নিম্ন আদালতে ৫ জন এপিপি নিয়োগ বাতিল করল হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ জানুয়ারি৷৷ নিম্ন আদালতে ৫ জন এপিপি নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট৷ সাথে মেধা তালিকায় বাছাই হওয়া দুই জন প্রার্থীকে দুই মাসের মধ্যে এপিপি পদে নিয়োগের জন্য ত্রিপুরা সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে ত্রিপুরা সরকার, জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুন কান্তি ভৌমিক৷


২০১৮ সালের মে মাসে গোমতী জেলা শাসক নিম্ন আদালতে এপিপি নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন৷ কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় বাছাই করা প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়নি৷ এই অভিযোগ এনে ত্রিপুরা হাইকোর্টে রিট মামলা করেছিলেন দুই আইনজীবী বাপি দে এবং জয়েস দে৷ এ-বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন বলেন, মেধা তালিকার ভিত্তিতে বাছাই তালিকা তৈরি করে এপিপি নিয়োগের নিয়ম রয়েছে৷ সে মোতাবেক তাঁর মক্কেল বাপি দে এবং জয়েস দে মেধা তালিকায় ১ ও ২ নম্বরে রয়েছেন৷ তাঁর কথায়, গোমতী জেলা শাসক আইন দফতরের কাছে তাঁদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিলেন৷ কিন্তু, নিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা গেছে সমস্ত নিয়ম নীতি উলঙ্ঘন করে মেধা তালিকায় নীচের সারিতে যারা রয়েছেন তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর দাবি, ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে আইন দফতর গোমতী জেলা শাসকের সুপারিশকে অগ্রাহ্য করেছিল৷ মেধা তালিকায় বাছাই হওয়া দুই জনকে বাদ দিয়েই আইন দফতর এপিপি নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল৷


পুরুষোত্তম রায় বর্মন বলেন, এপিপি নিয়োগে ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁর মক্কেল ত্রিপুরা হাইকোর্টে রিট মামলা করেন৷ পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালতে ওই আবেদনকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে৷
ওই মামলা নিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে সওয়াল করেন, এপিপি নিয়োগে ত্রিপুরা সরকার মেধা তালিকা মানতে বাধ্য নয়৷ এক্ষেত্রে যে কাউকে ত্রিপুরা সরকার এপিপি হিসেবে নিয়োগ করতে পারে৷ কিন্তু, আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন যুক্তি তুলে ধরে বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানের ১৪ ধারায় স্বেচ্ছাচারী হওয়ার কোন সুযোগ নেই৷ এ-ক্ষেত্রে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া অবলম্বন করতেই হবে৷ নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম অগ্রাহ্য করা যাবে না৷


এদিন রায় ঘোষনার পর পুরুষোত্তম রায় বর্মন বলেন, আদালতে সরকার পক্ষের কোন বক্তব্যই টিকেনি৷ ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এ কুরেশি এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধের ডিভিশন বেঞ্চ উদয়পুর নিম্ন আদালতে ৫ জন এপিপি-র নিয়োগ বাতিল করে দেন৷ সাথে মেধা তালিকায় বাছাই দুই জন প্রার্থীকে আগামী ২ মাসের মধ্যে এপিপি পদে নিয়োগের রায় দেন৷
এ-বিষয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুন কান্তি ভৌমিক বলেন, ত্রিপুরা সরকার একটি প্যানেল গঠন করে এপিপি নিয়োগ করেছে৷ তাঁর কথায়, এপিপি পদে সমস্ত নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক হয়ে থাকে৷ সেক্ষেত্রে মেধা তালিকা মেনে নিয়োগ দিতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই৷ তাই, ত্রিপুরা সরকার হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *