নারী ক্ষমতায়ন না হলে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয় : সমাজকল্যাণমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ নভেম্বর৷৷ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক ’বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প নিয়ে আজ সাবমে এক মেগা সচেতনতামূলক শিবির অনুষ্ঠিত হয়৷ সাবমের দক্ষিণী টাউনহলে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষান্ত্রী সান্তনা চাকমা৷ সাবম মহকুমা প্রশাসন, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা সমাজশিক্ষা পরিদর্শক কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী শ্রীমতী চাকমা বলেন, নারী ক্ষমতায়ন না হলে একটা সমাজের উন্নতি কখনও সম্ভব নয়৷ নারীকে বাদ দিয়ে দেশও এগিয়ে যেতে পারবে না৷

দেশে নারী সংখ্যার আনুপাতিক হার কমে যাওয়াটা একটা উদ্বেগের বিষয়৷ আমাদের এখনই এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে৷ সেই লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার ’বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ কর্মসূচি দেশজড়ে রূপায়ণ করছে৷ আমাদের ত্রিপুরাতেও এই কর্মসূচি গুরুত্ব দিয়ে রূপায়িত হচ্ছে৷ তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে প্রতি হাজারে মেয়ের সংখ্যা ৯৬০ জন৷ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় সেটা ৯৫৬ জন৷ নারী কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে রাষ্ট্রীয় পোষণ অভিযান, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প, প্রধানমী মাত্র বন্দনা যোজনার মতো কর্মসূচি চালু হয়েছে৷ রাজ্যের বর্তমান সরকার এইসব কর্মসূচির সুুযোগ রাজ্যের সর্বত্র পৌঁছে দিতে আন্তরিক প্রয়াস নিয়েছে৷


অনুষ্ঠানে বিধায়ক শংকর রায় বলেন, নারী কল্যাণে প্রয়োজন সচেতনতা৷ সচেতনতা না বাড়লে শুধুমাত্র আইন দিয়ে কন্যা ভ্রণ হত্যা, বাল্যবিবাহের মতো বিষয় সমাজ থেকে দূর করা যাবে না৷ অনুষ্ঠানে নবজাত ৫ জন কন্যা সন্তানকে বার্থ ডে কিট উপহার দেওয়া হয়৷ তাছাড়াও জেলার ২২ জন কৃতী ছাত্রী ও ২০ জন কৃতী মহিলা ক্রীড়াবিদকে মানপত্র ও শংসাপত্র দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়৷ অনুষ্ঠানে নারী সচেতনতার উপর ’আমি পার্বতী’ ও ’বোধোদয়’ নামক দুটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার ’বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট টাস্ক ফোর্সের চেয়ারপার্সন জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, পুলিশ সুুপার জৈল সিং মীনা, জেলা শিক্ষা আধিকারিক লক্ষণ দাস প্রমুখ৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজশিক্ষা পরিদর্শক বিজন চক্রবর্তী৷ সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি কাকলী দাস দত্ত৷

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিলোনীয়া পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শুক্লা দেব সরকার, পোয়াংবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান মণিবালা বৈদ্য, সাতচাঁদ পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান অনিল চন্দ্র মজমদার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অয়ন ভট্টাচার্য প্রমুখ৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মহকুমা শাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা৷ অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা, সাবম কালচার্যাল সেল ও রূপাইছড়ি লোকরঞ্জন শাখার শিল্পীরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন৷ অনুষ্ঠানে জেলার ৩টি মহকুমার ব্লক এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ছাত্রছাত্রী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন৷ অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সবাইকে ’বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ সচেতনতা সম্পর্কিত সংকল্প বাক্য পাঠ করানো হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *