লখনউ, ২৫ ডিসেম্বর (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক বিক্ষোভের নিন্দায় মুখর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হিংসাত্মক আন্দোলন যারা চালিয়েছে তারা নিজেদের জিজ্ঞাসা করুন এই পথ কি সঠিক বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে সার্বজনীন পরিষেবা পাওয়ার। কিন্তু সেইগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করাটা একান্ত প্রয়োজন। আগামী প্রজন্ম বর্তমান সময়কে দুইটি বিষয় নিয়ে মূল্যয়ন করবে। প্রথমত পারম্পরিক সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য কি করা হয়েছিল। আর দ্বিতীয় রাষ্ট্রের বিকাশের জন্য নিজেদের অঙ্গীকার কতটা মজবুত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ৩৭০ ধারা মতো কঠিন অসুক যে দশকের পর দশক ধরে চলে আসছিল, তার সমাধান করা গিয়েছে। রামজন্মভূমির মতো বহু পুরনো মামলারও শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান হয়েছে। দেশের স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত পাকিস্তানে ধর্মীয় কারণে শোষিত হয়ে যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই ২০২০ সালে প্রবেশ করবে ভারতবাসী। এখনও যেসব দীর্ঘদিনের ঝুলে থাকা সমস্যা রয়েছে সেইগুলি সমাধানের জন্য কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৪ সালের আগে অর্ধেক ভারতবাসীর কাছে শৌচালয় ছিল না। এখন তা অর্ধেকের বেশি ভারতীয়ের কাছে শৌচালয় রয়েছে। এখন প্রতিটি পরিবারের কাছে গ্যাসের সংযোগ ও বিদ্যুত রয়েছে। বুধবার উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের সিজি সিটিতে অটলবিহারী বাজপেয়ী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই উপলক্ষ্যে নিজের বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটলজির স্মরণে উৎসর্গকৃত অটল মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস সেই লখনউ শহরে হল, যেখানকার দীর্ঘ সময়ের সাংসদ ছিলেন তিনি। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় সম্পর্কিত এই প্রতিষ্ঠানে শিলান্যাস করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অটলজি বলতেন জীবনকে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখাটা উচিত নয়। জীবনকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে দেখা আবশ্যক। এই কথাটা সরকার এবং সুশাসনের জন্য সত্য। সুশাসন ততক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব নয়, যতক্ষণ না পর্যন্ত সমস্যাগুলি পুরোপুরি খতিয়ে দেখা হয়। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার পূর্ণাঙ্গের ভাবনা নিয়ে চলেছে। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সেই ভাবনার প্রতীক। পারম্পরিক ভাবে সেই লখনউয়ের সাংসদ হিসেবে সেই কাজ করে চলেছেন রাজনাথ সিং। অটলবিহারী বাজপেয়ী সঙ্গ পেয়ে নিজেকে ধন্য বলে মনে করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
এদিন যোগী আদিত্যনাথ বলেন, অটলবিহারী বাজপেয়ীর কর্মভূমি ছিল উত্তরপ্রদেশ। এখনে তাঁর ব্রোঞ্জের মূর্তি তাঁর আদর্শ ও মূল্যবোধকে স্মরণীয় করে থাকবে। বলরামপুরের পরে উত্তর লখনউ থেকে পাঁচবার সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলার মধ্যে ১৫টি জেলায় মেডিক্যাল কলেজ ছিল। এখন ৪৫টি জেলায় মেডিক্যাল কলেজের কাজ চলছে।
এর আগে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর পূর্ণাবয়ব মূর্তির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লখনউয়ের লোক ভবনের সামনে এই মূর্তি বসানো হয়েছে। ভারতরত্ন তথা প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর এই সুদৃশ্য ব্রোঞ্জ পূর্ণাবয়ব মূর্তিটি রাজস্থানের জয়পুরে তৈরি করা হয়েছে। খরচ হয়েছে ৮৯.৬০ লক্ষ টাকা। প্রায় এক বছর ধরে সুবিশাল মূর্তিটি গড়ে তোলা হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, দীর্ঘ সময় ধরে লখনউ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন অটলবিহারী। এদিন ছিল তাঁর ৯৫ তম জন্মজয়ন্তী।