শিলচর (অসম), ২৮ মে (হি.স.) : বরাক উপত্যকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার একদিনে এই উপত্যকার তিন জেলায় একজনও কোভিড-১৯ আক্রান্ত ধরা পড়েননি। তবে বৃহস্পতিবার এক সঙ্গে ১৫ জন কোভিড-১৯ সংক্রমিত বলে ধরা পড়েছেন। এ নিয়ে বরাক উপত্যকার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪-এ। ফলে আতঙ্কগ্রস্ত উপত্যকার মানুষ।
আজ যাদের করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে তারা প্রত্যেকই সরকারি কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তাদের ভ্রমণ ইতিহাস রয়েছে। এরা বহিঃরাজ্য থেকে এসেছেন। এদিকে গতকাল বুধবার দুই করোনা রোগী শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সংক্রমণ মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। তবে বাড়িতে তাঁরা আরও ১৪ দিন একান্তবাসে থাকবেন।
আজকের ১৫ জনকে নিয়ে গোটা বরাক উপত্যকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪-এ। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে কাছাড় জেলার ১১ জন, ২ জন করিমগঞ্জ জেলার বাসিন্দা এবং ২ জন হাইলাকান্দির।
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রিপোর্টে কাছাড় জেলার সাত আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা উজানগ্রামের ইকবাল বাহার বড়ভূইয়া (৩০), তিনি মহারাষ্ট্র ফেরত; আলমগির সুলতান (১৮), তিনি ভ্রমণ করেছেন আলিগড়; শিলচর শহরের জানিগঞ্জের ধীরাজ কুমার জৈন (৩৬), তিনি ভাগলপুর ও বিহার ভ্রমণ করে এসেছেন; বরযাত্রাপুরের মাহমুদুল হান্নান রাজ বড়ভুইয়াঁ (২২), তিনি ভ্রমণ করেছেন মহারাষ্ট্র; বাঁশখালের শাহিল আলম বড়ভুইয়াঁ (২০), তিনি গুজরাট ভ্রমণ করে ফিরেছেন; ফুলবাড়ির ফারুক আহমেদ লস্কর (২০), তিনি ভ্রমণ করেছেন মহারাষ্ট্র; গোঁসাইপুরের আমিনুল হক বড়ভুইয়াঁ, (১২), সে গুজরাট সফর করে ফিরেছে, গণিরগ্রামের শামসুর আলম মজুমদার (৩০) তিনি গুজরাট সফর করেছেন; গরারগ্রামের রাজিব উদ্দিন (৩৩), তিনি ভ্রমণ করেছেন মুম্বাই; বুড়িবাড়ির আজার উদ্দিন বড়ভুইয়াঁ (১৮), সেও গুজরাট সফর করে ফিরেছে এবং গোঁসাইপুরের জাকির হুসেন বড়ভুইয়াঁ (৪৮), তিনি গুজরাট সফর করে এসেছেন।
এছাড়া করিমগঞ্জ জেলার দুজন যথাক্রমে সাহিদ আহমেদ (২৫), তিনি ভ্রমণ করেছেন নভি (নতুন) মহারাষ্ট্র, ওয়াহিদ আহমেদ (২০), তারও ভ্রমণ বৃত্তান্ত নভি মহারাষ্ট্র।
হাইলাকান্দি জেলার দুই কোভিড-১৯ আক্রান্তরা আবদুল রহমান (৩০), তিনি ভ্রমণ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ছাগলিয়া সীমান্ত এবং সাকির আহমেদ মজুমদার (২২), তিনি মহারাষ্ট্র থেকে এসেছিলেন।
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কোভিড সেলে ৯৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তিনি হাইলাকান্দি জেলার ফইজুল হক। বর্তমানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজের কোভিড ওয়ার্ডে ৮০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ইতিমধ্যেই তিন জেলার ১৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
এদিকে কাছাড় জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে একজন শোণিতপুর জেলার অন্তর্গত ঢেকিয়াজুলির ঠেলামারা কোচগাঁওয়ের বাসিন্দা। বিপরীতে করিমগঞ্জ জেলার ৩৭ জন এবং হাইলাকান্দি জেলার ১৩ জন লোক আক্রান্ত হয়েছেন। অপরদিকে ত্রিপুরার ২ জনকে আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত করে বরাক উপত্যকার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪-এ। গত কয়েকদিনে যে ভাবে দ্রুত কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্তের ঘটনায় উপত্যকার জনসাধারণের মধ্যে ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে তিন জেলার প্রশাসনের তরফে জনসাধারণের মধ্যে কোভিড-১৯-এর ভয়াবহতা নিয়ে সজাগতা আনতে ব্যস্ত।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আজ বৃহস্পতিবার প্রথমে ২.৫০ মিনিটে টুইটে জানিয়ে ছিলেন বরাক উপত্যকায় আক্রান্ত ১১, ফের ৬.২০ মিনিটে দ্বিতীয়বার জানান বরাকে আরও ৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।