কৃষকদের আন্দোলনে উত্তপ্ত রুদিজলা, দিনভর অবরোধে যাত্রী দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ নভেম্বর৷৷ জোট জমানাতে কৃষকরা আন্দোলনের পথে গিয়েছিলেন রুজিরুটির তাগিদে৷ রাম জমানায় আবার সেই রুজিরুটিতে টান পড়ল বলে অভিযোগ৷ গত কদিন ধরেই কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল৷ বিক্ষিপ্ত ভাবে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল৷ কিন্তু, শনিবার হাজার হাজার কৃষক, মৎস্যজীবী মেলাঘরে সড়ক অবরোধে সামিল হন৷ অতীতের স্মৃতি স্মরণ করে আরক্ষা প্রশাসনের তরফ থেকে এদিন মেলাঘর থানা ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে৷ দিনভর টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে মেলাঘর থানা সংলগ্ণ এলাকায়৷ কৃষকদের দাবী রুদিজলায় জলস্তর কমাতে হবে৷ তা না হলে চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না৷

প্রশাসনের তরফ থেকে এই ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় এদিন পথ অবরোধে বসেন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ৷
সংবাদে প্রকাশ, রুদিজলার আশেপাশের প্রায় চার হাজার পরিবারের বসবাস৷ নীরমহল পর্যটনকে আরও বেশী আকর্ষণীয় করারজন্য রামসা প্রকল্পের আওতায় আনা হয় রুদিজলাকে৷ ৬০০.২০ একর রামসা এলাকার অধীন হলেও তার বাইরে রয়েছে আরও প্রায় ১২০০ একর জমি৷ ওই জমিতে চাষাবাদ করে জীবনযাপন করেন চার হাজারের বেশী পরিবারের লোকজন৷ রামসা প্রকল্পের গাইডলাইন অনুযায়ী রুদিজলার জলস্তর ১০ মিটার করা হয়েছে৷ তাতে, ৬০০.২০ একর এর বাইরের প্রায় সাত-আট কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত জল জমে গিয়েছে৷ ফলে, ওই জমিতে স্থানীয় পরিবারগুলি চাষাবাদ করতে পারছে না৷ এই নিয়ে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়৷ বিষয়টি প্রশাসনের কাছে বহুবার বলা হয়েছে৷ কিন্তু, কোন সুফল মিলেনি৷


এদিকে, শনিবার আন্দোলন সংগঠিত করার পর প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয় দুটি কমিটি গিয়ে স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলবে৷ এই দুটি কমিটি হচ্ছে এসেসমেন্ট কমিটি এবং গ্রিভেন্স কমিটি৷ এই দুটি কমিটি সোমবার সেখানে যাবে৷ এসেসমেন্ট কমিটি স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলে জানার চেষ্টা করবেন কত পরিমাণ জলস্তর রাখা হলে চাষাবাদের সমস্যা হবে না৷ যদিও কৃষকদের দাবি অন্তত সাত-আট মিটার হলে চাষাবাদ করা যেতে পারে৷ অন্যদিকে গ্রিভেন্স কমিটি স্থানীয় চাষিদের অভাব অভিযোগের কথা শুনবেন৷ চাষীদের অভিযোগ, পূর্বেও তারা সেখানে চাষাবাদ করেছেন৷

একই সাথে পর্যটনেরও কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি৷ এখন এইসব বিষয়গুলি চলে আসে৷ তাছাড়া প্রকল্পের বিষয়ে ওয়েটল্যান্ড কমিটি যে প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে দিয়েছে, সেই কমিটি চাষীদের সাথে কোনও ধরনের আলাপ আলোচনা করেনি৷ যদি আলাপ আলোচনা করে প্রস্তাব পাঠানো হত তাহলে কৃষকদের দাবী ও আপত্তি সম্পর্কে অবগত হতে পারত৷


এদিন, আন্দোলনরত মানুষের সাথে স্থানীয় পুর পরিষদের চেয়ারম্যান সহ জনপ্রতিনিধিরা কথা বলেন৷ আশ্বাস দেন আগামী সোমবার এসেসমেন্ট কমিটি ও গ্রিভেন্স কমিটি সেখানে পৌঁছবেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলবেন৷ এই আশ্বাস পাওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা পথ অবরোধ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *