নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ জানুয়ারি৷৷ কৈলাসহর মহকুমা বন দফতরের কর্মরত লিটন দেবনাথের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ লোপাট এবং বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনে আইপিএফটি শুক্রবার মহকুমা বন দপ্তরের অফিসে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়৷ তারা মূল ফটক বন্ধ করে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন৷
কৈলাসহর মহকুমা বন দফতরের কর্মী তথা ফরেস্টার লিটন দেবনাথকে দুর্নীতির দায়ে অবিলম্বে চাকুরী থেকে সাসপেন্ড করতে হবে এবং বন দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পে জড়িত লিটন দেবনাথের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্তের জন্য তদন্ত কমিশনের দাবিতে আইপিএফটি ঊনকোটি জেলা কমিটির উদ্যোগে দলীয় কর্মীরা শুক্রবার সকালে কৈলাসহর শহরে অবস্থিত মহকুমা বন দফতরের অফিসের মূল গেইট তালাবন্দী করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে৷ এই বিক্ষোভ কর্মসূচীর নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএফআই ঊনকোটি জেলা কমিটির সভাপতি জয়কিশান দেববর্মা, কৈলাসহর মহকুমা কমিটির সম্পাদক মনোরঞ্জন দেববর্মা ও দলীয় নেতা সঞ্জিত দেববর্মা প্রমুখ৷
বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালীন জেলা সভাপতি জয় কিশান দেববর্মা বলেন, রাজ্যের বাম আমল থেকেই ফরেস্টার লিটন দেবনাথ কৈলাসহরের এডিসি এলাকার বিভিন্ন কাজ কর্মে দুর্নীতি করে আসছে৷ এমনকি বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলেও কেলেঙ্কারি করে চলেছে৷ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফরেস্টার লিটন দেবনাথের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এডিসি এলাকার মানুষ এমনকি দলীয় ভাবেও কয়েকবার দফতরের আধিকারীকদের নিকট মৌখিক ও লিখিত ভাবে অভিযোগ দেওয়ার পরও দপ্তর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷ দপ্তর সম্পূর্ণরূপে উদাসীন৷
জয় কিশান দেববর্মা আরোও বলেন, কৈলাসহরের গোলোকপুর, সমরুছড়া, জামতৈলবাড়ি, হালামবাড়ি, এনসি পাড়া প্রভৃতি উপজাতি এলাকার মানুষ পাট্টা পেয়ে যে যার জায়গায় কলা বাগান, সুপারি বাগান, রাবার বাগান, বাঁশ বাগান, চা বাগান ইত্যাদি করেছে৷ ফরেস্টার লিটন দেবনাথ প্রায়ই এইসব এলাকায় গিয়ে উপজাতি মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে৷ টাকা না দিলে ফসল নষ্ট করে দেবে বলে হুমকি দেন৷ এছাড়া এই সমস্ত জায়গাতে বন দপ্তরের বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন কাজ করার কথা থাকলেও কোন কাজ আজ না করে পুরো টাকাই হাফিজ করে দিয়েছে লিটন দেবনাথ৷
তাঁর অভিযোগ, দিনের পর দিন ফরেস্টার লিটন দেবনাথ কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করছেন৷ এছাড়াও, চন্ডীপুর ব্লকের অধীনে সমস্ত এডিসি এলাকাতে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জঙ্গল কাটার নামে কোন কাজ না করেই সাড়ে তিন কোটি টাকা হাফিজ করেছেন৷ জয় কিশানের দাবি, ফরেস্টার লিটন দেবনাথের সাথে দপ্তরের একাংশ অফিসার যুক্ত রয়েছেন৷
প্রসঙ্গত, চলতি গত পাঁচ জানুয়ারি লিটন দেবনাথকে কৈলাসহর থেকে পানিসাগর বদলী করেছিল বন দপ্তর৷ কিন্তু, তার এতোই প্রভাব যে, কুড়ি জানুয়ারি সেই বদলীর আদেশ স্থগিত করে দেন৷ তাই, যত দিন পর্যন্ত তাদের দাবি মানা হবে না ততোদিন পর্যন্ত মহকুমা বন দপ্তরের অফিস তালাবন্দি রেখে ঘেরাও চলবে বলে জানান৷ প্রায় চার ঘন্টা বিক্ষোভ চলার পর ঘটনা স্থলে কৈলাসহরের মহকুমা শাসক ডা: বিশাল কুমার এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে দাবিগুলির প্রতি সহমত পোষণ করেন দশদিনের সময় চেয়ে মহকুমা শাসক বলেন, খুব শীঘ্রই লিটন দেবনাথের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পাবার পর বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন আইপিএফটি কর্মীরা৷