আখাউড়া (বাংলাদেশ), ২৩ জুন (হি.স.)৷৷ ত্রিপুরার মহারাজা কর্তৃক নির্মিত নয়শো বছর পুরনো শ্রীশ্রী রাধামাধব আখড়া-য় রথযাত্রা পালনের মাধ্যমে দুই বাংলার সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করেছে৷ বাংলাদেশের আখাউড়ায় রাধামাধব মন্দিরে রথের দড়িতে টান পড়েছে ঠিকই, তবে করোনা-র প্রকোপে শুধুই নিয়ম রক্ষায় উৎসব পালিত হয়েছে৷ করোনা মোকাবিলায় লকডাউনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে ঢাকের তালে এবং হরিনাম কীর্তনের সাথে নেচে-গেয়ে ভক্তদের আনন্দ উদযাপন হয়নি৷ তবে, কাঁসর-ঘণ্টা ও শঙ্খ বাজিয়ে এবং উলুধবনিতে রথের চাকা ঘুরেছে মন্দির চত্বরেই৷
করোনা-র দাপটে এ-বছর মন্দিরের ’রাজ’ গেট খোলা হয়নি৷ কিন্তু, পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা ও আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আখতার রেইনা৷
প্রসঙ্গত, চাকলা রোশনাবাদ ত্রিপুরার অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল৷ কিন্তু, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ত্রিপুরার ভারতভুক্তির সময় চাকলা রোশনাবাদ পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হিসেবে মানচিত্রে স্থান পায়৷ তাতে ত্রিপুরা-র সাথে চাকলা রোশনাবাদের আক্ষরিক অর্থে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়৷ কিন্তু ত্রিপুরার সাথে হৃদয়ের টান ঠিক একই রয়ে যায়৷ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা অসামান্য অবদান রেখেছে৷ বাংলাদেশ সরকার আজও তাই ত্রিপুরার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কার্পণ্য করে না৷ আখাউড়াস্থিত ওই রাধামাধব মন্দির ত্রিপুরার মহারাজাদের ইতিহাস আজও বহন করে চলেছে৷
শ্রীশ্রী রাধামাধব আখড়া পরিচালন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চন্দন কুমার ঘোষ জানান, প্রায় নয়শো বছর আগে ত্রিপুরার মহারাজা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷ এখানকার রথ উৎসবও সুদীর্ঘ বছরের ঐতিহ্য বজায় রেখেছে৷ করোনা-র প্রকোপে মন্দির চত্বরেই এবারের রথযাত্রা সীমাবদ্ধ ছিল৷ তাঁর কথায়, ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরা থেকেই মন্দির পরিচালনায় অনুদান আসত৷ এখন স্থানীয়দের চাঁদায় মন্দির পরিচালনা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, দুই দেশের সম্প্রীতির মেলবন্ধনে এই মন্দিরের বিরাট ভূমিকা রয়েছে৷