করোনার ভ্যাকসিন বের না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দের

হাটশিঙিমারি (অসম), ১০ এপ্রিল (হি.স.) : যতদিন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বের হচ্ছে, ততদিন নিজেদের সুস্থ রাখার খাতিরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজে এবং অন্যকে সুস্থ রাখতে এজন্য সকলকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে আবেদন জানান তিনি। সতর্ক করে বলেন, কেউ যাতে সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম ভঙ্গ না করেন, নইলে কড়া আইনি পদক্ষেপের সম্মুখিন হতে হবে।

মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপের জেরে গোটা রাজ্যে লকডাউন চলছে। এমতাবস্থায় শুক্রবার নিম্ন অসমের দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর জেলায় করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ইত্যাদির খোঁজখবর খতিয়ে দেখতে হাটশিঙিমারি এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। তিনি জেলা সদর হাটশিঙিমারিতে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে পর্যালোচনা সভা করেছেন।

আজ বেলা প্রায় একটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে মানকাচরের অসম-মেঘালয় সীমান্তে রামভোলাপাড়ায় অস্থায়ী হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তিনি সোজা চলে যান জেলাশাসকের অফিসে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন খাদ্য ও অসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী ফণীভূষণ চৌধুরী। জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য সম্পৃক্ত কর্মীদের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা আলোচনা করেন। করোনা ভাইরাস এবং লকডাউনের জেরে সৃষ্ট সর্বশেষ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি।

এর পর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউনের সময় সব নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক। লকডাউন সংক্রান্ত সরকারের নির্দেশ ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহামারি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যাঁরা দিনরাত এক করে চলেছেন সেই সব ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীদের আন্তরিকতার সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইভাবে লকডাউনের সময় যে সব প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার সাধারণ মানুষকে সুবিধা দিয়ে আসছে, সেই সব সুবিধা নিতে সংশ্লিষ্টদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি। বিভিন্ন জায়গায় ব্যাংকে সরকারি টাকা তুলতে গিয়ে অনেকে লকডাউন লঙ্ঘন করছেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এভাবে সামাজিক দূরত্ব অমান্য না করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী সনোয়াল।

এদিকে মানকাচর-সহ বিভিন্ন জেলায় সমবায় সমিতির হকাররা সুবিধাভোগীদের ৫ কেজি চালের জায়গায় মাত্র ৪ কেজি চাল বিলি করছে অভিযোগ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা এ ধরনের কুকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে এদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর জেলার জনসাধারণকে চিকিৎসার জন্য অথবা অন্য যে কোনও কারণে পার্শ্ববর্তী রাজ্য মেঘালয়ে যেতে হয়। তার কারণ এখান থেকে গুয়াহাটি বা দেশের অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার অন্য কোনও বিকল্প পথ নেই। তাই লকডাউনের সময় জেলার রোগীরাও জরুরিকালীন অবস্থায় চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি যেতে পারছেন না। কেননা, সপ্তাহ দুয়েক আগেই মেঘালয় সরকার বহিঃরাজ্যর লোকজনকে সে রাজ্যে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করলে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন, ডাক্তার এবং অন্য অফিসাররা বিষয়টি তাঁকে অবগত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মেঘালয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের পথ বের করার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে মধ্যাহ্ন ভোজন করে মুখ্যমন্ত্রী সনোয়াল বেলা দুটো ১৫ মিনিট নাগাদ ফের হেলিকপ্টারে গোয়ালপাড়ার উদ্দেশে রওয়ানা হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *