বিদ্যাসাগর দেশের সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন : রাজ্যপাল

আগরতলা, ৯ জানুয়ারি (হি. স.) : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান গেছেন, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল রমেশ বৈস। রাজ্যপাল তথা এম বি বি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রমেশ বৈস আজ ’’ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এণ্ড হিজ কন্টেম্পোরারিজ’’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক সেমিনারের উদ্বোধন করেন৷ মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল একাডেমিক বিল্ডিং-এ অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের উদ্বোধন করে রাজ্যপাল বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর গ্রাম বাংলার এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে তিনি কলকাতায় আসেন সংস্কৃত, বাংলা, ইংরেজিতে শিক্ষা নিতে৷ তিনি আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নে এক উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন৷ রাজ্যপাল বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক৷ বিধবা বিবাহ প্রচলনে তার ভূমিকা চিরমরণীয় হয়ে থাকবে৷ বাল্য বিবাহের কুফলতা নিয়েও বিদ্যাসাগর সরব ছিলেন৷ আজ আমরা এই বিখ্যাত ব্যক্তিকে মরণ করছি সমাজের প্রতি তাঁর বলিষ্ঠ অবদানের জন্য৷

সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল আরও বলেন, প্রাচীনকালে আমাদের দেশ জ্ঞান ও বিজ্ঞানে সমগ্র বিশ্বে অগ্রনী ছিল৷ জ্ঞান বিকাশের জন্য আমাদের দেশে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় এক সময় সমগ্র বিশ্বে পরিচিত ছিল৷ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে পড়তে আসত৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আমাদের দেশের গর্ব৷ তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের দেশকে ভালবাসি, সমাজকে বিশ্বাস করি, আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও কৃষ্টির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পারি তাহলে ভারত পুনরায় জ্ঞান বিকাশে সমগ্র বিশ্বে অগ্রনী ভূমিকা নিতে সক্ষম হবে৷ তিনি বলেন, ভারতীয় সংস্কৃতিকে সমগ্র বিশ্বেই শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়৷ এই সেমিনারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও তাঁর সমসাময়িক সময় নিয়ে যে আলোচনা হবে তা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে সক্ষম হবে বলে রাজ্যপাল আশা ব্যক্ত করেন৷

মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতার আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিস এবং মৌলানা এবিলিটি কালামাজুর পৃষ্ঠপোষকতায় এই সেমিনারের আয়োজন করে৷ সেমিনারে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং ভারত সরকারের ন্যাশন্যাল মিশন ফর মেনুস্ক্রিপ্ট অব কালচার’র প্রাক্তন অধিকর্তা দিপ্তী ত্রিপাঠি বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আদর্শ-চিন্তাভাবনা আজও প্রাসঙ্গিক৷ বিদ্যাসাগর আমাদের সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন৷ সেমিনারে মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সত্যদেও পোদ্দার বলেন, সংস্কৃতিকে রক্ষা, পরাধীন ভারতের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ এবং জাতীয়তাবোধে উদ্দীপ্ত করতে বিদ্যাসাগর কঠোর পরিশ্রম করেছেন৷ সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লখনৌও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিদ্যান্ত পি জি কলেজের সংস্কৃত বিভাগের প্রধান ড. বিজয় কুমার করণ, কলকাতার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিস-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুুজিত ঘোষ, এম বি বি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. সুুমন্ত চক্রবর্তী৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সেমিনারের আহ্বায়ক ড. বিন্দু রঞ্জন চাকমা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *