কাটিগড়া (অসম), ২০ মার্চ (হি.স.) : কাছাড়ের কাটিগড়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ফের দুর্ঘটনা সংঘ্টত হয়েছে। এবার লরির ধাক্কায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে জনৈক দিন মজুরের। নিহতের নাম আবদুল হান্নান (৪০)। বাড়ি কাছাড় জেলার কাটিগড়া দ্বিতীয় খণ্ডের গঙ্গাপুর গ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল প্রায় সাড়ে ছয়টায়।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে টিকরপাড়া সংলগ্ন ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে নিজের বাই-সাইকেলে চড়ে চৌরঙ্গি অভিমুখে যাচ্ছিলেন আবদুল হান্নান। এমন সময় টিকরপাড়া মসজিদের সামনে বদরপুরের দিক থেকে কালাইন অভিমুখে যাওয়ার পথে এএস ০১ জেসি ৬৯৫৭ নম্বরের একটি লরি অন্য গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে আবদুলকে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কায় মাটিতে লুটিয়ে পডে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আবদুল হান্নান। লরিটি পালিয়ে গেলেও হিলাড়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। অবশ্য লরির চালক ও সহ-চালক পালিয়ে গেছে।
ঘটনার পর পর ক্ষুব্ধ জনতা জাতীয় সড়কে অবরোধ গড়ে তুলেন। সড়কের দু-পাশে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। ফলে জাতীয় সড়ক কিছু সময়ের জন্য অচল হয়ে পড়ে। ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর কাটিগড়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত করতে অসমর্থ হন তাঁরা। তাঁদের দাবি, জেলাশাসককে অবরোধকারীদের সামনে এসে সড়কের সাইডবাম সমস্যার সুরাহা করতে হবে। এছাড়া হত আবদুল হান্নানের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তার পরই অবরোধ মুক্ত করা হবে। স্থানীয়রা যখন এ ধরনের দাবিতে অটল তখন সকাল প্রায় ৮.১৫ মিনিট নাগাদ বিধায়ক অমরচাঁদ জৈন এসে মধ্যস্থতায় নামেন। তিনি হতভাগ্যের অন্তিম কাজের জন্য পার্থমিকভাবে দুই হাজার টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। পাশাপাশি কথা দেন, সরকারি সাহায্য পাইয়ে দিতে যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন।
বিধায়কের কাছে প্রতিশ্রুতি পেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত করেন উত্তেজিত এলাকার জনতা। নিহত আবদুল হান্নানের বড় ভাই আব্দুল মনাফ লস্কর জানান, নিত্য রোজগার করে নিজের সংসার চালাতেন। মৃত্যুকালে রেখে গেছেন স্ত্রী, দুই মেয়ে, তিন ছেলে। এদিকে কাটিগড়া পুলিশ আবদুল হান্নানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় আশিক উদ্দিন (সুনা মেম্বার), মঞ্জুরুল ইসলাম চৌধুরীরা অভিযোগ করে জানান, গত বছর জনৈক বাদল পালের মালিকানাধীন নির্মাণ সংস্থা সড়কের কাজ করেছিল। কিন্তু সাইডবাম দেওয়া হয়নি। জাতীয় সড়কের ঢালাই থেকে কোনও জায়গায় এক হাত-তো কোনও জায়গায় দেড় হাতের মতো নিচু রয়েছে। এই ঢালাই যখন দেওয়া হয়েছিল, তখন থেকেই একই অবস্থায় রয়েছে। রীতিমতো কথার খেলাপ করেছে সড়ক নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। আজ যদি সাইডবাম থাকতো তা হলে এ ধরনের দুর্ঘটনায় কেউ প্রাণ হারাতেন না। অতি সত্বর সাইডবামের জোড়ালো দাবি জানান স্থানীয়রা।

