নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ নভেম্বর৷৷ ঋণের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে দুই সন্তানকে প্রাণে মেরে গলায় ফাঁস জড়িয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী ও স্ত্রী৷ শনিবার সাতসকালে পশ্চিম জেলার সিধাই থানাধীন সোনাইয়ের সন্ন্যাসীমুড়া গ্রামে একই পরিবারের চারজনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/07/crime-scene-tape-1024x576.jpg)
মোহনপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রঙ্গদুলাল দেববর্মা জানিয়েছেন, বিশাল তাঁতি (৯), রূপালি তাঁতি (৭), পরেশ তাঁতি (৩২) এবং সন্ধ্যা তাঁতি (২৮)-র মৃতদেহ আজ সকালে উদ্ধার হয়েছে৷ এ-বিষয়ে তিনি বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, আজ সকাল সাতটা নাগাদ সন্ন্যাসীমুড়া গ্রামে প্রথমে দুই বাচ্চার মৃতদেহ উদ্ধার হয়৷ বাচ্চা দুটির দিদা ঘরের দরজা খুলছে না দেখে জানালা দিয়ে ডাকাডাকি করেন৷ কিন্তু তাতেও কোনও সাড়া না পেয়ে তিনি জানালা দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখেন তাঁর দুই নাতি-নাতনির দেহ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে এবং তারা নড়চড় করছে৷ সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাদের বাবা-মায়ের খোঁজ করেন৷
খুঁঝতে খুঁজতে পাশের জঙ্গলে গিয়ে একটি গাছে গলায় ফাঁস জড়িয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান৷
রঙ্গদুলালবাবু জানিয়েছেন, বাচ্চাদের কাছে বিষ জাতীয় দ্রব্যের গন্ধ পেয়েছেন তাদের দিদা৷ ফলে ধারণা করা হচ্ছে, বাচ্চাদের বিষ খাইয়ে স্বামী-স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন৷ তিনি জানান, মৃতের পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছুদিন যাবৎ পরেশ তাঁতি দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন৷ কারণ, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না তিনি৷ মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কথায়, পেশায় দিনমজুর স্বামী-স্ত্রীর পক্ষে ঋণের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে দাবি পরিবারের অন্য সদস্যদের৷
তিনি জানান, খবর পেয়ে সিধাই থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷ বিকেলেই ওই চারটি মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷
প্রসঙ্গত, ঋণের জ্বালায় এভাবে একটি পরিবার শেষ হয়ে গেল, স্থানীয় জনগণ ওই ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন৷ বিশেষ করে, দু-দুটি ফুটফুটে বাচ্চার অকাল পরিণতি প্রতিবেশীরা কিছুতেই মানতে পারছেন না৷ গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷