’
প্রধানমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, ‘ভারতে প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় সাড়ে ৫ হাজারের করোনা আক্রান্ত । আমেরিকা, ব্রাজিলের মত দেশে এই সংখ্যা ২৫ হাজারের কাছে । ভারতে প্রতি ১০ লক্ষের মধ্যে ৮৩জনের মৃত্যু । আমেরিকা, ব্রাজিল-সহ বহু দেশে এই সংখ্যা ৬০০র কাছে। আমাদের দেশে করোনা রোগীদের জন্য ৯০ লাখের বেশি শয্যা আছে। ১২,০০০ কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র আছে। দেশে টেস্টের সংখ্যা শীঘ্রই ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।’
এদিন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনার ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। ধীরে ধীরে দোকান, বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। লকডাউন না থাকলেও, ভাইরাস চলে যায়নি। করোনা ভাইরাস এখনও আছে, এটা মনে রাখতে হবে।’
উল্লেখ্য, আপাতত দেশে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী। এমনকী মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত চব্বিশ ঘণ্টায় ভারতে ৪৬,৭৯০ জন নয়া আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। যা গত তিন মাসে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে সর্বনিম্ন। একইসঙ্গে সুস্থতার হার বেড়েও ৮৯ শতাংশ ছুঁইছুঁই। এই পরিস্থিতিতে স্বভাবতই উৎসবের মরশুমে বেপরোয়া মনোভাবের জেরে সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে যাক, তা একেবারেই চাইছে না সরকার। মুলত কেরলের ওনাম উৎসবের পর সংক্রমণ যেভাবে লাগামছাড়া হয়েছে, তা থেকেই আগাম সতর্কবার্তা প্রধানমন্ত্রীর ।