
নয়াদিল্লি, ১৬ নভেম্বর (হি.স.) : চিটফান্ড তদন্তের এবার জাল গুটিয়ে আনতে আরও সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সমস্ত নথিপত্র নিয়ে দিল্লিতে সিবিআই সদর দফতরের ডেকে পাঠানো হল কলকাতার দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়েন্ট ডিরেক্টর ঋষিকুমার শুক্লাকে। সূত্রের খবর, বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে সারদা এবং রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে। এতদিনকার তদন্তের সমস্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টরকে ডাকা হয়েছে।
২০১২ সালে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন তৎকালীন সিআইডি অফিসার তথা বর্তমান ডিসি বন্দর ওয়াকার রাজা৷ তাকে সম্প্রতি জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই৷ তারপর কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (৩) দময়ন্তী সেনকেও তার পার্ক স্ট্রিটের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ দময়ন্তী সেন ২০১০ সালে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পদে ছিলেন। সেই সময় রোজভ্যালি সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে তাঁর কাছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি তদন্তে নামেন৷ এবং রোজভ্যালি সম্পর্কে তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেন সেবিকে রিপোর্ট দিয়েছিলেন৷ সেই রিপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই৷
আবার কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে নিজেদের হেফাজতে আনার কম চেষ্টা করেননি সিবিআই আধিকারিকরা। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দফায় দফায় সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আধিকারিকরা। বিভিন্ন নথিও পেশ করেছেন তিনি। পাশাপাশি, দময়ন্তী সেনের মতো সারদা কেলেঙ্কারি তদন্তে বড়সড় ভূমিকা নেওয়া একাধিক পুলিশ কর্তাকেও তলব করা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলে। জেরা করা হয় শাসকদল ঘনিষ্ঠ একাধিক হেভিওয়েট নেতানেত্রীকে। আসলে প্রায় সাত, আট বছর ধরে সারদা, রোজভ্যালি, অ্যালকেমিস্ট, প্রয়াগ-সহ একাধিক ভুইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত চলছে। কিন্তু সেভাবে কিনারা এখনও কিছু হয়নি।
ফলে সিবিআইয়ের কার্যক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত বিরোধী রাজনৈতিক দলের তরফে বারবারই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির দক্ষতা নিয়ে সরব হয়েছে। কিন্তু গত মে মাসে দ্বিতীয় মোদী সরকার কেন্দ্রে আসার পর চিটফান্ড তদন্ত গতি পেয়েছে। কেন্দ্রেরও লক্ষ্য, দ্রুত এর নিষ্পত্তি ঘটানো। সেই কারণেই এবার কলকাতায় সংস্থার জয়েন্ট ডিরেক্টরকে সরাসরি দিল্লিতে তলব করা হয়েছে। তবে কবে তিনি দিল্লি গিয়ে সংস্থার সদর দফতরে রিপোর্ট জমা দেবেন, তা এখনও অজানা।

