আদালতের নির্দেশে বাদল চৌধুরীকে সর্বসুবিধাযুক্ত ঘরে রিমান্ডে রাখল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ নভেম্বর৷৷ আদালতের নির্দেশে বিশেষ বন্দোবস্ত করে পূর্ত ঘোটালায় অভিযুক্ত প্রাক্তন বিভাগীয় মন্ত্রী বাদল চৌধুরীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হবে৷ নিউ ক্যাপিটেল কমপ্লেক্স থানার দ্বিতলে পৃথক ঘরে সর্বসুবিধাসম্পন্ন বন্দোবস্ত করার পর আজ মঙ্গলবার পুলিশ আদালতের কাছে বাদলবাবুকে রিমান্ডে নেওয়ার আর্জি জানায়৷ আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেছে৷ ক্যাপিটেল কমপ্লেক্স থানায় একটি পৃথক ঘরে বাদল চৌধুরীকে রাখা হয়েছে৷ বাদল চৌধুরীর আইনজীবী সেখানে গিয়েছেন এবং বাদলবাবুকে যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা রয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখেন৷


প্রসঙ্গত, গতকাল আদালত বাদল চৌধুরীকে চারদিন পুলিশ রিমান্ড এবং ওই রিমান্ড শেষে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল৷ অবশ্য পুলিশ রিমান্ডের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছিল আদালত৷ আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, বাদল চৌধুরীর স্বাস্থ্যের অবস্থা মাথায় রেখে তাঁকে কোনও পুলিশ লকআপে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না৷ পুলিশ রিমান্ডে থাকাকালীন তাঁকে অন্য কোনও স্থানে কিংবা নির্দিষ্ট একটি ঘরে যেখানে আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, সাথে তাঁর জন্য বিছানা ও পর্যাপ্ত পানীয় জল এবং খাবারের সুবিধা বন্দোবস্ত করতে হবে৷ পাশাপাশি তাঁকে যেখানে রাখা হবে তার কাছাকাছি স্থানে শৌচালয়ও থাকতে হবে৷ যাতে তাঁকে শৌচালয়ে যাওয়ার জন্য বেশি হাঁটতে না হয়৷ আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছিল, পুলিশ রিমান্ড ও জেল হাজতে থাকাকালীন বাদল চৌধুরীকে প্রতিদিন চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে৷ এছাড়া তাঁকে সুস্থ রাখার সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল৷


ওইদিন তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে এই সমস্ত আয়োজন করে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন দায়রা আদালতের বিচারক৷ এই আয়োজন না হওয়া পর্যন্ত বাদল চৌধুরী জেল হেফাজতে থাকবেন বলে নির্দেশিকায় বলেছিল আদালত৷ অবশ্য যদি পুলিশ রিমান্ডে ওই সমস্ত ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় তা-হলে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আলাদা ঘরে বাদল চৌধুরীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে আদালত মঞ্জুর করেছিল৷ তবে, আগামী ২২ নভেম্বর পুনরায় বাদল চৌধুরীকে আদালতে হাজিরার প্রয়োজন নেই বলে দায়রা আদালতের বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ কারণ, ওই দিন বাদল চৌধুরীকে সংশোধনাগারেই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দায়রা আদালত কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় সংশোধানাগারের সুপারিনটেনডেন্টকে নির্দেশ দিয়েছিল৷


আজ বাদল চৌধুরীকে চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে আনা হয়েছিল৷ তাঁর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল৷ তাই তাঁকে জিবি হাসপাতালে আনা হয়৷ হাসপাতালে তাঁকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে৷ এখন তিনি সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন৷ বাদল চৌধুরীর আইনজীবী পুরুষোত্তম রায়বর্মণ জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল আজ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে জিবি হাসপাতালে আনা হয়েছে৷


এদিকে আদালত পুলিশের আবেদনে বাদল চৌধুরীর পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে৷ কারণ, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিউ ক্যাপিটেল কমপ্লেক্স থানায় দ্বিতলে সমস্ত সুবিধা রয়েছে৷ তিনি জানান, পুলিশ রিমান্ডে থাকাকালীন বাদলবাবুর সাথে সবসময় একজন চিকিৎসক থাকবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *