গুয়াহাটি, ৩০ ডিসেম্বর (হি.স.) : কালচক্র অতিক্রম করে পেরিয়ে গেল আরও একটি বছর, ২০১৯। বিদায়ী এক বছরে গোটা বিশ্ব তথা ভারতে বহু ঘটনা পরিঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সে ধরনের সহস্রাধিক খবরের মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বহু খবরও সংবাদ শিরোনাম দখল করেছে। ২০১৯-এর ফ্ল্যাশব্যাকে এগুলোর কয়েকটি, যেগুলো স্মৃতিতে অমোঘ হয়ে আছে সেগুলো ক্রমান্বয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে হিন্দুস্থান সমাচার …
বিষয় : নাগরিকত্ব বিল ও আইন সম্পর্কিত_২০১৯
৪ জানুয়ারি (হি.স.) : শিলচরে ‘বিজয় সংকল্প সমাবেশ’ থেকে হিন্দু বাঙালিদের অভয়বাণী শুনিয়েছেন প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী। বলেছে, ভারতমাতার সন্তানদের রক্ষাকবচ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পাশ হবেই। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে নির্যাতিত হিন্দুদের কোলে নিতে দু হাত তুলে বসে রয়েছেন ভারত মাতা। ভারতমাতার এই আশা পূরণ করতে নিলসভাবে, নিষ্ঠা সহকারে কর্তব্য সম্পাদন করছে তাঁর সরকার।
৪ জানুয়ারি (হি.স.) : শিলচরে বিজেপি-র ‘বিজয় সংকল্প সমাবেশ’-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব সম্পর্কে অভয়বাণী শোনানোর সঙ্গে-সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বিভিন্ন দল ও সংগঠন এর বিরুদ্ধ সোচ্চার হয়ে ওঠে। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় এই বিলের বরাবরের বিরুদ্ধাচরণকারী প্রদেশ কংগ্রেস থেকে শুরু করে তীব্ৰ প্ৰতিক্ৰিয়া প্ৰকাশ করেছে সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা (আসু), রাজ্যের আঞ্চলিক দল অসম গণ পরিষদ (অগপ), কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, অজযুছাপ-সহ বহু সংগঠন।
৫ জানুয়ারি (হি.স.): নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পাশ হবেই, ৪ জানুয়ারি শিলচরে বিজেপির ‘বিজয় সংকল্প সমাবেশ’-এ প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী এই ঘোষণা করার সঙ্গে-সঙ্গে এর প্রতিবাদে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় গর্জে উঠেছে এই বিলের বিরুদ্ধাচরণকারী বিভিন্ন দল ও সংগঠনের পাশাপাশি সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা (আসু) এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যৌথ ছাত্র সংগঠন উত্তরপূর্ব স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো)-সহ ৩০টি সংগঠন। নেসো ধারা আন্দোলন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সে অনুসারে আগামী ৭ জানুয়ারি রাজ্যজুড়ে কালো দিবস পালন করার ডাক দিয়েছে আসু। এর পরের দিন ৮ জানুয়ারি শুক্রবার ভোর ৫:০০ থেকে বিকেল ৪:০০টা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টার অসম তথা উত্তরপূর্ব বনধ-এর ডাক দিয়েছিল নেসো-সহ ৩০টি সংগঠন।
৫ জানুয়ারি (হি.স.) : অসমিয়া ভাষা-সংস্কৃতি বিপন্ন হতে দেওয়া হবে না। জাতি-মাটি ভিটে রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবেন। অসমের জনসাধারণের শঙ্কিত হওয়ার কোনও অবকাশ নেই। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সম্পর্কে এভাবেই সব শঙ্কা দূর করেছেন মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল। এদিন শোণিতপুর জেলার ঢেকিয়াজুলিতে আয়োজিত এক জনসমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি।
৬ জানুয়ারি (হি.স.) : অসম চুক্তির ৬ নম্বর দফা কাৰ্যকর করতে উচ্চস্তরের কমিটি গঠন করে রাজ্যের দীর্ঘদিনের জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিবাচক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই কমিটি খিলঞ্জিয়া সংজ্ঞা নিরুপণ এবং এই দফার ভিত্তিতে অসমিয়া খিলঞ্জিয়াদের সাংবিধানিক, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক এবং ভাষিক সুরক্ষা প্রদানের বিষয় খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দাখিল করবে সরকারকে।
৭ জানুয়ারি (হি.স.) : সংসদে পেশ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এদিন নির্দিষ্ট সময় যৌথ সংসদীয় কমিটি তাঁদের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
৭ জানুয়ারি (হি.স.) : অসমে বিজেপি-জোট ভঙ্গ করেছে অসম গণ পরিষদ (অগপ)। নয়াদিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি-র অন্যতম শরিক অগপ রাজ্য সরকারের সঙ্গে মিত্রতা ছিন্ন করেছে বলে ঘোষণা করেছিলেন আঞ্চলিক দলটির সভাপতি অতুল বরা। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ আইনে পরিণত হবে নিশ্চিত হয়েই দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে ফের তাঁরা জোটের শরিক হয়েছেন।
৭ জানুয়ারি (হি.স.) : সংসদ পেশ হয়ে গেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০০৬। এদিকে সংসদে যখন এই বিল পেশ হচ্ছে তখন সংসদ ভবনের কাছে অসমের বামপন্থী অখিল গগৈ নেতৃত্বাধীন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি-সহ কথিত ৭০টি সংগঠনের সদস্যরা এর প্রতিবাদে নগ্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।
৭ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে হাইলাকান্দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল দাহ-সহ অর্ধনগ্ন হয়ে প্রতিবাদ জানালেন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির অর্ধনগ্ন সদস্যরা।
৮ জানুয়ারি (হি.স.) : লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৬। ৯ জানুয়ারি রাজ্যসভায় উত্থাপন করা হবে বহুচর্চিত এই বিল।
৮ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এবং অসমের ছয় জনগোষ্ঠীকে জনজাতির স্বীকৃতি সংক্রান্ত বিল পাশ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এবং অর্থ-স্বাস্থ্য পূর্তমন্ত্রী তথা নেডা-র আহ্বায়ক ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
৯ জানুয়ারি (হি.স.) : কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতৃত্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-এর বিরুদ্ধে দিশপুরে জনতা ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ-সহ কথিত ৭০টি সংগঠন। বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীরা ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর করে। রাস্তার পাশে সাঁটা ডাস্টবিন তুলে আছড়ে ভেঙে ফেলা হয়। তখন বিক্ষুব্ধদের বাধা দিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বেশ ঠেলাধাক্কা হয়েছে কৃষক মুক্তি সংগ্রিম সমিতি, জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ-সহ অন্য সংগঠনের নেতা-কর্মীর সঙ্গে। এতে পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় দুই থেকে আড়াইশো বিক্ষোভকারীকে আটক করে দিশপুর পুলিশ।
৮ জানুয়ারি (হি.স.) : সিএবি বা ক্যাব পাশ হলে অসম জ্বলবে। লোকসভায় বলেছেন এআইইউডিএফ-সুপ্রিমো বদরউদ্দিন আজমল।
৮ জানুয়ারি (হি.স.) : লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গোলাঘাটে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর এদিন সংসদীয় পরিক্রিমা, পরিবহণ এবং শিল্পমন্ত্রী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারির কুশপুতুল পুড়িয়েছে অসমিয়া যুব মঞ্চ নামের সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা।
৯ জানুয়ারি (হি.স.) : কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি-র নেতৃত্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-এর বিরুদ্ধে এবং শীঘ্র তা বাতিলের দাবিতে দিশপুরে জনতা ভবনের সামনে জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ-সহ কথিত ৭০টি সংগঠনের বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীরা ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর করে। রাস্তার পাশে সাঁটা ডাস্টবিন তুলে আছড়ে ভেঙে ফেলা হয়। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে।
৯ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্যে ব্যাপক প্রতিবাদ হচ্ছে। উজান থেকে নিম্ন, অসমের সর্বত্র বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে সাধারণ জনতার পাশাপাশি শিল্পী, আইনজীবী এবং ছাত্র সমাজও। গুয়াহাটির কটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিব্রগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাৰ্থীরা ক্লাস বয়কট করে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করছেন। কটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিৰ্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বৰ্জনের ডাক দেওয়া হয়।
৯ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাতিল করার দাবিতে নুমলিগড়ে ঐক্য সেনা অসমের কর্মকর্তারা অৰ্ধনগ্ন হয়ে বিলের বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ করে তা প্রত্যাহার করার দাবি তুলেছেন। বিলটি বাতিল না করলে তারা আলফা (স্বাধীনে) যোগদান করবে বলেো হুংকার দিয়েছে।
নগাঁও জেলার সামাগুড়িতে বিজেপি বিধায়ক মৃণাল শইকিয়ার কুশপুতল দাহ করেছেন আসু কৰ্মীরা। ডিগবয়ে অসম জাতীয়তাবাদী যুবছাত্র পরিষদের তিনসুকিয়া জেলা সমিতি, ধিঙে কংগ্ৰেস, বাইহাটা চারিআলির পূর্ব কামরূপ কলেজের ছাত্ৰছাত্ৰীরাদের ক্লাস বৰ্জন করে বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে। শিবসাগরে বিজেপি কাৰ্যালয়ে পচা ডিম ছুঁড়েছে বীর লাচিত সেনা নামের এক সংগঠনের কর্মীরা। কাছাড়ের সোনাইয়ে অগপ-সহ কয়েকটি সংগঠন, যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্ৰছাত্ৰী, দুলিয়াজানেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে জোরদার বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে।
১০ জানুয়ারি (হি.স.) : দক্ষিণ কামরূপে কতিপয় উন্মত্ত যুবক বিজেপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে। এছাড়া কার্যালয়ে সাঁটা দলীয় ব্যানার, পোস্টার, শীর্ষ নেতাদের ফটো ছিড়ে পা দিয়ে কষাঘাত করে অগ্নিসংযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি যাবতীয় আসবাবপত্র ভেঙে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে।
১০ জানুয়ারি (হি.স.) : গুয়াহাটি মহানগরে সিআরপিসি-র ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। এই ধারা কঠোরভাবে বলবৎ করা হয়েছে দিশপুর, ভাঙাগড়, বশিষ্ঠ, হাতিগাঁও থানা এলাকায়। এছাড়া সোনাপুর এবং ক্ষেত্ৰি থানা এলাকায়ও ১৪৪ ধারা জারি ছিল।
১০ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-এর বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে যখন প্ৰতিবাদের ঢেউ উঠেছে, তখন বিজেপির-র মাজবাট মণ্ডল যুবমোৰ্চার সভাপতি কিশোর শৰ্মাকে সোশাল মিডিয়ায় প্ৰাণে মারার হুমকি দিয়েছে সঞ্জয় খরেল নামের এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক।
১০ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে অহেতুক প্ৰতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। অসমের খিলঞ্জিয়া (ভূমিপুত্র) নাগরিকদের সুরক্ষা দিতেই তিনি এবং তাঁর সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।
১২ জানুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সরকারি কার্যালয় চত্বরে ওড়ানো হল কালো পতাকা। ঘটনা ডিব্রুগড় জেলার মরান এবং মাহমরায় ঘটেছে।
১৫ জানুয়ারি (মণিপুর) (হি.স.) : বহুচর্চিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ বাতিলের দাবিকে কেন্দ্র করে ধু্ন্দুমার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে মণিপুরের রাজধানী ইমফলে। বিলের প্ৰতিবাদ করতে গিয়ে সশস্ত্র পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয় বিক্ষুব্ধকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্ৰণ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে।
১৭ জানুয়ারি (হি.স.) : বিজেপি-র প্রদেশ সভাপতি রঞ্জিতকুমার দাসকে কালো পতাকা প্ৰদৰ্শন করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি এবং ছাত্র মুক্তি সংগ্ৰাম সমিতির নেতা-কৰ্মীদের। ঘটনা নিম্ন অসমের গোয়ালপাড়ার বালিজানায় সংঘটিত হয়েছিল।
১৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : প্রচণ্ড হইহট্টগোল এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির ফলে বহুচর্চিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এদিন রাজ্যসভায় পেশ না হওয়ার ঘটনাকে ‘অসমবাসীর পরাজয়’ বলে মনে মন্তব্য করেন রাজ্যের অর্থ, স্বাস্থ্য ও পূর্তমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
১৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : রাজ্যসভায় বহুচর্চিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ না হওয়ায় বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন রাজ্যের বিল-বিরোধী সংগঠন ও বিভিন্ন ব্যক্তি। কেউ এর জন্য অসমবাসীর জয় বলে আখ্যা দিচ্ছেন, তো কেউ একে বিজেপি বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরাজয় বলছেন। আবার কেউ একধাপ এগিয়ে বলছেন বিল উত্থাপন না করে কাপুরুষতার পরিচয় দিয়েছেন মোদী।
১৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ পেশ না হওয়ায় এর কৃতিত্ব কাউকে দিতে চাইছেন না হোজাইয়ের বিধায়ক বিজেপির শিলাদিত্য দেব। একে নিয়ে অনেকে জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করছেন। এখানে জয় পরাজয়ের কী আছে? বিলতো একদিন পাশ হবেই। আগামী নির্বাচনের পর বিজেপিই ক্ষমতায় আসছে। তখন দেখা যাবে কে আটকায় এই বিল। বলেছিলেন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব।
৬ মে (হি.স.) : জাতীয় নাগরিকপঞ্জির নামে ধৰ্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘু প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিকদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছে সারা বিটিসি বাঙালি যুব-ছাত্ৰ ফেডারেশন। বোড়োল্যান্ড টেরিটরিয়াল কাউন্সিল-এর অন্তর্গত টংলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলেছেন ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা শ্যামল সরকার।
১৩ জুন (হি.স.) : দিশপুর এনআরসি সেবাকেন্দ্ৰে ঘুষের টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে দুৰ্নীতি দমন শাখার হাতে পাকড়াও হয়েছেন দুই পদস্থ কর্মচারী যথাক্ৰমে ফিল্ড অফিসার সৈয়দ শাহজাহান (৪৮) এবং সহকারী স্থানীয় রেজিস্ট্রার রাহুল পরাশর (২৭)।
২৬ জুন (হি.স.) : এনআরসি-র সম্পূর্ণ তালিকার আগে এদিন প্ৰকাশ করা হয়েছে এনআরসি-র অতিরিক্ত খসড়া। এদিন প্ৰকাশিত এনআরসি-র অতিরিক্ত খসড়ার তালিকায় ১ লক্ষ ২ হাজার ৪৬২ জন নাগরিকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তালিকায় ‘ডি’ (ডাউটফুল) ভোটার, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিদেশি ঘোষিত এবং বিদেশি ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন (মামলা চলছে এমন) নাগরিকদের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
১৯ আগস্ট (হি.স.) : বিদেশি বিতাড়নের জন্য অসমে যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নবায়ন প্রক্রিয়া চলছে তাকে ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করে ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। তাই ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা এর বিরুদ্ধে এদিন গুয়াহাটিতে এক বিক্ষোভ-মিছিল বের করেন।
২২ আগস্ট (হি.স.) : ত্রুটিহীন এনআরসি নবায়নের দাবিতে গুয়াহাটির রাজপথে লোকজাগরণ মঞ্চের শতাধিক সদস্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছন।
৩০ আগস্ট (হি.স.) : এনআরসি-কে কেন্দ্র করে যে-কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাইলাকান্দিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করেছে হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসন। এনআরসি নিয়ে আতংকের কিছু নেই বলে অভয়বাণী শুনিয়েছেন হাইলাকান্দির জেলাশাসক কীর্তি জল্লি।
৩১ আগস্ট (হি.স.) : যাবতীয় উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত সংযোজিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র চূড়ান্ত তালিকা। পূর্ব নির্ধারিত সময় এদিন সকাল দশটায় এই তালিকা প্রকাশ করেছেন রাজ্য এনআরসি কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে এনআরসি-র প্রথম খসড়া থেকে ৪০,০৭,৭০৭ জনের নাম বাদ পড়েছিল। পরবর্তীতে চূড়ান্ত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে প্রামাণিক ওজর-আপত্তি ফর্মে তথ্য-সহ আবেদন জানিয়েছিলেন ৩৬,২৬,৬৩০ জন। এ-থেকে ১৯ লক্ষ ৬,৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়েছে সংযোজিত চূড়ান্ত তালিকা থেকে। তবে যাদের নাম পড়েছে, তাঁরা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে প্রামাণিক তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদেশি ট্রাইবুনালে প্রদর্শন করে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রতিষ্ঠিত করার নিদান দিয়েছিলেন এনআরসি-র সংযোজক প্রতীক হাজেলা।
৩১ আগস্ট (হি.স.) : বহু প্রতীক্ষিত সংযোজিত জাতীয় এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় নাম নেই ভারতের প্ৰাক্তন পঞ্চম রাষ্ট্ৰপতি প্রয়াত ফখরউদ্দিন আলি আহমেদের ভ্রাতুষ্পুত্র জিয়াউদ্দিন আহমেদ, কাছাড় জেলার অন্তর্গত কাটিগড়ার দুবারের বিধায়ক (প্রাক্তন) আতাউর রহমান মাঝারভুইয়াঁর। এছাড়া এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে দক্ষিণ অভয়াপুরির এআইইউডিএফ বিধায়ক অনন্তকুমার মালো, দলগাঁওয়ের কংগ্ৰেসি বিধায়ক ইলিয়াস আলির মেয়ে, কারগিল যুদ্ধের অন্যতম প্রথমসারির সেনানি, রাষ্ট্ৰপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মহম্মদ সানা উল্লাহ, তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে, এবং আরেক প্রাক্তন সেনাকর্মীর নাম। তিনি করিমগঞ্জ শহরের নেতাজিপল্লির বাসিন্দা বিমল চৌধুরী।
৩১ আগস্ট (হি.স.) : এদিন প্রকাশিত এনআরসি-র তালিকা দেখে ‘আশাহত’ অসমের প্রভাবশালী মন্ত্রী তথা নেডা-র আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মার ঘোষণা, ‘ফাইনাল জাতীয় দলিল’ তৈরি করবে বিজেপি সরকার। এ ধরনের ভেজাল একটি তালিকা যে এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা প্রকাশ করবেন তা আগেই জানতেন, যেদিন প্রথম খসড়া প্রকাশিত হয়েছিল।
১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ভারত সরকারের প্রায় ১,৬০০ কোটি টাকা খরচ করে এনআরসি-র নামে এক বিরাট অশ্বডিম্ব উপহার দিয়েছেন প্রতীক হাজেলা। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেছে বেছে হিন্দু বাঙালিদের নাম কর্তন করা হয়েছে করিমগঞ্জ জেলায়। তবে এনআরসি-ছুটদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের দায়িত্ব বিজেপি-র, দাবি করিমগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক মিশনরঞ্জন দাসের।
৭ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : জাল নথিপত্র জমা দিয়ে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় নাম অন্তৰ্ভুক্ত করিয়ে জাগিরোড পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন জনৈক মিরাজ আলি। মিরাজের মা বানেসা খাতুনকে অবশ্য আগেই গ্ৰেফতার করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল।
৯ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরকে ভিত্তিবর্ষ করে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করবে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এ দিন খুব দূরে নয়। গুয়াহাটির পাঞ্জাবাড়িতে শ্ৰীমন্ত শংকরদেব কলাক্ষেত্ৰ মিলনায়তনে নেডা-র চতুর্থ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
১০ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : অসংখ্য প্ৰকৃত ভারতীয় হিন্দু নাগরিকদের নাম এনআরসি-র চুড়ান্ত তালিকায় প্ৰকাশিত না হওয়ায় সোচ্চার বাঙালি জনগোষ্ঠীয় সংগঠন৷ দাবি উঠেছে, এনআরসি নবায়নের নামে প্ৰতীক হাজেলা কোটি কোটি টাকা কোথায় খরচ করেছেন তার সিবিআই তদন্ত৷ বিটিএডি-র অন্তর্ভুক্ত ওদালগুড়ি জেলার ডিমাকুচিতে সারা বিটিসি তফশিলি জাতি ছাত্ৰ সংস্থা এবং বাঙালি টাইগার ফোর্স-এর উদ্যোগে আয়োজিত যৌথ সভায় এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়ক প্ৰতীক হাজেলার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেন ছাত্ৰ সংগঠনের নেতেরা৷
১৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : প্রকাশ করা হয়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র চূড়ান্ত তালিকা। সর্বোচ্চ আদালতের তত্ত্বাবধানে এনআরসি নবায়ন প্ৰক্ৰিয়া শেষে ৩১ আগস্ট (২০১৯) প্ৰকাশিত পরিপূরক চূড়ান্ত তালিকায় যে ৩,১১,২১,০০৪ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তাঁদেরই বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া বাদ পড়েছে ১৯,০৬,৬৫৭ জনের নাম। বলা হচ্ছে, তাঁদের অনেকে দাবি ও আপত্তি দাখিল করেননি। স্বাভাবিকভাবে তাঁদের নাম আজ প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে বাতিল করা হয়েছে।
২১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : কোনও গোর্খা জনগোষ্ঠীয় মানুষের নাম জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এনআরসি থেকে কর্তন করা চলবে না। প্রত্যেক গোর্খার নাম বিনাশর্তে এনআরসি-তে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে এদিন বিশ্বনাথের জেলাশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে উত্তাল বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে।
২৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : এনআরসিতে গণহারে হিন্দুদের নাম বাদ পড়ায় সরকারের বিরূদ্ধে গর্জে উঠল সংঘ পরিবার। নাগরিকপঞ্জিতে যাতে একজন হিন্দুর নাম বাদ না পড়ে সেই দাবিতে এদিন ‘নর্থ-ইস্ট লিঙ্গুইস্টিক অ্যান্ড এথনিক কো-অর্ডিন্যাশন কমিটি’ (নেলেক)-এর নেতৃত্বে রাজ্যের প্রতিটি জেলা সদরে ধরনা কর্মসূচি পালন করেছে সংঘ পরিবারের বিভিন্ন শাখা সংগঠন।
১৮ অক্টোবর (হি.স.) : অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির রাজ্য সমন্বয়ক আইএএস আধিকারিক প্রতীক হাজেলাকে বদলির নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন বিচারপতি এসএ ববড়ে, রোহিনটন নরিম্যানকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়ক হাজেলাকে ‘ইন্টার-ক্যাডার’ বদলি করে আগামী সাতদিনের মধ্যে অসম থেকে তাঁর গৃহরাজ্য মধ্যপ্রদেশে প্রতীক হাজেলাকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
১২ নভেম্বর (হি.স.) : অসম ছাড়লেন এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়ক প্ৰতীক হাজেলা।
১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : ডিব্রুগড়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তেলির বাড়িতে হামলা করেছে ক্যাব-বিরোধীরা।
১২ ডিসেম্বর (হি.স.) : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল-এর বিরুদ্ধে উত্তাল আন্দোলন প্রতিহত করতে ব্যর্থতার দায়ে বদলি করা হয়েছে গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার দীপক কুমারকে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে দুঁদে আইপিএস আধিকারিক মুন্না প্রসাদ গুপ্তাকে। এছাড়া অগ্নিগর্ভ অসমকে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়ে আসা হয়েছে জিপি সিংকে। এদিকে আরও চার ডিসিপি এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপারকেও বদলি করেছে রাজ্য প্রশাসন।
১২ ডিসেম্বর (হি.স.) : চাবুয়ার বিধায়ক বিনোদ হাজরিকার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল (ক্যাব)-এর বিরোধীরা। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাংক, সরকারি দফতর। এছাড়া বিহালিতে মন্ত্ৰী রঞ্জিত দত্তের বাড়ির সামনে উত্তাল বিক্ষোভ প্রদর্শন করার পাশাপশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যাব-এর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন মন্ত্ৰী ও বিধায়কের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন আন্দোলনকারীরা।
১৯ ডিসেম্বর (হি.স.) : এদিন সন্ধ্যা ৫.০০ (পাঁচ)-টা থেকে অসমে মোবাইল ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করার নির্দেশ গুয়াহাটি উচ্চ আদালতের।
১৯ ডিসেম্বর (হি.স.) : সকাল নয়টায় চালু করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
২০ ডিসেম্বর( হি.স.) : অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল বলেছেন, জাতির সঙ্গে কখনও প্রতারণা করতে পারেন না। কেননা, তিনিও এই সমাজের, অসমিয়া। স্বজাতির সঙ্গে প্রতারণা করা মানে পাপের বোঝা বহন করা, তাই জাতির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবনায় আনতে পারেন না। বরং জাতি তথা অসমিয়াদের সুরক্ষিত রাখতে, জাতি-মাটি-ভিটের অধিকার রক্ষায় তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর। এদিন সকালে গুয়াহাটিতে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে চলমান গণ-আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের অবস্থানের তথ্য দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

