আগরতলায় ১০০ ছুঁয়েছে পেঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ নভেম্বর৷৷ পেঁয়াজ ১০০ ছুঁয়েছে৷ ঝাঁজ এতটাই সাংঘাতিক হচ্ছে যে চোখের জল সামলানো দায় হয়েছে৷ শুক্রবার আগরতলায় সব বাজারেই পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে৷ হটাৎ মূল্য এত কেন বেড়ে গেল তার কোন কারণ সঠিকভাবে জানাচ্ছেন কেউ৷ ব্যবসায়ীদের দাবি, উৎসে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্যই এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে৷ অথচ, চাষিরা পেঁয়াজ বিক্রি করে ৮ টাকা থেকে সবর্োচ্চ ১২ টাকা কেজি প্রতি দর পাচ্ছেন৷


লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম৷ আগরতলায় মাহারাজগঞ্জ বাজার, মঠ চৌমুহনী বাজার, বটতলা বাজারে পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে৷ গুনমানে সামান্য খারাপ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকা কেজি দরে৷ গতকালও পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে৷ কিন্তু আজ সকালে বাজারে গিয়ে ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন৷


পেঁয়াজের যোগান কম, এই অজুহাতে দাম ধেই ধেই করে বাড়ছে৷ ব্যবসায়ীদের আরও দাবি, উৎসেই পেঁয়াজের অগ্ণিমূল্য, তাহলে আমি জনতাকে ছেকা খেতেই হবে৷ অবাক করার বিষয় হল, ত্রিপুরা সরকার উৎসে পেঁয়াজের মূল্য কত পড়ছে তা জানাচ্ছে না৷ যোগান কম, তাই দাম বাড়বে তাতে কারোর আপত্তি থাকার কথা নয়৷ কিন্তু, চাষিরা যে দামে বিক্রি করছেন এবং বিভিন্ন হাত ঘুরে মানুষের কাছে পেঁয়াজ পৌছাচ্ছে তার হিসাব থাকা জরুরি বলেই মনে হচ্ছে৷


সম্প্রতি বাজারগুলিতে নজরদারি চালানো হয়েছিল৷ কিন্তু, পেঁয়াজের বেআইনি মজুতদার কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে প্রশাসন তা জানায়নি৷ খাদ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বাজার ঘুরে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন৷ কিন্তু, আম জনতার কোন উপকার হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না৷ পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ন্যায্য মূল্যের দোকানে পেঁয়াজ সরবরাহ করা হচ্ছে৷ রাজ্যেও প্রয়োজনে সরকারি ন্যায্য মূল্যের দোকানের মাধ্যমে পেঁয়াজ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছিলেন খাদ্য মন্ত্রী৷ কিন্তু, সেই ঘোষণা কার্যত হিমঘরে ঠাঁই পেয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷


সম্প্রতি জনৈক কংগ্রেস নেতা মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষির ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন৷ তাতে ওই চাষি সাফ জানিয়েছেন, কেজি প্রতি পেঁয়াজ তিনি ৮ টাকা দরে বিক্রি করেছেন৷ ফলে, পেঁয়াজের এত মুনাফা কার পকেটে যাচ্ছে সেই প্রশ্ণ উঠা অস্বাভাবিক নয়৷


প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক দুযর্োগের কারণে এই বছর পেঁয়াজের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে৷ যোগান কমে চাহিদা বেড়ে গেলে সমস্যা তৈরি হয়৷ এর উপর বেড়েছে পরিবহণ খরচ৷ স্বভাবতই দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছে বিক্রেতারা৷ এই দাবি করেছে মহারাজগঞ্জ বাজারের আলু , পেঁয়াজ , রসুন ব্যবসায়ীদের উপদেষ্টা কমিটি৷ অবশ্য, আগরতলা পর্যন্ত পেঁয়াজ আনতে রেলের ১০টি বগি বরাদ্দ করার দাবি জানিয়েছে কমিটি৷ কমিটির দাবি, রেলে পণ্য আনলে পরিবহন খরচ অনেকটাই কমবে৷ তাতে পেঁয়াজের দামেও তার প্রভাব দেখা যাবে৷ কিন্তু শুধুই পরিবহন খরচ পেঁয়াজের অগ্ণিমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে, এই তত্ব বিশ্বাসযোগ্য বলে মানতে চাইছেন না আম জনতা৷ ফলে, ত্রিপুরা সরকারকেই পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিকল্প চিন্তা করতে হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *