তীর্থমুখে ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলার উদ্বোধন, ভারতীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির এক অনন্য নজির তীর্থমুখ মেলা : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ জানুয়ারি৷৷ মুখ্যমী বিপ্লব কুমার দেব আজ তীর্থমুখে ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলার উদ্বোধন করেন৷ দুইদিনব্যাপী এই মেলা রাইমা-সাইমা নদীর পূণ্য সঙ্গমস্থল তীর্থমুখে শুরু হয়েছে৷ মেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমী রাজ্যবাসীর সুুখ ও সমৃদ্ধি ও শ্রীবৃদ্ধি কামনা করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ভারতীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির এক অনন্য নজির তীর্থমুখ মেলা৷ আদিকাল থেকে জাতি জনজাতির মিশ্র সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ হয়ে আসছে এই মেলা৷ তবে কবে থেকে এই মেলা শুরু হয়েছিল তা আজও অজানা৷ তিনি আরও বলেন যে ইংরেজরা ২০০ বছর এবং মোঘলরা ৬০০ বছর ভারতে শাসনকার্য চালানোর সময় ভারতের সংস্কৃতিকে নষ্ট করার চক্রান্ত করেও ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে নষ্ট করতে পারেনি৷ তাই এই সংস্কৃতি আজও স্বমহিমায় বহমান৷ তীর্থমুখ মেলায় লক্ষাধিক পূণ্যার্থীর সমাগম এর উজ্জল প্রমাণ৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যের উন্নয়নে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে৷ বর্তমান সরকারের শাসনকালে রাজ্যের জনজাতিদের শিক্ষার উন্নয়নে ১৮টি একলব্য মডেল স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এ ডি সিকে অধিক ক্ষমতায়ণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে৷ রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন এবং পর্যটকদের কাছে পর্যটন স্থলগুলিকে আরও আকর্ষনীয় করার লক্ষ্যে নারকেলকুঞ্জকে অত্যাধুনিক সুুবিধাযুক্ত পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে৷ খুব সহসাই তা বাস্তবায়িত হবে৷ তিনি বলেন, মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের নামে আগরতলা বিমান বন্দরের নাম রাখা হয়েছে৷ কারণ বীর বিক্রম মাণিক্য বাহাদুর ছিলেন আধুনিক ত্রিপুরার অন্যতম রূপকার৷ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজ্য সরকার তাঁর জন্ম দিনকে সরকারি ছুটি হিসাবে ঘোষণা করেছে এবং গড়িয়া পূজা উপলক্ষে সরকারি ছুটি এক দিনের পরিবর্তে দুইদিন করা হয়েছে৷
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উত্তরপ্রদেশের জলসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী মহেন্দ্র সিং৷ তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, তীর্থমুখ মেলায় উপস্থিত হতে পেরে তিনি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান৷ কারণ তিনি রাম এবং কৃষ্ণের ভূমি থেকে এসেছেন৷ এখানে তীর্থমুখ মেলায় এসে লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থীর সমাগম দেখে তিনি আপ্লত৷ তিনি রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনা করেন৷ এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজাতি কল্যাণ মী মেবার কুমার জমাতিয়া, পর্যটন মী প্রণজিৎ সিংহরায়, বিধায়ক বুর্বামোহন ত্রিপুরা প্রমুখ৷ স্বাগত ভাষণ দেন করবুকের মহকুমা শাসক এল ডার্লং৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন করবুক বি এ সি’র চেয়ারম্যান অসীম কুমার ত্রিপুরা৷ অনুষ্ঠানে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী জায়া নিতি দেব, উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব এন ডার্লং, অধিকর্তা তনুশ্রী দেববর্মা, গোমতী জেলার জেলাশাসক টি কে দেবনাথ প্রমুখ৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ সরকারি প্রদর্শনী মণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং রাইমা-সাইমার সঙ্গমস্থল তীর্থমুখে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *