১০ শয্যা বিশিষ্ট মনুঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত পাকা বাড়ির দ্বারোদঘাটন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ জানুয়ারি৷৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মনুঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত পাকা বাড়ির দ্বারোদঘাটন করেন৷ ফিতা কেটে এবং ফলক উন্মোচন করে তিনি মনুঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দ্বার জনগণের জন্য উন্মক্ত করেন৷ দ্বারোদঘাটন সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে জনকল্যাণে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরাতে ক্যানসার ইনস্টিটিউট হবে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি৷ জিবি হাসপাতালে নিউরো সার্জেন আসবেন, সার্জারি হবে, ১৫০ জনের বেইন টিউমার অপারেশন হবে কেউ ভাবেননি৷ এটাই হচ্ছে পরিবর্তন৷

ত্রিপুরাতে ১১০ জন নুতন ডাক্তার সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায় নেওয়া হয়েছে৷ পি জি এবং এম বি বি এস কোর্সে আসন সংখা বৃদ্ধি করা হচ্ছে৷ খুমুলুঙে এইমসের মতো অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে৷ মনুঘাটে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ত্রিপুরার ১১৫তম স্বাস্থ্য কেন্দ্র৷ হোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদিক ডাক্তারগণকেও গ্রামের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে যাতে করে গ্রামীণ এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবার সুুযোগ পেতে পারেন৷


সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে সামান্য জর হলেও মহকুমা হাসপাতালগুলি থেকে রুগীদের সদর রেফারেল হাসপাতালে রেফার করা হতো৷ এখন তা অনেক কমেছে৷ বর্তমান সরকার পি জি এবং এম বি বি এস কোর্সে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ তাই ডাক্তারদের জন্য নতুন পলিসি তৈরি করে তাদের মানুষের কল্যাণে গ্রামেগঞ্জের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হচ্ছে৷ সামান্য প্রাথমিক চিকিৎসা করার জন্যও আগে গ্রামে ডাক্তার ছিল না৷ এখন গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসক দেওয়া হচ্ছে৷ স্বাস্থ্য দপ্তরকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে৷ পরিষেবায় স্বচ্ছতা আনা হচ্ছে৷ আয়ুমান ভারত সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় হচ্ছে সবচেয়ে বড় যোজনা৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে যে সরকার চলছে সে সরকার ত্রিপুরাতে ২০ লক্ষ ৫৫ হাজার পরিবারকে আয়ুমান ভারতের কার্ড দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে৷

তার মধ্যে এখন পর্যন্ত পৌনে নয় লক্ষ মানুষের হাতে আয়ুমান ভারতের কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে৷ যারা বাদ পড়েছে অথচ গরীব, তাদের মধ্যে আয়ুমান ত্রিপুরা নামে প্রকল্প রচনা করে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ই-কার্ড গরীব মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ প্রতিটি বাড়িতে অটল জলধারা প্রকল্পে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ৭০০ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে মঞ্জুর করা হয়েছে৷ এটাই এই সরকারের সাফল্য৷ সরকার উন্নয়নের দিশায় কাজ করছে৷ একাজে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ চোখের ছানি মুক্ত ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে সকল চক্ষুরোগীদের বিনামূল্যে চশমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি৷


মুখ্যমন্ত্রী মনুঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চক্ষুরোগীদের এবং যক্ষারোগীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ তারা ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে চিকিৎসার সুুযোগলাভ করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী নির্মিয়মান ফেনী সেতুর কাজ পর্যবেক্ষণ করেন৷ দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক শঙ্কর রায়৷ স্বাগত ভাষণ দেন দক্ষিণ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. শঙ্কর দাস৷ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অরুণ চন্দ্র ভৌমিক, দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি কাকলি দাস দত্ত, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব ডা. দেবাশিষ বসুু, দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাতচাঁদ প’ায়েত সমিতির চেয়ারম্যান অনিল চন্দ্র ত্রিপুরা৷ ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মনুঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *