নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মে৷৷ চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু থেকে ত্রিপুরার নাগরিকদের নিয়ে ট্রেন পৌঁছলো আগরতলায়৷ ত্রিপুরার ১,২৩৭ জন নাগরিক মাসাধিককাল তামিলনাড়ুতে আটকে থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন৷ তেমনি বেঙ্গালুরু থেকে ৮৫৫ জন ত্রিপুরায় ফিরেছেন৷ দুটি ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে ৫০৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে চেন্নাই থেকে আগত ট্রেনের ১ মহিলা করোনা পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে থাকার ফলে তাঁকে সিপার্ডের প্রাতিষ্ঠানিক একান্তবাসে পাঠানো হয়েছে৷ ওই মহিলার কামরায় তাঁর সাথের ৭ জনেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিক সন্মেলনে এই খবর দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ৷
প্রসঙ্গত, ট্রেনে ফেরত ত্রিপুরার নাগরিকদের অধিকাংশই চিকিৎসার জন্য তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন৷ কর্ণাটক ফেরত ত্রিপুরার নাগরিকদের মধ্যে অধিকাংশ ছাত্র এবং পর্যটক৷ সদর মহকুমাশাসক অসীম সাহা জানিয়েছেন, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু ফেরত ত্রিপুরার নাগরিকদের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ি রাখা ছিল৷ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক জানিয়েছেন, আগের তুলনায় আরও কঠোর সুরক্ষা ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে৷ তাছাড়া, প্রতি পাঁচ জনে একজনের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে৷
লকডাউনে ত্রিপুরার প্রচুর নাগরিক বহিঃরাজ্যে আটকে পড়েছিলেন৷ তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আজ চেন্নাই থেকে প্রথম ট্রেন ত্রিপুরার নাগরিকদের নিয়ে ফিরেছে৷ তার পর বেঙ্গালুরু থেকে আরেকটি ট্রেন ত্রিপুরার নাগরিকদের নিয়ে এসেছে৷ ত্রিপুরায় ফিরে প্রত্যেক নাগরিক ভীষণ আনন্দিত এবং উৎসাহিত দেখা গেছে৷
জনৈক সঞ্জয় সাহা বলেন, চিকিৎসার জন্য চেন্নাই গিয়েছিলাম৷ কিন্তু লকডাউনে আটকে পড়ি৷ আজ দু মাস বাদে রাজ্যে ফিরেছি৷ তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং দুই সাংসদকে অসংখ্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন৷
একইভাবে ভেলোর থেকে চিকিৎসা করে ফিরেছেন বিশ্বজিৎ দাস৷ তিনি বলেন, দু মাস পর রাজ্যে ফিরেছি৷ চিকিৎসার জন্য তামিলনাড়ু গিয়ে আটকে পড়েছিলেন তিনিও৷ এখন নিজের রাজ্যে ফিরতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে৷
এদিন স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, চেন্নাই থেকে আগত যাত্রীদের প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হয়েছে৷ তাছাড়া, প্রতি ৫ জনে একজনের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে৷ তাঁর দাবি, আগের তুলনায় অনেক কঠোর সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ স্টেশনে পৌঁছানোর পর ট্রেনের কোনও বগিতে জানালা খোলা রাখতে দেওয়া হয়নি৷ প্রত্যেক যাত্রীকে পরীক্ষা করে বাড়িতে একান্তবাসে পাঠানো হয়েছে৷
সদর মহকুমাশাসক অসীম সাহা বলেন, রেল স্টেশনে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন৷ তাছাড়া, বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য প্রচুর গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ নিজেদের খরচে যাত্রীরা বাড়ি গিয়েছেন৷
এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজ সকালে ১,২৩৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রেন চেন্নাই থেকে রাজ্যে এসে পৌঁছেছে৷ সব যাত্রীর স্ক্রিনিং করা হয়েছে৷ এই যাত্রীদের মধ্য থেকে ৩৩৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ উপসর্গহীন হওয়ায় সবাইকে বাড়িতে একান্তবাসে পাঠানো হয়েছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, তাঁদের মধ্যে ১ জন মহিলা করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে থাকার ফলে তাকে সিপার্ডের প্রাতিষ্ঠানিক একান্তবাসে পাঠানো হয়েছে৷ ওই মহিলার কামরায় তার সাথের ৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ তাঁর দাবি, আগরতলা রেল স্টেশনে যথাযথ চিকিৎসক, ল্যাব টেকনেশিয়ান, ডাটা এন্িন্ট অপারেটর সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন৷ অপর একটি ট্রেন বেঙ্গালুরু থেকে আজ দুপুরে ৮৫৫ জন যাত্রী নিয়ে আগরতলায় এসে পৌঁছায়৷
তাঁর কথায়, বেঙ্গালুরু ট্রেনে যাত্রীদের মধ্যে ১৬৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ মাথা ব্যথা হওয়ার জন্য একজন যাত্রীকে জি বি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ বাকি সব যাত্রীদের বাড়িতে একান্তবাসে পাঠানো হয়েছে৷ তিনি বলেন, ওই ট্রেনেই ৫৯২ জন যাত্রী ধর্মনগর রেল স্টেশনে অবতরণ করেন৷ যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ধর্মনগরে রেল স্টেশনেও চিকিৎসক, ল্যাব টেকনেশিয়ান, ডাটা এন্িন্ট অপারেটর সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন৷

