তেজপুর (অসম), ২ জানুয়ারি (হি.স.) : ইংরেজি নতুন বছরের প্ৰথম দিন মধ্য অসমের শোণিতপুর জেলার তেজপুরে সংঘটিত হয়েছে এক লোমহৰ্ষক হত্যাকাণ্ড৷ ডাকাত দলের হাতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে জনৈক গৃহিণীর৷ তিনি তিন কন্যা সন্তানের মা ২৬ বছরের রূপা দেবী৷ রূপাদেবীকে মেরে ডাকাতের দল লুটে নিয়েছে নগদ দু-লক্ষাধিক টাকা ও বহু স্বর্ণালঙ্কার৷ ডাকাতির ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে বুধবার রাত প্রায় দুই-আড়াইটে নাগাদ মহাভৈরব পুলিশ ফাঁড়ির অন্তৰ্গত ভিতরপরোয়া কালীমন্দির সংলগ্ন এলাকায়৷
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, গতকাল বুধবার গভীর রাত প্রায় দুই-আড়াইটে নাগাদ ভিতরপরোয়া কালীমন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা জনৈক অজিত পণ্ডিতের ঘরে ডাকাতের দল পড়ে। ডাকাতের দলটি তাঁদের ঘরে ঢুকে গৃহকর্তা অজিত পণ্ডিতকে মারধর করে তাঁর হাত দিয়ে স্টিলের আলমিরা খুলতে বাধ্য করে। আলমিরা খুলে দিতেই লকারের ভিতর থেকে ডাকাতরা লুটে নেয় নগদ প্ৰায় দুই লক্ষ টাকা এবং বহুমূল্যের স্বর্ণালঙ্কার। তখন অজিতের পত্নী রূপাদেবী বাধা দিতে গেলে ডাকাতের দল তাঁর ওপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালায়। ডাকাতরা রূপাদেবীর গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে দেয়। ফলে ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন গৃহিণী রূপা। ডাকাতদের হামলায় তাঁর স্বামী অজিত পণ্ডিতও জখম হয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে ভোরের দিকে মহাভৈরব ফাঁড়ি থেকে পুলিশের এক দল অজিত পণ্ডিতের ঘরে পৌঁছে। প্রাথমিক তদন্ত করে নিহত রূপাদেবীর মৃতদেহ উদ্ধার করে তেজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ৷ এছাড়া আহত অজিত পাণ্ডেকেও চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অজিতের বয়ান লিপিবদ্ধ করে তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে লোমহর্ষক ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার সকালে স্হানীয় ক্ষুব্ধ মানুষজন ঘটনাস্থলের সম্মুখবর্তী তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয় সড়কে অবরোধ গড়ে প্ৰতিবাদ সাব্যস্ত করেন। তাঁদের অভিযোগ, মহাভৈরব পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জন্য এ-ধরনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ইতিপূৰ্বে এই এলাকায় বেশ কয়েকটি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হলেও মহাভৈরব ফাঁড়ির পুলিশ উদাসীনতা প্রদর্শন করে চলেছে।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে অবরোধস্হলে উপস্থিত হন তেজপুর সদর সার্কল অফিসার তথা প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ চমুয়া, শোণিতপুরের ডিএসপি ড. রশ্মিরেখা শৰ্মা৷ তিন দিনের মধ্যে ডাকাতের দলকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, পুলিশ ও সাধারণ প্ৰশাসনের আশ্বাস পেয়ে সড়ককে অবরোধমুক্ত করেন ক্ষুব্ধ জনতা।