নীতীশের নেতৃত্বেই হবে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের লড়াই : অমিত শাহ

বৈশালী (বিহার), ১৬ জানুয়ারি (হি.স.): নীতীশ কুমারের নেতৃত্বেই বিহার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এনডিএ| বিজেপি এবং জেডি (ইউ)-র জোট অটুট রয়েছে| কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী এবং বিহারে নীতীশ কুমারই এনডিএ-র নেতৃত্ব করবেন| বৃহস্পতিবার বিহারের বৈশালী জেলায় ‘জন জাগরণ অভিযান’ জনসভায় এমনই দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ| বৃহস্পতিবার বিহারের বৈশালী জেলায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ২০১৯-এর প্রেক্ষিতে ‘জন জাগরণ অভিযান’-এর অন্তর্গত জনসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ| এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘মুসলিম ভাইদের আমি বলতে চাই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আপনারা পড়ুন, এ কথা বলতেই আমি এখানে এসেছি| জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না রাহুল বাবা এবং লালু প্রসাদ, আমি একথা বলতেও এখানে এসেছি| মমতা দিদি এবং কেজরিওয়াল জি আপনারাও জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না|’ আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের লড়াই হবে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বেই, বিজেপি এবং জেডি (ইউ) একসঙ্গেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে| এই দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘সমস্ত জল্পনাকে আমি বিশ্রাম দিতে চাই, বিহারে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের নেতৃত্বে দেবেন নীতীশ কুমারই| বিজেপি এবং জেডি (ইউ) একসঙ্গেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে|’

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ জারি রয়েছে| ঘটছে হিংসাত্মক ঘটনাও| সিএএ-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অনেকেই| বিজেপির মতে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বিক্ষোভ-প্রতিবাদের কারণেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে জনগণের মধ্যে| ক্ষোভ বাড়ছে জনমানসে| জনগণের বিভ্রান্তি দূরতে ‘জন জাগরণ অভিযান’ শুরু করেছে বিজেপি| বৃহস্পতিবার বিহারের বৈশলী জেলার খরৌনা পোখর-এ আয়োজিত সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘তোষণ, জাতপাত এবং পরিবারতন্ত্রের কারণে আমাদের দেশের রাজনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল| মোদীজী ২০১৪ সালের পর থেকে তোষণ, জাতপাত এবং পরিবারতন্ত্রকে সমাপ্ত করার কাজ করেছেন|’ অমিত শাহ বলেছেন, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি সিএএ নিয়ে দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে| অনেক জায়গায় কংগ্রেস দাঙ্গা করিয়েছে| লালু প্রসাদ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাহুল গান্ধীর নাম করেই অমিত শাহ বলেছেন, ‘মুসলিম ভাইদের আমি বলতে চাই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আপনারা পড়ুন, এ কথা বলতেই আমি এখানে এসেছি| জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না রাহুল বাবা এবং লালু প্রসাদ, আমি একথা বলতেও এখানে এসেছি| মমতা দিদি এবং কেজরিওয়াল জি আপনারাও জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না| মোদীজী পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে নিপীড়িত অ-মুসলিম সংখ্যালঘু, অর্থাত্ হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান এবং পারসি ধর্মাবলম্বী মানুষজনকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই সিএএ বানিয়েছে| এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য| কারও নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নয়|’ কংগ্রেসকে আক্রমণ করে অমিত শাহ বলেছেন, ‘রাজস্থানে কংগ্রেস নিজেদের  নির্বাচনী ইস্তেহারে পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দুদের নাদরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল| এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিএএ চালু করে নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ করছেন|

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রসঙ্গ উত্থাপণ করে অমিত শাহ বলেছেন, তিন বছর আগে সেখানে (জেএনইউ) ‘ভারত তেরে টুকড়ে হোঙ্গে’ স্লোগান উঠত| কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টি এবং মমতা দিদি এখন তাঁদেরই পক্ষে| জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বহু বছর ধরে আটকে থাকা দেশের স্বার্থের বিষয়গুলি স্পর্শ করতেই সবাই ভীত ছিল| কিন্তু, মোদীজী ৭০ বছর ধরে আটকে থাকা সমস্যাগুলি সমাধানের কাজ করেছেন|’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করে বলেছেন, ‘গান্ধীজী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁরা কী সাম্প্রদায়িক ছিলেন? নেহরু, সরদার প্যাটেল, রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রত্যেকেই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের ভয়ে কংগ্রেসের সেই সমস্ত কাজ করেনি| মোদীজী শরণার্থীদের সম্মান রক্ষা করেছেন|’ কারও নাম না করেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন বলেছেন, কিছু মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে যে এনডিএ-তে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ রয়েছে| বিভ্রান্তি দূর করা উচিত তাঁদের| এনডিএ-র জোট অটুট| কোনও ধরনের আশঙ্কার অবকাশ নেই| এদিনের জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ| স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সম্পর্কে ভুল বক্তব্য উপস্থাপিত করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস|’ বিরোধী দলগুলিকে নিশানা করে অমিত শাহ বলেছেন, বিরোধী দলগুলি পাকিস্তানের ভাষায় কথা বলছে|