ভুল করে থাকলে বুঝিয়ে দিন, যাদবপুর প্রসঙ্গে গুণীজনের কাছে আর্জি রাজ্যপালের

কলকাতা, ৮ জানুয়ারি (হি. স.): আমি যদি ভুল করে থাকি বুঝিয়ে দিন ভুলটা। আপনাদের কাছে সবিনয়ে এই প্রার্থনা করছি। যাদবপুর প্রসঙ্গে এক কক্ষবোঝাই গুণীজনের কাছে এই মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনকর। তিনি বলেন, “শিক্ষাঙ্গণে এই জিনিস চলতে পারে না। আমি নই, তুমি নও। আমরা সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও উত্তরণের পথে নিয়ে যাব। অভীষ্ঠ লক্ষ্যে এগোতে হবে হাতে হাত মিলিয়ে।”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সংগঠনের শতবর্ষের সূচনা হিসাবে এক অনুষ্ঠানে আজ রাজ্যপাল ছিলেন প্রধান অতিথি। গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিট্যুট অফ কালচারে এই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল যাদবপুরের ব্যাপারে সবাইকে আত্মানুসন্ধানের আর্জি জানান। প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরা ছড়িয়ে পড়েছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নামী স্থানে। তাঁদের অনেকেই ছিলেন এদিনের অনুষ্ঠানে।

যাদবপুরে আদ্যাবধি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবৃতি দিয়ে আবেগমথিত কন্ঠে রাজ্যপাল প্রশ্ন করেন, “আপনারাই বলুন আমি কোথাও সীমারেখা অতিক্রম করেছি কি না।  বলেন, সিনিয়র এডভোকেট হিসাবে ৩০ বছর কাজ করেছি| বিধানসভা, লোকসভা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট-সর্বত্র নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি| কিন্তু এই রকম ভয়ের বাতাবরণের সামনে কখনও পড়িনি| এর একটা সমাধান সূত্র বার করতে হবে| প্রথম থেকে আপনারা আমার অনুপ্রেরণার অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছেন| আজ আপনারাই বলবেন, আমি ঠিক পথে হাঁটছি কি না|”

রাজ্যপাল বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধান দেখেছি| এখানে আমার ভূমিকা অতি নগন্য| রাজ্য সরকারের ভূমিকা আরও নগন্য| বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ নেবেন| কেন্দ্রীয় সহায়তার প্রয়োজন হলে আমি সর্বতোভাবে হাত বাড়িয়ে দেব| এমিনেন্স অফ ট্যাগ পেতে যা যা করতে হয় করব| কিন্তু আমি তো বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য? রোম যখন জ্বলছিল, নিরো নাকি বেহালা বাজাচ্ছিলেন| সেই পথে হাঁটতে আমি চাই না| আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি আচার্যর সঙ্গে উপাচার্যর মত বিনিময়ের মাধ্যম রাজ্য সরকারের শিক্ষাসচিব! এ কখনও হতে পারে?”

রাজ্যপাল বলেন, “আমি মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাস করি| পরস্পরের মতের মিল না হতে পারে, কিন্তু বিরোধিতার তো একটা পথ থাকবে? যেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকের দিন আমাকে পড়ুয়ারা বলল, আপনাকে আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে| আমি তো অস্বীকার করিনি! স্বাগত জানালাম| তার পরেও বৈঠকে অংশ নিতে পারিনি! বুলেটের চেয়েও সমাজের বেশি সর্বনাশ করতে পারে শিক্ষাক্ষেত্র| সেটা হতে দেওয়া যায় না|”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *