নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ অক্টোবর৷৷ ত্রিপুরায় একটি শরণার্থী শিবিরও চালু রাখা হবে না৷ সাফ জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ ফলে, মিজোরামে ফিরে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা খোলা রইল না রিয়াং শরণার্থীদের৷ বুধবার আগরতলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের সাথে রিয়াং শরণার্থী নেতাদের বৈঠকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ মূলত, মিজোরামে রিয়াং শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল৷ কেননা, আবারও শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে জটিলতা দেখা দিয়েছে৷

আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা শাখার প্রধানসচিব এ পি মহেশ্বরী, গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত অধিকর্তা এ কে মিশ্র, ত্রিপুরা সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার অলোক, রাজস্ব দফতরের প্রধানসচিব বি কে সাহু এবং উত্তর ত্রিপুরার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার এবং মিজোরাম সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব সহ কয়েকজন আধিকারিক ও ৪টি ব্রু সংগঠনের নেতৃবৃন্দ৷
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা শাখার প্রধানসচিব এ পি মহেশ্বরী বলেন, ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের দাবি মেনেই মিজোরামে তাঁদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ তাঁদের নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার রক্ষার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ শুধু তা-ই নয়, সারা দেশের নিরিখে তাঁদের সার্বিক উন্নয়নে যে ফারাক রয়েছে তা-ও মেটানোর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে প্রত্যাবর্তনে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে৷ তবে তাঁরা মিজোরামে ফিরে যাওয়ার পর যে ধরনের সমস্যা সামনে আসবে তার প্রতিকার করা হবে৷ এদিন তিনি সাফ জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় কোনও শরণার্থী শিবির খোলা রাখা হবে না৷ কেন্দ্রীয় সরকার শরণার্থী শিবিরের জন্য কোনও সহায়তা প্রদান করবে না৷ তাঁর বক্তব্য, তাঁদের মিজোরামে ফিরে যেতেই হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, মিজোরামে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিজেদের সামিল করতে হবে রিয়াং শরণার্থীদের৷ পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবেশের সাথেও তাদের মানিয়ে নিতে হবে৷ কারণ, এডিসি গঠনের দাবি সম্পূর্ণই রাজনৈতিক৷ কেন্দ্রীয় সরকার তাতে আপাতত কোন প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না, বলেন তিনি৷
এদিকে, মিজোরামে ফিরে যেতে কোনওভাবেই রাজি নন রিয়াং শরণার্থী নেতারা৷ তাঁদের সাফ কথা, রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে সমস্ত সমস্যা সমাধানের উপায় হল এডিসি গঠন৷ তবেই রিয়াং শরণার্থীরা মিজোরামে ফিরে গিয়ে নিজেদের সুরক্ষিত ভাবতে পারবেন৷ রিয়াং শরণার্থী নেতা জোর গলায় বলেন, প্রয়োজনে ত্রিপুরায় না খেয়ে মরে যেতেও প্রস্তুত৷ কিন্তু তাঁদের দাবি না মানলে তাঁরা মিজোরামে ফিরে যাবেন না৷ স্বাভাবিকভাবেই, রিয়াং শরণার্থী প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ফের জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি ত্রিপুরা ও কেন্দ্রীয় সরকার৷

