দক্ষিণ শালমারা (অসম), ১০ জানুয়ারি (হি.স.) : নিম্ন অসমের দক্ষিণ শালমারা মানকাচর জেলার দক্ষিণ শালমারা থানা এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় ফের গোলাগুলি। বিএসএফ-এর গুলিতে আরও এক গরু পাচারকারীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনা শুক্রবার ভোররাতে দক্ষিণ শালমারা থানা এলাকার খারুয়াবান্ধা পুলিশ ফাঁড়ির দ্বীপচর এবং আসামের আলগা সীমান্তে সংঘটিত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ব্যক্তিকে খারুয়াবান্ধা পুলিশ ফাঁড়ির অধীনস্থ দয়ারচর গ্রামের জনৈক আলতাব আলির বছর ৩২-এর ছেলে সুরাত আলি বলে শনাক্ত করা হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি মধ্যরাতে দক্ষিণ শালমারা থানার অন্তর্গত মহামায়াচরের আন্তর্জাতিক সীমান্তগ্রামে পুলিশের গুলিত এক গরু পাচারকারী নিহত হওয়ার পাশাপাশি অন্য তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলে তাদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
খারুয়াবান্ধা ফাঁড়ির ইনচার্জ সুদীপ চৌধুরী শুক্রবার জানান দক্ষিণ শালামারা থানা এলাকার দ্বীপচর এবং আসামের আলগা নামের দুই সীমান্তে শুক্রবার ভোররাতে গরু পাচারকারীদের রুখতে গুলি চালাতে হয়েছে বিএসফকে। ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে গভীর রাতে বাংলাদেশে গরু পাচার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল দুষ্কৃতীরা। বিএসএফ তাদের রুখতে বহু কসরত করেছিল। কিন্তু বিএসএফ-এর শত বারণ সত্ত্বেও তারা সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে তক্তা দিয়ে তৈরি ঢেকির সাহায্যে গুরু পাচার শুরু করে।
টহলধারী বিএসএফ তাদের তাড়া করতে যায়। কিন্তু উল্টো ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে বিএসএফ-এর টহলদারি জওয়ানদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। তখন বিএসএফকে বাধ্য হয়ে গুলি চালাতে হয়েছে। দুই সীমান্তেই একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফ গুলি বর্ষণ করতে থাকলে বেগতিক দেখে গরুর চোরকরাবারিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে চলে যায়।
এদিকে গুলিবিদ্ধ হয় দয়ারচর গ্রামের সুরাত আলি। ডানদিকে বুকের ওপরে ক্ষত নিয়ে সে তার বাড়ি চলে আসে। কিন্তু আজ শুক্রবার সকাল প্ৰায় ৯-টা নাগাদ সুরাত তার নিজের ঘরে মৃত্যু বরণ করে। খারুয়াবান্ধা ফাঁড়ির ইনচার্জ সুদীপ চৌধুরী জানান, গোলাগুলির ঘটনা সম্পর্কে আজ সকালেই পুলিশ ফাঁড়িতে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ এজাহার দাখিল করেছেন। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করছে। অন্যদিকে সুরাত আলির মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাড়ি তাঁরা গিয়ে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ধুবড়ি সিভিল হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ অফিসার সুদীপবাবু।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত মাসে আসামের আলগা এবং দ্বীপচর বিএসএফ ক্যাম্প এলাকায়ও অনুরূপ দুই গরু পাচারকারীর মৃত্যু হয়েছিল। একইভাবে গত ৩ জানুয়ারি মধ্যরাতে দক্ষিণ শালমারার মহামায়াচর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তগ্রামে পুলিশের গুলিতে এক গরু পাচারকারীর মৃত্যুর পাশাপাশি তিনজন আহত হয়েছিল। ধুবড়ি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।