কলকাতা, ১৪ অক্টোবর (হি.স.) : উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সাংগঠনিক কমিটি ভেঙে দিল তৃণমূল। আপাতত রদ বলে ঘোষণা করল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার এক লিখিত বিবৃতি মারফত এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তারা।

উত্তর-পূর্ব ভারতে, বিশেষত অসমে দলের সংগঠন পোক্ত করতে অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়েছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সংগঠন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। দলনেত্রীর নির্দেশে কখনও মালা রায় (এখন সাংসদ), কখনও কাকলি ঘোষদস্তিদার সপারিষদ ঘাঁটি গেঁড়েছেন সেখানে। এক সময় অসম, অরুণাচল, ত্রিপুরা ও মনিপুরে বেশ কিছু বিধায়ক পেয়েছিল বাংলার শাসক দল। কিন্তু এর পর একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি। তৃণমূল তো বটেই, বাম এবং কংগ্রেসও উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপি-র হাওয়ায় নড়ে গিয়েছে। গত কয়েক বছরে বিজেপির আগ্রাসনে বিভিন্ন দলের সংগঠন অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এই অবস্থায় আরও ভেবেচিন্তে পরিস্থিতি বুঝে উত্তর-পূর্বে দলের সংগঠন করার পরিকল্পনা হবে। দলের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের প্রথম দিকে নতুন কমিটি ঘোষিত হবে। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূল যেমন ধাক্কা খেয়েছে। তেমনি পারিপার্শ্বিক রাজ্যগুলিতে প্রার্থীদের জামানত খুইয়েছে তারা। তাই সংগঠন নতুন করে ঢেলে সাজানোর ভাবনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ত্রিপুরার শেষ বিধানসভা নির্বাচনে এক শতাংশেরও নিচে ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। এরপর থেকেই উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে তৃণমূলের গতিবিধি কমেছে। তাছাড়া ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে মনোনিবেশ করতে চায় তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা ধরে রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। ঘটনাচক্রে, তৃণমূলের পক্ষে এক সময় এই রাজ্যগুলির পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন মুকুল রায় ও সব্যসাচী দত্ত। তারা বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর ওই রাজ্যগুলিতে সংগঠন ক্রমেই দুর্বল হয়েছে তৃণমূল। সেই কারণেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

