রাজ্যে দ্বিতীয় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত টিএসআর জওয়ান

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ এপ্রিল৷৷ রাজ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দ্বিতীয় রোগীর সন্ধান মিলেছে৷ তাতে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই বলেই মনে করা হচ্ছে৷ কারণ, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠা সম্ভব, তা প্রথম আক্রান্ত মহিলার শারীরিক অবস্থা প্রমাণ করেছে৷ তিনি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠছেন৷ তবে, এই ভাইরাসকে কোনও ভাবেই অবহেলা করা উচিৎ হবে না৷ তার উদাহরণ রাজ্যে দ্বিতীয় আক্রান্তের ঘটনা৷ তার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনও লক্ষণ ছিল না৷ তাই করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েও চৌদ্দ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল৷ ফলে, সতর্কতা অবলম্বন করে বাড়িতে থাকাই নিরাপদ, এটাই চরম সত্যি বলে মনে করা হচ্ছে৷
রাজ্যে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খবর দিয়ে ত্রিপুরাবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন৷ প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে৷ সারা দেশেই আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে৷ রাজ্যে ইতিপূর্বে এক মহিলা আক্রান্ত হয়েছিলেন৷ তিনি বর্তমানে জিবি হাসপাতার্লে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল৷


শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তাঁর ফেসবুক পেজে এই খবর দিয়ে জানিয়েছেন, আরও একজন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে৷ তাঁর বয়স ৩২ বছর৷ তিনি টিএসআর-এ কর্মরত৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওই টিএসআর জওয়ান ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগীর সাথে একই ট্রেনের একই বগিতে সফর করেছিলেন৷ এছাড়া তিনি তাঁর ট্যুইট হ্যান্ডেলেও এই খবর দিয়ে রাজ্যের জনসাধারণকে ভীত না হয়ে নিজের নিজের ঘরে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছেন৷


এদিকে, আজ রাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের সাধারণ প্রশাসন দপ্তরের সচিব টি কে চাকমা এবং স্টেট সার্ভাইলেন্স অফিসার ডা. দীপ কুমার দেববর্মা এই সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য জানান৷ তাঁরা জানান, রাজ্যে আরও একজন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের রোগী পাওয়া গেছে৷ আক্রান্ত ব্যক্তি টি এস আর-এর ১৩ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ান৷ বর্তমানে দামছড়া ক্যাম্পে কর্মরত রয়েছেন৷ এনিয়ে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমণের রোগীর সংখ্যা ২৷


সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে, নতুন আক্রান্ত রোগীর এমনিতে কোনও উপসর্গ নেই৷ তবে প্রথম যে রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিলো তিনি সেই একই ট্রেনের একই কামরার যাত্রী ছিলেন৷ তারই ভিত্তিতে ঐ কামরার যাত্রীদের ট্রেকিং করার পর তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং তার ফলেই আজ নতুন এই রোগীকে সনাক্ত করা হয়েছে৷ স্টেট সার্ভাইলেন্স অফিসার ডা. দীপ কুমার দেববর্মা জানান, বর্তমানে ঐ আক্রান্ত ব্যক্তি সুুস্থ রয়েছেন৷ তাকে রাতের মধ্যেই আগরতলায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হবে৷ দামছড়ার যে ক্যাম্পে তিনি কর্মরত সেই ক্যাম্পের সকল জওয়ানদের নমুনা পরীক্ষা করা হবে৷
সরকারের গাইডলাইন অনুসারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে৷ শ্রী দেববর্মা জানান, নতুন আক্রান্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি রাজ্যের অধিবাসী নন৷ তিনি ত্রিপুরাসুুন্দরী এক্সপ্রেসে করে ধর্মনগরে নামেন৷ ঐ ট্রেনের একই কোচে সফর করা যাত্রীদের মধ্যে যারা আগরতলা ও উদয়পুরের ছিলেন তাদেরও আগেই পরীক্ষা হয়েছে৷ তারা সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে৷


ডাঃ দীপ দেববর্মার কথায়, প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে রাজ্যে করোনা ভাইরাসে দ্বিতীয় আক্রান্তের মাধ্যমেই ওই মহিলা সংক্রমিত হয়েছিলেন৷ তবে, করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই৷ তিনি বলেন, ওই মহিলার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাতে সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে বলে রিপোর্টে এসেছে৷ তাই আশা করা যাচ্ছে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন৷ তিনি জানান, ওই মহিলার আগামীকাল ফের পরীক্ষা করা হবে৷ পরপর দুটি পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকলেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *