ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর (হি.স.) : ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। রাজধানী দিল্লিতেও ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। এরই মধ্যে নয়াদিল্লিতে সঙ্গে ‘জয়েন্ট রিভার কমিশন’ বাতিল করল ঢাকা। বুধবার থেকেই দিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দু’দিনের বৈঠক শুরুর কথা ছিল। ওয়াকিবাহল মহলের মতে বৈঠক বাতিল করার মধ্যে দিয়ে ভারতকে কূটনৈতিক বার্তা দিল বাংলাদেশ।
ভারত ও বাংলাদেশ এই দু’দেশের মধ্যে প্রতিবছরই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এবারে ছ’টি নদীর জলবণ্টন চুক্তি-সহ নদীগুলির তথ্য আদান-প্রদান নিয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রতিনিধিদলকে ভারত সফরের অনুমতি দেয়নি ঢাকা। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত অনুমতি না মেলায় গতকালই স্পষ্ট হয়ে যায় যে বৈঠকটি আর হচ্ছে না। এই বৈঠকে মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরি, ও দুধকুমার, এই ছ’টি নদীর বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের কথা ছিল। জেআরসি’র প্রস্তাবিত বৈঠকের প্রথম দিনে যৌথ কমিটির ও দ্বিতীয় দিন কারিগরি কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। দ্রুত ওই ছ’টি নদীর রূপরেখা চুক্তি চূড়ান্ত করতে তথ্যগুলি বিনিময়ের পরিকল্পনা রয়েছে।
গত আগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জলসম্পদ সচিবদের বৈঠকে তিস্তা ও ফেনীর পাশাপাশি ওই ছয়টি নদীর তথ্য আদান-প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ ও ভারত ১৯৮৫ সালে প্রথমবার মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরি ও দুধকুমার এই ছ’টি নদীর প্রবাহ একে অন্যের সঙ্গে বিনিময় করেছিল। তখন থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ছ’টি নদীর জল ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়ে আজও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তারা। উল্লেখ্য, এর আগে ভারত সফর বাতিল করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী। যদিও দু’জনের কেউই সফর বাতিল করার কারণ নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি, বিশ্লেষকদের মতে নাগরিকপঞ্জি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদেই এই পদক্ষেপ করেছে বাংলাদেশ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।