কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার চায় জনগণের টাকা যেন সঠিকভাবে খরচ হয় : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ ফেব্রুয়ারী৷৷ বর্তমান রাজ্য সরকার ১২৭টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প, ৪টি রিএমবার্সমেন্ট প্রকল্প, ফিনান্স কমিশন গ্র্যান্ট সহ বিভিন্ন প্রকল্পগুলি যথাযথভাবে রূপায়ণের লক্ষ্যে কাজ করছে৷ রাজ্য সরকার চায় জনগণের উন্নয়নের জন্য যে টাকা সরকারের কাছে রয়েছে তা যেন সঠিকভাবে খরচ হয়৷ কারণ যে কোনও সরকারই জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে৷ আজ মহাকরণের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথাগুলি বলেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এমন কিছু কিছু প্রকল্প রয়েছে যেগুলির নাম পরিবর্তন হয়েছে এবং কিছু প্রকল্প অনিয়মিত হয়ে গেছে৷ সেই প্রকল্পগুলির অব্যয়িত টাকা খরচ করতে গেলে বিধানসভায় অনুমোদন নিতে হয়৷ রিএমবার্সমেন্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে আগে টাকা খরচ করে তার হিসেব দিলে টাকা পাওয়া যায়৷


তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে প্রাপ্ত টাকা খরচ করে সঠিক সময়ে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে হয়৷ তবেই পরবর্তীতে টাকা পাওয়া যায়৷ দেখা গেছে বিগত সরকার উদ্যান দপ্তরের ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেয়নি৷ বর্তমান সরকার সেগুলি রেগুলারাইজেশন করার চেষ্টা করছে৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ৬টি প্রকল্পে স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরকে সরাসরি টাকা প্রদান করেছে৷ এছাড়াও চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে রেগায় রাজ্য ৬৭৬ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা পেয়েছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে রেগায় কাজও হয়েছে৷ রেভিনিউ ডেফিসিট গ্র্যান্ট-এ ৮৭৫ কোটি টাকার মধ্যে রাজ্য পেয়েছে ৭২৯ কোটি ১০ লক্ষ টাকা৷ বাকি টাকা ফেবয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে৷ লোকাল বডিজ গ্র্যান্টে (আরবান) ৬৮ কোটি ২৬ লক্ষ টাকার মধ্যে ৬৩ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা পেয়েছে রাজ্য৷ এছাড়াও স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফাণ্ডে রাজ্য ৩৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছে৷ শিক্ষামী জানান, কিছু কিছু প্রকল্পে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার কারণে ফাণ্ড পাওয়া যাচ্ছে না৷ রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে সেগুলি রেগুলারাইজেশন করার জন্য৷


শিক্ষামন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় প্রকল্প ছাড়াও রাজ্য সরকার রাজ্যের উন্নয়নে নতুন নতুন প্রকল্প চালু করেছে৷ সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ফসল বিমা যোজনার আওতায় আসা ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির মধ্যে যদি কৃষকরা টাকার অভাবে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দিতে না পারে সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার দায়িত্ব নিয়েছে সেই বিমার প্রিমিয়ামের টাকা প্রদান করার৷ এছাড়াও বি এড অনুপ্রেরণা যোজনা, নবম শ্রেণীর ছাত্রীদের জন্য বাইসাইকেল প্রদান, রেশনশপে চিনি প্রদান, সামাজিক ভাতা ৩০০ টাকা বৃদ্ধি, চিফ মিনিস্টার স্টেট অ্যাওয়ার্ড ফর অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স ইত্যাদি নতুন প্রকল্প রাজ্য সরকার চালু করেছে৷
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, রাজ্য সরকার ১৩টি এক্সটারনাল এইডেড প্রকল্পের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট পাঠিয়েছে৷ সেগুলি হলো বিদ্যৎ দপ্তরের পাওয়ার জেনারেশন, আপগ্রেডেশন ও ডিসট্রিবিউশনের জন্য ১৯২৫ কোটি টাকা, পর্যটন দপ্তরের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৫০০ কোটি টাকা৷ আগরতলা শহরের উন্নয়নের জন্য নগরোন্নয়ন দপ্তরের ৫০০ কোটি টাকা৷

বন দপ্তরের ১৬৩০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, রাজ্যের ৭টি জেলা সদরের পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ১৬৫০ কোটি টাকা, শিল্পাঞ্চলের পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ৪০৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা, জমিয়া এবং জমিহীন জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য ৩২৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা, বন্যা নিয়ণ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ১৪০৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা, নদীর বাঁধ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা, রাজ্যের স্টেট হাইওয়ের উন্নয়নের জন্য ৬৫ কোটি টাকা, গ্রামীণ এলাকায় পানীয়জল সরবরাহের জন্য ১৫১৯ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা এবং আগরতলা পুরনিগম এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১৩৪২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার চায় জনগণের টাকা যেন সঠিকভাবে খরচ হয় এবং অপচয় যাতে না হয়৷ সেই দিশায় দেশের প্রধানমী ও রাজ্যের মুখ্যমী কাজ করছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *