এডিসি’র নাম বদলে টিটিসি মিলবে না সরাসরি অর্থ

৷৷ অভিজিৎ রায়চৌধুরী৷৷ নয়াদিল্লি, ৫ মার্চ৷৷ এডিসিকে সরাসরি অর্থ প্রদান করা হবে না৷ সংবিধান সংশোধনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে এডিসিকে সরাসরি অর্থ প্রদানের সুপারিশ করা হয়নি৷ আজ লোকসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটি সংবিধানের ১২৫তম সংশোধনীর জন্য রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ তাতে, ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদ (টিটিএএডিসি)-এর নাম বদলে তিপ্রা আঞ্চলিক পরিষদ অর্থাৎ তিপ্রা টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল (টিটিসি)-র সুপারিশ করেছে ওই কমিটি৷ শুধু তা-ই নয়, আসন সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাবেও সম্মতি রয়েছে কমিটির৷ তাই, আসন সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করার সুপারিশ করা হয়েছে৷ তবে, টিটিসি-কে সরাসরি অর্থ বরাদ্দ করা হবে না৷ বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ত্রিপুরা সরকারের মাধ্যমেই অর্থ যাবে টিটিসি-র হাতে৷


প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভায় এডিসির আসন সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে৷ রাজ্য সরকার এডিসির আসন ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ হোক চাইছে৷ তার মধ্যে ৪৪টি আসনে নির্বাচন হবে৷ রাজ্যপাল মনোনিত প্রতিনিধি থাকবেন ছয়জন৷


সংসদীয় কমিটি উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের মতামত সংগ্রহ করেছিল৷ মূলতঃ এডিসির অধিক ক্ষমতায়নে সংবিধান সংশোধনের তাগিদেই সংসদীয় কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল৷ ওই কমিটি উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের জনজাতি নেতা ও জনজাতি ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে বৈঠক করেছে৷ রাজ্য থেকে আইপিএফটি সহ একাধিক উপজাতি দল ও সংগঠন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েছে এবং মতামত পেশ করেছে৷


বৃহস্পতিবার লোকসভায় রাজ্যসভায় বিরোধী উপনেতা আনন্দ শর্মার নেতৃত্বে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে সংসদীয় কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ তাতে, টিটিএএডিসি-র নাম বদলে টিটিসি করার সুপারিশ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে কমিটি৷ পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করার সুপারিশের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারকে ত্রিপুরা সরকারের সাথেও আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি৷
কমিটির বক্তব্য, আসন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রথা থাকতে হবে৷ যেমন খুশি আসন সংখ্যা বাড়ানো বা কামানো উচিত হবে না৷ এতে সমস্যা হতে পারে৷


এদিকে, পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থার কাঠামো আঞ্চলিক পরিষদেও যুক্ত করার সুপারিশ করেছে ওই কমিটি৷ এডিসি-তে এখন পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থার ধাঁচে কোনও কাঠামো নেই৷ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা যুক্ত করার সুপারিশ করেছে রাজ্যসভার উপনেতা আনন্দ শর্মার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি৷ কমিটি আজ লোকসভায় সংবিধানের ১২৫-তম সংশোধনী বিল শীর্ষক রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷
এডিসি’র অধিক ক্ষমতায়নে অন্যতম প্রধান দাবী সরাসরি অর্থ প্রদান করা৷ কিন্তু, সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে এডিসিকে সরাসরি অর্থ প্রদানের সুপারিশ করা হয়নি৷ কারণ অর্থ কমিশনের মঞ্জুরি মিলেনি৷ এই বিষয়ে অর্থ কমিশনের যুক্তি চলমান পদ্ধতিতেই এডিসিকে অর্থ বরাদ্দ করা সঙ্গত৷ তাতে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে৷


ধারণা করা হচ্ছে, বাজেট অধিবেশনেই কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল পাশ করে নেবে৷ ফলে এডিসি নির্বাচনের আগেই স্বশাসিত জেলা পরিষদ বদলে হয়ে যাবে আঞ্চলিক পরিষদ৷ তবে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি সম্ভবত এখনই হচ্ছে না৷ কারণ, সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে৷