নয়াদিল্লি, ২১ মে (হি. স.) : দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, জিডিপি-তে বৃদ্ধি, রফতানি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি-তে লঘু উদ্যোগ মেরুদণ্ডের ভূমিকায় রয়েছে। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ-কথা বলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর মতে, অর্ডিন্যান্স, ডিপিএসইউ এবং পরিষেবা সংস্থাগুলির মতো আমাদের অনেক সংস্থায় ৮০০০ এরও বেশি ক্ষুদ্র-শিল্প অংশীদারিত্ব রেখেছে। কিন্তু, করোনা-র প্রকোপ দেশে অভূতপূর্ব সামাজিক এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ভাইরাসের বিস্তার হ্রাস এবং সংক্রমণ সীমাবদ্ধ করা আমাদের লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যে আমরা হাসপাতাল এবং প্যাথলজি-র ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে সঠিক পরীক্ষা এবং চিকিত্সা সম্ভব হতে পারে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারারস কনক্লেভ -২০২০কে সম্বোধন করেন। শুরুতেই তিনি বলেন, ভারতীয় প্রতিরক্ষা নির্মাতারা, ভারতীয় শিল্প কনফেডারেশন এবং প্রতিরক্ষা উত্পাদন দফতর আয়োজিত এই ই-সম্মেলনে আপনারা সবার মাঝে উপস্থিত হয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। এই সম্মেলনের মূল বিষয় ‘ডিফেন্স এবং এয়ারস্পেস সেক্টরে মধ্যম, লঘু ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির জন্য ব্যবসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা আজকের সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক বলে তিনি মনে করেন। তাঁর কথায়, দুই মাসেরও কম সময়ে আমরা কেবল আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করেছি। এমনকি, আমরা আগামী দিনে প্রতিবেশী দেশগুলিকে সহায়তা করতেও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, কাঁচামালের সরবরাহ শৃঙ্খল লকডাউন চলাকালীন ব্যাহত হওয়ার কারণে উত্পাদন ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রও এর থেকে ব্যতিক্রম হতে পারেনি। তাঁর দাবি, অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র বেশি চাপে রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় প্রতিরক্ষা নির্মাতারা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে বিভিন্ন প্রস্তাব এবং পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে, আমরা যখন লকডাউন কাটিয়ে উঠছি, সে-ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মূল কার্যাবলী হবে ‘ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা’ নিশ্চিত করা। তাঁর দাবি, এই চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সঙ্কটের সময়ে শিল্পের আর্থিক বোঝা কমাতে ভারত সরকার এবং আরবিআই বেশ কয়েকটি আর্থিক সহায়তা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে। সুদের অর্থ প্রদান, অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী মূলধনের সহজলভ্যতার কারণে এগুলি কিছুটা স্বস্তি সরবরাহ করবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এই বিষয়গুলি উল্লেখ করার ক্ষেত্রে আমার উদ্দেশ্য কেবল নীতি ও বিধানগুলি বর্ণনা করা নয়। এই ফোরামের মাধ্যমে আমি দেশবাসীকে বলতে চাই, সরকারের উদ্বেগ কী এবং কারা সরকারের ‘উদ্বেগের কেন্দ্রে’ রয়েছে। ক্ষুদ্র-শিল্প যেগুলি কোটি কোটি মানুষকে কর্মসংস্থান দেয় তাদের আর্থিক দিক-র পাশাপাশি অনেক সামাজিক এবং মানবিক দিক রয়েছে। সরকার সাধারণ মানুষকে আরও ভাল ভবিষ্যত এবং আর্থিক সুরক্ষার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের জীবনশৈলীতে দেশীয় পণ্য গ্রহণ করতে হবে। তিনি জোর গলায় বলেন, দেশীয় উত্পাদন এবং ‘স্বনির্ভর ভারত’র লক্ষ্যে ক্ষুদ্র শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাতে সন্দেহ নেই।