BRAKING NEWS

কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও এক ব্যক্তিকে ঘরে ঢুকতে বাধা স্ত্রী-সন্তানের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ মে৷৷ করোনা জীবনের এক কঠিন এবং নিষ্ঠুর বাস্তবতাকে সামনে এনেছে৷ যেখানে সংক্রমনের ভয়ে স্বামীকে ঘরে ঢুকতে দেননি স্ত্রী৷ কন্যা সন্তানও চাইছে না বাবা ঘরে আসুন৷ কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও আগরতলার জয়নগরের বাসিন্দা গোবিন্দ দেবনাথ বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিলেন প্রাতিষ্ঠানিক একান্তবাসে৷ কারণ তিনি অসমের শিলাপথার থেকে ফিরেছেন৷ বাড়ি ফেরার জন্য তাঁর ৩০ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া চুকোতে হয়েছে৷ কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস, ঘরে জায়গা হল না তাঁর৷


জয়নগরে সরকারি আবাসন প্রকল্পে প্রাপ্ত বাড়িতে বসবাস দিনমজুর গোবিন্দ দেবনাথের৷ স্ত্রী, এক কন্যা সন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন তিনি৷ অসমের শিলাপথারে বেড়াতে গিয়েছিলেন গোবিন্দ৷ লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় আটকে পড়েছিলেন৷ দেড় মসের উপর অসমে আত্মীয়ের বাড়িতে কাটিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন গোবিন্দ দেবনাথ৷ তাই ৩০ হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করে রওয়ানা দেন তিনিঊ অসমের সীমান্তবর্তী ত্রিপুরার চোরাইবাড়িতে তাঁকে একদিনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক একান্তবাসে থাকতে হয়েছিল৷ এরই মধ্যে তাঁর নমুনা সংগ্রহ হয় এবং পরীক্ষায় কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তাঁর৷ ফলে তাঁকে একান্তবাস থেকে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়৷ কিন্তু গতকাল রাতে বাড়ি ফিরে তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে৷


তাঁর স্ত্রী তাঁকে ঘরে ঢুকতে দেননি৷ বরং তাঁকে একান্তবাসে যেতে বলেন তাঁর স্ত্রী৷ তাঁর কন্যা সন্তানও চায়নি বাবা ঘরে প্রবেশ করুন৷ গোবিন্দ দেবনাথ বলেন, বাড়ির সকলেই ভীতিগ্রস্ত৷ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়েই তারা এমন আচরণ করছেঊ তাঁর কথায়, আবাসনের অন্য বাসিন্দারাও চাইছেন না আমি এই বাড়িতে থাকি৷ আবাসিকদের চাপেও তাঁর পরিবার তাঁকে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছে না, দাবি করেন গোবিন্দ৷


এদিকে তাঁর স্ত্রী বলেন, অসম থেকে ফিরতে স্বামীকে বারণ করেছিলাম৷ কিন্ত তিনি শুনেননিঊ তিনি বলেন, ঘরে আমার বয়স্ক মা রয়েছেন৷ সম্প্রতি তাঁর অস্ত্রপচারও হয়েছে৷ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, তাই তাঁকে বারণ করেছিলাম অসম থেকে না ফেরার জন্য৷


এ-বিষয়ে জানতে পেরে রাতেই স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা গোবিন্দ দেবনাথকে সহায়তার জন্য ছুটে যান৷ তাঁরাও বোঝানোর চেষ্টা করেন, গোবিন্দের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে৷ ফলে, করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেইঊ কিন্তু নানাভাবে বোঝানোর পরও কেউই মানতে এবং বুঝতে রাজি হননি৷ অবশেষে গোবিন্দকে প্রাতিষ্ঠানিক একান্তবাসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তিনি ১৪ দিন একান্তবাসে থাকবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *